‘শুভকামনা’ জানিয়ে বিদায় নিলেন ওয়ালশ
প্রকাশিত : ১৩:৫৩, ৭ জুলাই ২০১৯
চুক্তির মেয়াদ শেষ। বাংলাদেশের বোলিং কোচ হিসেবে আর থাকছেন না তিনি। বিসিবি অবশ্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তবে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় ঘোষণার প্রয়োজনও পড়ছে না। বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ওয়ালশের চুক্তি নবায়ন করা হচ্ছে না। ইংল্যান্ডে কটা দিন বিশ্রাম করে দেশে ফিরে যাবেন টাইগারদের বোলিং মাস্টার।
সাকিব, মুস্তাফিজ়ুর রহমানদের নিয়ে গর্বিত তিনি। গর্বিত বাংলাদেশ দল নিয়েও। বিদায়ের আগে তাই শুভকামনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে আরও অনেক কথাই বলেছেন ফাস্ট বোলিং গ্রেট ওয়ালশ।
কোর্টনি ওয়ালশ বলেন, আমি খুশি। ছেলেরা ভাল ক্রিকেট খেলেছে। জেতার খিদে দেখিয়েছে, তীব্রতা দেখিয়েছে। আর সেই মনোভাবের প্রতিফলনই ঘটছিল আমাদের পারফরম্যান্সে। আমি সবচে খুশি ধারাবাহিকতা দেখে। হয়তো আমরা সেমিফাইনালের টিকিট অর্জন করতে পারিনি। কিন্তু গোটা বিশ্বকাপে ধারাবাহিক ভাবে ভাল ক্রিকেট খেলে গিয়েছে বাংলাদেশ।
সাকিব-আল-হাসানকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ওয়ালশ বলেন, বিশ্বকাপের ইতিহাসে আমার দেখা সেরা পারফরম্যান্সগুলোর একটা করে দেখাল সাকিব। এত ধারাবাহিকতা ক’জন দেখাতে পেরেছে বিশ্বকাপে? চলতি টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ স্কোরারও ছিল সাকিব। দু’টো সেঞ্চুরি, পাঁচটা হাফ সেঞ্চুরি। কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট হবে না তার জন্য।
মুস্তাফিজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে কোচ ওয়ালশ বলেন, খুবই খুশি। মুস্তাফিজুর বিশেষ এক প্রতিভা। চোট-আঘাতে ভুগছিল। আমি বিশ্বকাপের আগে বলেছিলাম, ফিট মুস্তাফিজুরকে আমাদের দরকার। বিশ্বকাপে এসে পুরো শক্তি লাগিয়ে বল করতে পারছিল মুস্তাফিজুর। আমি ওকে প্রথম দেখেই বুঝেছিলাম, জন্মগত প্রতিভা। সেই কারণে কখনও ওর সহজাত ধরনকে পাল্টানোর চেষ্টা করিনি। মুস্তাফিজুরের জীবনে আরও অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত অপেক্ষা করছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে ওয়ালশ জানান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আমার চুক্তি ছিল বিশ্বকাপ পর্যন্তই। সেটা শেষ হয়ে গেল। এরপর কয়েক দিন বিশ্রাম নেব। টানা অনেক দিন ধরে ছুটছি। বিশ্রাম নিয়ে তারপরে ভাববো, আমার পরবর্তী ঠিকানা কী হবে।
এদিকে, ওয়ালশের বিদায়ে চলতি জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরে পেস বোলিং কোচ হিসেবে যেতে পারেন চম্পাকা রামানায়েকে। বিসিবি একাডেমি, ডেভেলপমেন্ট ও নানা সময়ে ‘এ’ দলের বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করে আসছেন এই শ্রীলঙ্কান।
বোলিং কোচের পাশাপাশি ফিজিও তিহান চন্দ্রমোহনের চুক্তিও নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। কাজের ক্ষেত্রে তার দক্ষতা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছিল। ক্রিকেটাররা এই ফিজিওর ওপর আস্থা রাখতে পাচ্ছিলেন না বলে শোনা গেছে নানা সময়। তাই চন্দ্রমোহনের জায়গায় দলের সাবেক ফিজিও দক্ষিণ আফ্রিকার বিভব সিংকে আবার ফেরাতে যোগাযোগ শুরু করেছে বোর্ড।
আর পারফরম্যান্স অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরনের চুক্তি দুই বছর বাড়ানো হয়েছে বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার আগেই।
অন্যদিকে, বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি ছিল ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি ও ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের। ম্যাকেঞ্জির কাজে দারুণ সন্তুষ্ট বোর্ড ও ক্রিকেটাররা। তাই তার চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব দিয়েছে বিসিবি, ম্যাকেঞ্জিও রাজি হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে দল শ্রীলঙ্কা সফরে গেলে সেখানে নাও থাকতে পারেন সাবেক প্রোটিয়া এই ব্যাটসম্যান।
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যর্থতার অন্যতম বড় কারণ ছিল ফিল্ডিং। ক্যাচ পড়েছে ৮-১০টি। যার চড়া মূল্য দিতে হয়েছে দলকে। গ্রাউন্ড ফিল্ডিংও ছিল বাজে। তবে ফিল্ডিং কোচ কুকের প্রচেষ্টায় বোর্ড সন্তুষ্ট বলে জানা গেছে। তার চুক্তিও বাড়ানো হতে পারে।
এদিকে, স্পিন বোলিং কোচ সুনীল যোশী বেতন পান দিন হিসেবে। তাকে নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত আপাতত হয়নি বলেই জানা গেছে।
আর বাকী রইলো প্রধান কোচ স্টিভ রোডস। তার সঙ্গে চুক্তি ২০২০ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার পর তাকে নিয়েও কথা হয়েছে বিসিবির সভায়। তবে সম্ভাব্য শ্রীলঙ্কা সফরে রোডস-ই যে হেড কোচ হিসেবেই থাকছেন, সেটা নিশ্চিত করেছে বোর্ড।
এনএস/এসএ/