যেভাবে বিশ্বসেরা ওপেনার হয়ে উঠলেন তামিম
প্রকাশিত : ১৫:৪৪, ২৯ মে ২০১৯ | আপডেট: ১২:৩৫, ১৪ জুলাই ২০১৯
বিশ্বকাপে যে কজনার দিকে তাকিয়ে পুরো দেশবাসী তাদের একজন তামিম ইকবাল। আসলে যে কোনও বিচারে উপমহাদেশের সেরা ওপেনারদের কাতারে থাকবে তামিমের নামটাও। এ দিকে, ২০০৭ সালের তামিম আর ২০১৯ সালের তামিমের মধ্যে ব্যাটিংয়ে বড় ধরণের পার্থক্য লক্ষ্যণীয়। ২০০৭ সালের তামিম ইকবালের কথা বললে অনায়াসে দৃশ্যপটে আসে পোর্ট অফ স্পেনে জহির খানের বল উড়িয়ে মারা। ভারতের বিপক্ষে সেই অর্ধশতক তামিম ইকবালের ক্যারিয়ারের অন্যতম হাইলাইটস।
কিন্তু সেই তামিম ইকবালের সঙ্গে বর্তমান তামিম ইকবালের মূল পার্থক্য আগ্রাসী মনোভাবে। তামিমের তৎকালীন ওপেনিং পার্টনার শাহরিয়ার নাফিস।
বাংলাদেশ দলে খেলা এই ক্রিকেটার বলেন, তামিম এখন যে ব্যাটিং করছেন সেটা অবশ্যই ইতিবাচক, সে তার স্বাভাবিক ব্যাটিং দিয়ে ৮০ থেকে ৯০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করছে।
‘এখানে বুঝতে হবে কার ভূমিকা কী। আমি যখন তামিমের সিনিয়র পার্টনার হিসেবে মাঠে নামতাম, আমার রোল ছিল একটু ধরে খেলা, তামিম তখন এগ্রেসিভ ছিল।’
সৌম্য এখন যেভাবে ব্যাট করছে, সেটা তামিমকে ইনিংস গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, এটা ইনিংসে একটা ভিত গড়ে দেয় বলে মনে করেন শাহরিয়ার নাফিস।
যেভাবে বদলেছে তামিম ইকবালের ব্যাটিং
২০০৭ সালের তামিম ইকবালের রানের গড় ছিল ২১ দশমিক ৫৭। আর গেল বছর ২০১৮ সালে তামিমের গড় ১২ ম্যাচে ৮৫ দশমিক ৫০ রান। ২০১০ সালে তামিম ইকবালের স্ট্রাইক রেট ছিল ৯৬ দশমিক ১৬।
আর ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ এই চার বছরের মধ্যে তামিম ইকবালের সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট ৮৩ দশমিক ১৪।
কিন্তু এই চার বছরে তামিম ইকবালের ব্যাটিং গড় ৪০ এর নিচে নামেনি, সর্বনিম্ন ছিল ৪৫ দশমিক ২২, সর্বোচ্চ ৮৫ দশমিক ৫০ রান।
ব্যাটিংয়ের মারকুটে ভাব আগের মতো না থাকলেও তামিম ইকবাল গড়ের দিক থেকে এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা ওপেনিং ব্যাটসম্যান।
তামিমের শৈশবের গুরু যা বলছেন
বয়সভিত্তিক দলগুলোতে তামিম ইকবালের গুরু ছিলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম। এখনও ব্যাটিং টেকনিক সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় তামিম ‘ফাহিম স্যারের’ দ্বারস্থ হন বলে শোনা যায়।
ফাহিম জানান, এখনকার কথা বলতে গেলে তামিমের ব্যাটিংয়ের ধরণ ইতিবাচক। টপ অর্ডারে যারা আছেন তাদের সঙ্গে তামিম যখন খেলে তখন এটা ঠিকই আছে।
‘সৌম্য, লিটন, মুশফিক, সাকিব এরা সবাই বেশ দ্রুত গতিতে রান করেন।’
‘এটা ট্যাকটিকালি বেশ ভালো, সেটাই এখন তামিম করছেন যেটা দলের জন্যও উপকারে আসছে,’ বলছিলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
তামিম ইকবালের উত্থান
তামিম ইকবাল ২০০৫ সালে বাংলাদেশের অনুর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলেন। সেই বার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭১ বলে ১১২ রানের একটি ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটে সজোরে ব্যাট করার ক্ষেত্রে তামিম ইকবালকে তখন থেকেই দক্ষ মনে করা হতো। বিশেষত অফ-সাইডে তামিম ইকবালের ব্যাটিং ক্রিকেটভক্তদের মুগ্ধ করেছে।
২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অভিষেক হয় তামিম ইকবালের। টেস্ট অভিষেকে নিউজিল্যান্ডের ডানেডিনে তামিম ৮৪ রানের একটি ইনিংস খেলেন।
তামিম ইকবাল ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫৪ রানের মালিক।
২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ধারাবাহিক না হওয়ার কারণে দলে তামিম ইকবালের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে নানা কথা উঠলেও তামিম ইকবাল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাটিং স্তম্ভ হিসেবে সুপরিচিত এখন।
সূত্র: বিবিসি
একে//