ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

আজকের মত খেলা বন্ধ, ফের আগামীকাল

প্রকাশিত : ২৩:৫৮, ৯ জুলাই ২০১৯

চলতি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচটি বৃষ্টির বাধায় আজকের মত খেলা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি ঝরার পর মাঠ খেলার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ম্যাচ অফিশিয়ালস।

তবে বৃষ্টির আগে ৪৬.১ ওভারে পাঁচ উইকেটে ২১১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। ফলে আগামীকাল যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে এখান থেকেই ব্যাটিং শুরু করবে কিউইরা।

এর আগে ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ম্যানচেস্টারে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু ব্যাট করতে নেমেই ভারতীয় বোলিং তোপের মুখে পড়ে কিউইরা। প্রথম দুই ওভারে তো কোন রানই দেয়নি বুমরাহ-ভুবনেশ্বর জুটি। পরে সেই চাপে তৃতীয় ওভারে স্লিপে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার মার্টিন গাপটিল। আউট হওয়ার আগে ১৪ বল ফেস করে মাত্র ১ রান যোগ করতে পেরেছেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান।

ফলে ভারতীয় বোলিং তোপে মাত্র এক রানেই গাপটিলকে হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে নিউজিল্যান্ড। এসময় আরেক ওপেনার হেনরি নিকোলসকে সঙ্গে নিয়ে সেই চাপ কাটিয়ে ওঠার চেস্টা করেন দলীয় ক্যাপ্টেন কেন উইলিয়ামসন। তুলে নেন বিশ্বকাপের নিজের দ্বিতীয় ফিফটিও। কিন্তু স্লগ ওভারে একে একে নিকোলস, উইলিয়ামসন ও নিশামকে তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় কোহলির দল।

গাপটিল ফেরার পর জাদেজার ঘূর্ণিতে আরেক ওপেনার নিকোলসকে হারায় কিউইরা। সরাসরি বোল্ড হন এই বাঁহাতি। সাজঘরে ফেরার আগে ৫২ বলে দুই চারে ২৮ রান করেন নিকোলস। এরপর কিউই কাণ্ডারি কেন উইলিয়ামসনকে জাদেজার ক্যাচ বানিয়ে ফেরান রিষ্ট স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল।

ফেরার আগে দলের ইনিংসকে মজবুত ভিতের ওপর দাড় করাতে ৯৫ বলে খেলেন ৬৭ রানের অতি ধৈর্যশীল ইনিংস। যাতে চারের মার ছিলো ছয়টি। আর এই ইনিংস খেলে নয় ম্যাচের আট ইনিংসে ব্যাট করে দুটি করে শতক আর অর্ধশতকে চতুর্থ সর্বোচ্চ ৫৪৮ রান করেন কিউই রান মেশিন উইলিয়ামসন।

তবে বৃষ্টি নামার আগ পর্যন্ত খেলে ফিফটি হাঁকিয়ে অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান রস টেলর। সঙ্গে ৩ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন উইকেটকিপার টম ল্যাথাম। মাঝে ভুবনেশ্বর কুমারের শিকার হয়ে কলিন ডি গ্রান্ডহোম মাঠ ছাড়েন মাত্র ১৬ রান করে।

ভারতীয় বোলারদের মধ্যে বুমরাহ, ভুবনেশ্বর, পান্ডিয়া, চাহাল ও জাদেজা প্রত্যেকে একটি করে উইকেট তুলে নেন।

এদিকে বিশ্লেষকদের চোখে ফাইনালে ওঠার পথে ভারতই ফেবারিট। কিন্তু ইতিহাস চোখরাঙানি দেখাচ্ছে কোহলির দলকে। কেননা বিশ্বকাপে সাতবারের মোকাবেলায় চারবারই জিতেছে কিউইরা। আর ইংল্যান্ডের মাটিতে তিনবার মোকাবেলায় তিনবারই হেরেছে ভারত।

তাই লড়াইটা যেহেতু মাঠের, সেহেতু কোহলিদের ভাবনা তো থাকছেই। নতুন ম্যাচ আর প্রতিপক্ষ দলটি বরাবরই বিশ্বকাপের ‘ডার্ক হর্স’। গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হলে তবু একটা ধারণা থাকত বিরাট কোহলির দলের। কিন্তু বৃষ্টি হানা দেওয়ায় ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি। এতে এ বিশ্বকাপে ভারতকে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সেমিফাইনাল ম্যাচে।

সঙ্গে থাকছে বৃষ্টি নামার শঙ্কা। অর্থাৎ সেটি না হলেও আকাশ তো মেঘলা থাকবে, তার মানে কিউই পেসারদের পোয়াবারো। ভারতের ফাইনালে ওঠা তাই মোটেও সহজ হওয়ার কথা নয়।

সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে পরিসংখ্যানও। বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তেমন একটা সুখকর পারফরম্যান্স নেই ভারতের। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত সাতবার নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়ে চারবারই হেরেছে ভারত। আর ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে কিউইদের বিপক্ষে পারফরম্যান্স দেখলে আজকের ম্যাচে ভারত নয়, নিউজিল্যান্ডই ফেবারিট! ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপে তিনবার নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়ে একবারও যে জয়ের মুখ দেখেনি ভারত!

ম্যানচেস্টারে তাই আজ ফিরতেই পারে ১৯৭৫ বিশ্বকাপের স্মৃতি। সেবার এ মাঠেই গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছিল ভারত। পরের বিশ্বকাপে (১৯৭৯) লিডসে ৮ উইকেটে হারে উপমহাদেশের দলটি। সবশেষ হার ১৯৯৯ বিশ্বকাপে, ৫ উইকেটে। এ তিন ম্যাচেই আগে ব্যাট করে একবার আড়াই শর নিচে, একবার দুই শর নিচে এবং আরেকবার ২৫১ রান তুলতে পেরেছে ভারত।

আর এ তিন ম্যাচে ভারতের হারানো মোট ২৬ উইকেটের মধ্যে ২৩ উইকেটই নিয়েছেন কিউই পেসাররা। অর্থাৎ ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের পেসাররা বরাবরই ভালো। ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসনদের তাই চোখ চকচক করে ওঠার কথা। আর কিউই পেসারদের তোপের মুখে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হচ্ছে ভারতীয় টপ অর্ডারকে।

এনএস/এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি