ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

হারিসের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান ৩০৮

প্রকাশিত : ১৯:৩৭, ২৩ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৯:৩৮, ২৩ জুন ২০১৯

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে `ডু-অর-ডাই` এই ম্যাচে হারিস সোহেলের ঝোড়ো ব্যাটিং আর বাবর আজমের ফিফটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছে এশিয়ার আনপ্রেডিক্টেবল দল পাকিস্তান। টুর্নামেন্টজুড়ে খারাপ করা প্রোটিয়া বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে নির্ধারিত ওভারে ৩০৮ রান করেছে সরফরাজ বাহিনী।

লর্ডসের এ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েই উড়ন্ত সূচনা করে পাকিস্তান। অষ্টম ওভারেই চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে দলীয় ফিফটি পূর্ণ করে দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম-উল-হক। ১৫তম ওভারেই এই জুটি তুলে ফেলে ৮১ রান।

কিন্তু ইনিংসে প্রথমবার বল হাতে এসে পঞ্চম বলেই ফখরকে ভুল শট খেলতে বাধ্য করেন আগের চার বলে ছয় রান দেয়া প্রোটিয়া লেগস্পিনার ইমরান তাহির। তাকে স্কুপ খেলতে গিয়ে উইকেট কীপারের পিছনে আমলার হাতে ক্যাচ দিয়ে দৌড়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ফখর জামান। আউট হওয়ার আগে ৫০ বলে ছয়টি চার ও একটি ছয়ে ৪৪ রান করেন তিনি।

এরপরই যেন থমকে যায় পাকিস্তানের রানের চাকা। পরের পাঁচ ওভারে মাত্র ১৭ রান তুলে হারিয়ে ফেলে তাদের আরেক ওপেনার রান মেশিন ইমাম-উল-হককে। তার উইকেটটিও তুলে নেন সেই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ইমরান তাহির। ২১তম ওভারের তৃতীয় বলে ইমামের বোলারস ব্যাক ড্রাইভটি দারুণ দক্ষতায় ডান হাতে গেথে নেন বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।

এখন পর্যন্ত ৩৯ উইকেট নিয়ে তিনি পেছনে ফেলেছেন `সাদা বিদ্যুৎ` খ্যাত সাবেক গ্রেট অ্যালান ডোনাল্ডকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে নামার আগে ৩৭ উইকেট ছিল তাহিরের। ২০১৯ বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচ ও ৬ ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়ে সপ্তম স্থানে আছেন তিনি।

ইমরান তাহিরের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হওয়ার আগে ফখরের মতই ঠিক ৪৪ রান করেন ৫৮ বল খেলে। যাতে কোন ছক্কা না থাকলেও চার ছিল সমান সংখ্যক, ছয়টি।

ইমামের আউটের পর শ্লথ হয়ে যাওয়া রানের চাকা সচল করতে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে জুটি গড়তে থাকেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজ। কিন্তু দুজনে মিলে ৯.৩ ওভার খেলে ৪৫ রান তুলেই বিচ্ছিন্ন হন পার্টটাইম বোলার মার্করামের স্পিনে। ৩০তম ওভারের শেষ বলে লেগবিফোর হয়ে ফেরার আগে ৩৩ বলে এক ছক্কায় ২০ রান করেন হাফিজ। ফলে ৩০ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় তিন উইকেটে ১৪৩ রান।

হাফিজ ফেরার পর ক্রিজে এসে বাবর আজমের সাথে জুটি বাঁধেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হারিস সোহেল। বেশ চালিয়েই খেলতে থাকা এই জুটি ৬৮ বলেই স্কোরে জমা করে ফেলে ৮১টি রান। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ফেহলুকায়োকে কাভারের উপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ এক্সট্রা কাভারে এনগিদির তালুবন্দি হন এই ইনিংসের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান বাবর আজম। ইতিমধ্যেই ফিফটি তুলে নিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৮০ বল মোকাবেলায় সাতটি বাউন্ডারিতে ৬৪ রান করেন তিনি।

৪২তম ওভারে বাবর আজম আউট হলেও থেমে থাকেননি মারকুটে হারিস সোহেল। ক্রিজে নতুন আসা ইমাদ ওয়াসিমকে পরবর্তী ১২টি বল খেলতে না দিয়ে একাই তুলে নেন ১৯ রান। সেই সাথে এরইমধ্যে তুলে নেন নিজের প্রথম বিশ্বকাপ ফিফটি। ৩৮ বলে ছয়টি চার ও এক ছক্কায় ওই ঝোড়ো ফিফটি পূরণ করেন তিনি।

শুধু ফিফটি করেই থেমে থাকেনি মারকুটে হারিসের ব্যাট। নয়টি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫৯ বল খেলেই করে ফেলেন ৮৯ রান। অন্যদিকে ৪৮তম ওভারের শেষ বলে ইমাদকে এবং ৫০তম ওভারের প্রথম বলে ওয়াহাবকে আউট করে এ আসরের দ্বিতীয় হ্যাট্ট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন প্রোটিয়া পেসার লুঙ্গি এনগিদি। কিন্তু সরফরাজ এসে তার সেই আশায় পানি ঢেলে দেন।

তবে পঞ্চম বলে হারিসকে ফিরিয়ে ঠিকই নিজের ঝুলিতে তিন উইকেট সংগ্রহ করেন কৃষ্ণাঙ্গ এই পেসার। আর এরই মাধ্যমে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০৮ রান তুলতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। এছাড়া পাকিস্তানের হয়ে ইমাদ ওয়াসিম ১৫ বলে ২৩ রান করেন।

চলমান বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে মাত্র একটি জয় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৩ পয়েন্ট। পাকিস্তান ধরতে গেলে প্রোটিয়াদের থেকে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। প্রোটিয়াদের থেকে এক ম্যাচ কম খেলেও সমান সংগ্রহ ৩ পয়েন্ট সরফরাজবাহিনীর। তাই সেমির সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচটি অবশ্যই জিততে হবে পাকিস্তানকে। একই সঙ্গে জিততে হবে বাকি তিন ম্যাচও।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি