শক্তিমত্তায় কে এগিয়ে ইংল্যান্ড নাকি দ.আফ্রিকা
প্রকাশিত : ১৩:০৩, ৩০ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৪:৪৩, ৩০ মে ২০১৯
স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্দা উঠছে ক্রিকেট মহাযজ্ঞের দ্বাদশ আসরের। বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় কেনিংটন ওভালে শুরু হবে উদ্বোধনী ম্যাচটি।
এখন উত্তেজনায় কাঁপছে ক্রিকেট বিশ্ব। কোন দলের কতদূর যাওয়ার সম্ভাবনা, সেই আলোচনাও চলছে। আসলে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে যদি আক্ষেপ আর না পাওয়ার হিসাব করা হয় তবে দুটি দলের নাম সবার আগে আসবে, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে ভক্ত সবার কণ্ঠেই এবার বিশ্বকাপে সবচেয়ে ফেভারিট দলের নাম ইংল্যান্ড। বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে এবারের বিশ্বকাপে প্রত্যাশা কম, বিশ্লেষকরা বলছে প্রোটিয়াদের মূল শত্রু চাপ, যেটা কি না এবার কম থাকবে।
ইংল্যান্ড দুই দশক পরে স্বাগতিকের ভূমিকায় ক্রিকেট বিশ্বকাপে। এর আগেও তিনবার ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা ইংল্যান্ডকে মনে করা হচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর দল। প্রায় প্রতি ম্যাচেই ৩৫০ এর ওপর রান করা নিয়ম বানিয়ে ফেলেছে ইংল্যান্ডের এই একাদশ। ইংল্যান্ড যদি দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে ৩৬০-৭০ রানও যেন নিরাপদ নয় এখন।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি ইংল্যান্ড দলকে বিশ্বকাপের দাবিদার বলেন। সঙ্গে যোগ করেন এই ইংল্যান্ড দলই ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম ৫০০ রান স্পর্শ করবে এক ইনিংসে।
অসাধারণ ব্যাটিং পরিসংখ্যানের জন্য ইংল্যান্ড দলকে এবার ভয়ানক মনে করছেন অনেকে।
জেসন রয়, ইংলিশ ওপেনার এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। তার জন্য বিশ্বকাপের শুরুটা বিশেষ কিছু, তার কাউন্টি দল সারে ক্রিকেট ক্লাবের মাঠ ওভালে হবে প্রথম ম্যাচ, যেখানে শেষ তিন ম্যাচে ২টি অর্ধশতক ও একটি শতক হাঁকিয়েছেন রয়। এমনকি আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৪৬ বলে করেছেন ৮৯ রান।
রয়ের সামনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে নিজেকে প্রমাণের, ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাজে পারফরম্যান্সের পর দলে জায়গা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এবার বিশ্বকাপ রয়ের জন্য উপযুক্ত মঞ্চ।
জেসন রয়ের সঙ্গে জনি বেয়ারস্টোর উদ্বোধনী জুটি ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের দ্রুততম জুটি, যারা কমপক্ষে এক হাজার রান তুলেছেন তাদের মধ্যে।
ইংল্যান্ডের এই দলটির আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে স্ট্রাইক বোলার না থাকা, মূলত পেস বোলিং অলরাউন্ডাররা বোলারের অভাব পূরণ করছেন এই দলে। তবে মার্ক উড খেলবেন নাকি লিয়াম প্লাঙ্কেট সেই সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি ম্যানেজমেন্ট।
ওদিকে বিশ্বকাপ যেন দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এক কঠিন অধ্যায়। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ হারা ছাড়াও ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত রান আউট এবং নানাবিধ কারণে এই আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ হাসি হাসতে পারেনি।
তবে এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা একটু ভিন্ন ধাঁচের। ফ্যাফ ডু প্লেসির নেতৃত্বে খুব শক্তিশালী না হলেও একটি ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে ইংল্যান্ড গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
কুইন্টন ডি কক, হাশিম আমলার মতো ওপেনার, মাঝে অধিনায়ক ফ্যাফ, নিচে মিলার-ডুমিনি। এছাড়া বোলিং লাইন আপ প্রোটিয়াদের মূল শক্তির জায়গা।
সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন কাগিসো রাবাদা ও ইমরান তাহির। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার চিন্তা বাড়িয়েছেন ডেইল স্টেইল, তিনি থাকছেন না। লুঙ্গি এনিগিদি, ফুলাকাওয়েদের স্টেইনের অভাব পূরণ করতে হবে।
এদিকে, উভয় অধিনায়কই স্বীকার করে নিয়েছেন যে ইংল্যান্ডই ফ্যাভারিট। ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগ্যান বলছেন, আমরা ফেভারিট হিসেবে নামছি এবং আমরা সেভাবেই খেলতে চাই, গেল দুই বছর ধরে সবাই আমাদের এভাবে দেখে আসছে।
ফ্যাফ ডু প্লেসি বলছেন, ইংল্যান্ডের ফেভারিট তকমা তাদের ওপর থেকে চাপ কমাবে। বলেন, আমরা এখানে আন্ডারডগ, আমরা যদি এভাবে ভাবি আমাদের হারানোর কিছু নেই, আমরা চাইবো এই চাপহীন মুহূর্তে কিছু ক্রিকেটার ভালো খেলুক নিজের ভেতরটা বেড়িয়ে আসুক।
আসলে নিজেদের শেষ দুই সিরিজেই বড় জয় পেয়েছে দুই দল। ইংল্যান্ড পাকিস্তানকে হারিয়েছে ৪-০ ব্যবধানে, দক্ষিণ আফ্রিকা শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে ৫-০ ব্যবধানে।
ইংল্যান্ড দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুই দলের সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিলো, ২০১৭ সালে।
ইংল্যান্ড শেষবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলেছিল ১৯৯৯ সালে, তৎকালীন চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়েছিলো।
দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০৩ বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলে, সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রায়ান লারার একক নৈপুণ্যে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ রানে হেরে যায়।
সূত্র: বিবিসি
একে//