সাকিবময় বিশ্বকাপ!
প্রকাশিত : ২৩:৩৬, ২৪ জুন ২০১৯ | আপডেট: ২৩:৪১, ২৪ জুন ২০১৯
সাউদাম্পটনের রোজ বোলের রাজত্বটা যে স্পিনাররাই করবেন সেটা আগেই দেখা গেছে। তাই বলে বিশ্বকাপের সেমিতে যাওয়ার মিশনে ম্যাচটা যে দুর্দান্ত সাকিবময় হবে সেটা কে জানতো! তবে হয়েছে সেটাই।
সোমবার বাংলাদেশের ইনিংসে ব্যাট হাতে মূল্যবান ৫১ রানের ইনিংস খেলেন চলতি বিশ্বকাপের সেরা ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান। পরে প্রয়োজনের সময় বল হাতেও ঘূর্ণি যাদু দেখিয়ে জ্বলে উঠলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। নিজের কোটা পূরণ করে মাত্র ২৯ রান দিয়ে নিয়েছেন আফগান ইনিংসের পাঁচ-পাঁচটি উইকেট। দেখিয়ে দিয়েছেন কেন তিনি সেরা।
ইতোমধ্যেই চলতি বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরিসহ পাঁচটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন সাকিব। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে পুর্ণ করেছেন ১ হাজার রানের মাইলফলক। আর আজ তুলে নিলেন এক ম্যাচে ফিফটিসহ পাঁচ উইকেট। আর এই অনন্য, অনবদ্য, দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে নাম লিখিয়েছেন ভারতীয় বিশ্বকাপজয়ী কপিল দেব (১৯৮৩) ও যুবরাজ শিং (২০১১) এর মত কিংবদন্তী অলরাউণ্ডারদের কাতারে। যারা তিনজনই একই বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নেয়ার গৌরব অর্জন করেন।
শুধু তা-ই নয়, বিশ্বকাপের একই ম্যাচে ফিফটি প্লাস রান করার পাশাপাশি পাঁচ উইকেট শিকারির তালিকায়ও দ্বিতীয় নাম্বারে আছেন সাকিব। এই তালিকায় এক নাম্বার খেলোয়াড়টিও একজন ভারতীয়। তিনি আর কেউ নন, আগের তালিকার দ্বিতীয়জন যুবরাজ শিং। ২০১১ বিশ্বকাপেই এই রেকর্ড করেন তিনি। আর সাকিব মাত্র দ্বিতীয় জন, যিনি গড়লেন ২০১৯ বিশ্বকাপে।
টাইগার স্পিনার সাকিব আল হাসান প্রথম বল করতে এসেছেন ১১তম ওভারে। দুশ্চিন্তা যখন বাড়ছিল, তখনই বল হাতে নিয়েই অধিনায়কের চিন্তা কিছুটা লাঘব করেন সাকিব। তবে আসল জাদু তাঁর পঞ্চম ওভারে। প্রথম বলে ফেরান দুশ্চিন্তা বাড়াতে থাকা গুলবাদিন নাঈবকে। তৃতীয় বলে ফেরান ‘আফগান সাকিব’ মোহাম্মদ নবীকে দারুণ এক আর্মবলে বোল্ড করে।
৫ ওভারে ৬ রানে ৩ উইকেট—বোলার সাকিবের যাদু এবার দেখছে বিশ্বকাপ। এক ওভার বিরতিতে আবার ষষ্ঠ ওভারেও চমক। এবার ক্যাচ বানালেন আসগর আফগানকে। ওই ওভারে তার বোলিং বিশ্লেষণ হয়ে গেল এমন: ৮ রানে ৪ উইকেট! গড়ে প্রতি ২ রানে একটি করে উইকেট নেওয়ার ধারাটা এর কাছাকাছি থাকলেও বিশ্বকাপে প্রথম কোনো বাংলাদেশি বোলারের পাশে ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি লেখা হলো এর পরেই। ৪৩তম ওভারে নজিবুল্লাহকে আউট করার মধ্য দিয়েই পাঁচ উইকেট পূরণ করেন সাকিব। সেই সাথে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। যা এক কথায় দুর্দান্ত! যেন সাকিবময় বিশ্বকাপ।
আরকে//