ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শুরুতেই সৌম্যের বিদায়, ছুটছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ২১:১১, ২০ জুন ২০১৯ | আপডেট: ০৮:৪১, ২১ জুন ২০১৯

অজিদের ছুঁড়ে দেওয়া ৩৮২ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। জিততে হলে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করেই জিততে হবে। শুরুতে সৌম্যকে হারালেও লক্ষ্যপানে ছুটছে বাংলাদেশ। এর আগে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ড ৩২৯ রান তাড়া করে জিতেছিল। সেটাই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত, ১৫ ওভার শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৮৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। উইকেটে আছেন ওপেনার তামিম ইকবাল (২৩) এবং সাকিব আল হাসান (১৩)।

এর আগে জবাব দিতে নেমে ভালোই শুরু করেছিলেন টাইগার দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য। কিন্তু ইনিংসের চতুর্থ ওভারে একটি শর্ট রান নিতে গিয়ে দু`জনের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগটা লুফে নেন অ্যারন ফিঞ্চ। অজি দলপতির সরাসরি থ্রোতে রানআউট হওয়ার আগে সৌম্য করেন ৮ বলে দুই চারে ১০ রান। ফলে দলীয় ২৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে বিশ্বকাপের ২৬তম এবং নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে অজিদের মুখোমুখি হয় টাইগাররা। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অজি দলপতি অ্যারন ফিঞ্চ। ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে অজিরা তোলে ৩৮১ রান। বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায় শুরু হয় ম্যাচটি। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে গাজী টিভি।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯.৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৫০ রান যোগ করেন দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। আর মাত্র ১৬.৩ ওভারেই দলীয় শত রানে পৌঁছায় এই জুটি।

উইকেটে থিতু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশি বোলারদের উপর চড়াও হয়ে একের পর এক বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন ওয়ার্নার-ফিঞ্চ। কোন ভাবেই উইকেট পাচ্ছিলেন না বাংলাদেশী বোলাররা। মাশরাফি, মোস্তাফিজ, সাকিব, রুবেল মিরাজরা ইনিংসের প্রথম ২০ ওভার বল করেও দলকে ব্রেক থ্রু এনে দিতে ব্যর্থ হন।

অবস্থা বেগতিক দেখে ২১তম ওভারে এসে পার্টটাইম বোলার সৌম্য সরকারের হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি। সুযোগ পেয়ে অধিনায়ককে হতাশ করেননি পার্টটাইমার সৌম্য। নিজের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই অ্যারন ফিঞ্চকে আউট করার মধ্য দিয়ে অজিদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সৌম্য।

টুকটাক বোলিং করা জাতীয় দলের ওপেনার সৌম্য বোলিংয়ে এসেই অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে ক্যাচ তুলে দিতে বাধ্য করেন। রুবেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরার আগে ৫১ বলে ৫টি চার ও দুই ছক্কায় ৫৩ রান করেন ফিঞ্চ। সাজঘরে ফেরার আগে উদ্বোধনীতে ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ১২১ রানের জুটি গড়েন।

ফিঞ্চ আউট হওয়ার পর মনে হয়েছিলো এবার বুঝি অজিদের চেপে ধরবে টাইগাররা। কিন্তু না, সেটা আর হতে দিলেন না ক্রিজে নতুন আসা উসমান খাজা ও আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। বাংলাদেশি বোলারদের উপর রীতিমত তাণ্ডব চালিয়ে ২৩.৩ ওভারে গড়েন ১৯২ রানের আগ্রাসী জুটি।

হ্যাঁ পাঠক, শেষ পর্যন্ত আউট হন মারকুটে বাঁহাতি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। তার আউটের মধ্যে দিয়েই ভাঙে অজিদের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। তবে কোন স্বীকৃত বোলার নয়, এবারো বাংলাদেশ শিবিরের ত্রাতা সেই সৌম্য সরকার। ৪৫তম ওভারে বল হাতে এসে আবারো সেই রুবেলে হাতে ধরা পড়তে বাধ্য করেন ওয়ার্নারকে। ১৬৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে আউট হন ওয়ার্নার। ১৪৭ বল খেলে চৌদ্দটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় সাজানো তার ইনিংসটি।

এর আগে ১১০ বলে সেঞ্চুরি হাঁকান অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ানডেতে এটি তার ১৬তম সেঞ্চুরি, চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয়। দলীয় ৩১৩ রানের মাথায় অজিরা দ্বিতীয় উইকেট হারায়। ওয়ার্নার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৬তম সেঞ্চুরি করেন। এই সেঞ্চুরিতে ওয়ার্নার স্পর্শ করলেন ইংল্যান্ডের জো রুট, নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল, নাথান অ্যাস্টল এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে।

পরে খাজাকেও আউট করেন সৌম্য। ব্যক্তিগত ৮৯ রান করে উইকেটের পিছনে মুশফিকের গ্লাভসে ধরা পড়েন খাজা। ৭২ বল মোকাবেলায় দশটি বাউন্ডারির সাহায্যে ইনিংসটি সাজান তিনি। আর খাজাকে আউট করার মধ্যদিয়েই ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত তিন উইকেট পেলেন বাঁহাতি ব্যাট করা ডানহাতি এই মিডিয়াম পেসার। ৪৯টি ওয়ানডে খেলা সৌম্য মাঝে মধ্যে হাত ঘুরিয়ে এর আগে মাত্র একটি উইকেটই ছিলো তার ঝুলিতে।

এদিকে বড় স্কোর গড়ার পথে অজি শিবিরের আরেক মারকুটে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আউট হন মাত্র ১০ বলে ৩২ রান করে। রুবেলের থ্রোতে রান আউট হওয়ার আগে তিনটি ছক্কা আর দুটি চারে এই ঝোড়ো ইনিংস খেলেন ম্যাক্স। পরে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে স্মিথকে দ্রুত সাজঘরে ফেরান কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ। রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি ১ রান করা সাবেক এই অজি দলপতি। ফলে ৪৭.১ ওভারে ৩৫৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় অজিরা।

ইতিমধ্যে বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় পজিশনে আছে অস্ট্রেলিয়া। ৫ ম্যাচে ৪ জয়ে অজিদের সংগ্রহ ৮ পয়েন্ট। আর পাঁচ ম্যাচে দুই জয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

সৌম্য সরকার ৮ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে তিনটি উইকেট পান। মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। সাকিব ৬ ওভারে ৫০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। মাশরাফি ৮ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। রুবেল হোসেন ৯ ওভারে ৮৩ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ৯ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে পান একটি উইকেট।

এদিকে এ ম্যাচে মিডলঅর্ডার মোসাদ্দেক হোসেনের জায়গায় একাদশে আসেন সাব্বির রহমান এবং পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের জায়গায় একাদশে আসেন পেসার রুবেল হোসেন। মোসাদ্দেক এবং সাইফের ইনজুরির সুযোগে সাব্বির এবং রুবেল চলতি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো একাদশে সুযোগ পান।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি