জাসিন্ডা আরডানের দেশ নিউজিল্যান্ড
প্রকাশিত : ১৯:১৩, ৫ জুন ২০১৯
আপনারা হয়ত নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডানের নামটি স্বরণে রেখেছেন। চলতি বছরের ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদ হামলার পর মুসলমানদের প্রতি তার সহনুভূতি এবং প্রত্যেকটি পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে।
আজ (বুধবার) সেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ব্যাটিং করছে। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক শান্তিপ্রিয় এ দেশটি সম্পর্কে।
নিউজিল্যান্ড ওশেনিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এটি অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এর রাজধানীর নাম ওয়েলিংটন। নিউজিল্যান্ড অসংখ্য ক্ষুদ্র দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল স্টুয়ার্ট দ্বীপ এবং চাথাম দ্বীপ।
নিউজিল্যান্ডের আদিম অধিবাসীদের ভাষা হল মাওরি। নিউজিল্যান্ড ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন একটি দেশ। এটি অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে তাসমান সাগরের মধ্যে অবস্থিত।
ফিজি, টোঙ্গা এবং নুভেল কালেদোনি হল নিউজিল্যান্ডের প্রতিবেশি রাষ্ট্র। এদেশের পরিবেশ এবং প্রাণীকুল বৈচিত্র্যময়। মনুষ্য বসতি প্রতিষ্ঠার পূর্বে এখানে প্রচুর স্থানীয় পাখি ছিল যার মধ্যে অনেক প্রজাতিই জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
নিউজিল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষ ইউরোপীয় বংশদ্ভূত এবং স্থানীয়দের মধ্যে মাওরি হল সর্বাধিক সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক এশীয় বংশদ্ভূত মানুষও এখানে বসবাস করে, বিশেষ করে শহর এলাকায়। ইংরেজি নিউজিল্যান্ডের সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা।
এটি একটি উন্নত দেশ। এটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত মানব উন্নয়ন সূচকের উপরের দিকে অবস্থান করে। এছাড়া দেশটির জীবন-যাত্রার মান, প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল, শিক্ষার হার, শান্তি ও অগ্রগতি, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অগ্রসরমান একটি দেশ। পৃথিবীর সর্বাধিক বাসযোগ্য শহরগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের শহরগুলো অন্যতম।
নিউজিল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধান হল ইংল্যান্ডের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার প্রতিনিধি নিউজিল্যান্ডের সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যাপারে রাণীর কোন প্রভাব নেই, রাণী কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপ্রধান। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর অধীন সংসদই হল রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকারী। প্রধানমন্ত্রীই নিউজিল্যান্ডের সরকার প্রধান। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হলেন জাসিন্ডা আরডান।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে জুম্মার নামাজ চলাকালীন সময়ে আল নূর মসজিদ এবং ক্রাইস্টচার্চে লিনউড ইসলামিক সেন্টারে সংগঠিত সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করে। এই গুলিবর্ষণ নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক সন্ত্রাসী হামলা। এতে প্রায় ৫০ জন নিহত হয় ও কমপক্ষে ৫০ জনের মত গুরুতরভাবে আহত হয়। অভিযুক্ত অপরাধী, অস্ট্রেলিয়ান ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। সেই ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা।
এমএইচ/