ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪

ফের ধবলধোলাইয়ের স্বাদ নিলো বাংলাদেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৩৮, ৩১ জুলাই ২০১৯

শ্রীলঙ্কার দেয়া ২৯৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা যেমন হওয়া উচিৎ ছিল, তার ধারেকাছ দিয়েও হাঁটতে পারেনি টাইগাররা। কারণ সেই ব্যাটিং ব্যর্থতা। একের পর এক হতশ্রী ব্যাটিংয়ে ০-৩ ব্যবধানে হেরে ফের ধবলধোলাইয়ের স্বাদ নিলো বাংলাদেশ।

সাদামাটা বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কার নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করলো ২৯৪। ২৯৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৩৬ ওভারেই অলআউট ১৭২ রানে। 

এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে টানা দ্বিতীয়বার হোয়াইটওয়াশ হওয়ার লজ্জায় ডুবলো তামিমরা। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ড সফরেও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। অন্যদিকে ২০১৪ সালের পর আবার শ্রীলঙ্কার কাছে হোয়াইটওয়াশ হতে হলো তাদের।

তবে আগের দুই ম্যাচের মত আজও দেখা গেছে একক লড়াই। কিন্তু তা দিয়ে কি আর ম্যাচ জেতা যায়? হলোও তাই, সবার ব্যর্থতার মাঝেও এ ম্যাচে ফিফটি হাঁকিয়ে একাই লড়াই করেছেন ওয়ান ডাউনে নামা সৌম্য সরকার। সর্বোচ্চ ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা এই ক্রিকেটার। 

আকিলার শেষ ওভারে এক্সট্রা এমপ্রোভাইজ করে খেলতে গিয়ে ফেরেন বোল্ড হয়ে। তার আগে ৮৫ বলে পাঁচটি চার ও এক ছয়ে সংগ্রামী ইনিংসটা সাজান সৌম্য। তার আগে অবশ্য বল হাতে তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি। বলে-ব্যাটে দেখান অলরাউন্ড নৈপূণ্য। 

এছাড়া শেষ দিকে ২৮ বলে পাঁচ চার ও বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে কিছুটা ঝড় তোলার চেষ্টা করেন বল হাতে এক উইকেট নেয়া স্পিনার তাইজুল। ছয় ম্যাচ খেলা এই বাঁহাতি এদিন খেলেন তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। সঙ্গীর অভাবে অপরাজিত থাকেন ৩৯ রানে।
 
এর আগে টানা ছয় ম্যাচে বোল্ড হওয়া তামিম আজ আউট হয়েছেন উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে। অধিনায়ক হিসেবে ব্যর্থ তামিম এদিনও সবাইকে হতাশ করে ফেরেন মাত্র ২ রান, ছয় বল খেলে। ফলে মাত্র ৪ রানেই প্রথম উইকেট হারায় দল।

এরপর পরপর দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ভালো কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েই স্কয়ার লেগের উপরে ক্যাচ তুলে দেন সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া ওপেনার এনামুল হক বিজয়। বলটি অনেক উঁচুতে উঠলেও তা ধরতে মোটেও ভুল করেননি আভিস্কা ফার্নান্ডো। ফলে মাত্র ১৪ রানেই থামে বিজয়ের ২৪ বলের প্রত্যাবর্তনীয় ইনিংসটি।

এরপর বিজয়ের পথে হেঁটেই একে একে বাজে শট খেলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক, মিঠুন ও মাহমুদুল্লাহ। আগের দুই ম্যাচে টাইগারদের সর্বোচ্চ স্কোরার মুশফিকুর রহিম এদিন আর ধৈর্য্য রাখতে পারেননি। শানাকার বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ধরা পড়েন মুশি। ফেরার আগে ১৫ বলে করেন মাত্র ১০ রান। 

আর মুশির পর ওপর দুই ‘এম’কেও পটাপট তুলে নেন সেই শানাকাই। ফেরার আগে এ দুজনে করেন যথাক্রমে ৪ ও ৯ রান। ফলে ৮৩ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। 

লঙ্কানদের হয়ে এ ম্যাচে ২৭ রানে ৩ উইকেট তুলে নেন অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা। এছাড়া রাজিথা ও কুমারা নেন ২টি করে উইকেট। 

তার আগে এঞ্জেলো ম্যাথিউজ ও কুশল মেন্ডিসের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৯৫ রানের
চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৯৮ রানে তিন টপ অর্ডারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পরে শ্রীলঙ্কা। তবে এঞ্জেলো ম্যাথিউজ ও কুশল মেন্ডিসের জুটিতে সেই চাপ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্বাগতিকরা। এরইমধ্যে চতুর্থ উইকেটে একশ রান যোগ করেছেন এই দু’জন।  
 
দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে দিয়েছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। একশ পেরিয়েই বিচ্ছিন্ন হয় তাদের এ জুটি। চতুর্থ উইকেটে ১১৯ বলে একশ স্পর্শ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। ফিফটি করা মেন্ডিস আউট হয়েছেন ৫৪ রান করে সৌম্যের বলে। ফলে ১৯৯ রানে গিয়ে চতুর্থ উইকেট হারায় লঙ্কা।
 
এরপরই টাইগার বোলারদের ওপর শুরু হয় লঙ্কান তাণ্ডব। শানাকা ও জয়সুরিয়াকে ফিরিয়ে সে তাণ্ডব কিছুটা কমানোর চেষ্টা করেন শফিউল। তবুও থামানো যায়নি সে ঝড়। কারণ তখনও যে ক্রিজে ম্যাথিউজ। যিনি রিভিউয়ে সৌম্যের শিকার হয়ে থামেন শেষ ওভারে। তবে তার আগেই মূল কাজটা করে গেছেন সাবেক এই অধিনায়ক। ফেরার আগে ৯০ বলে সাত চার ও এক ছয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাচ সেরা ম্যাথিউজ।

তাঁর আগে ছোট্ট ঝড় তোলা শানাকা ফেরেন ১৪ বলে ৩০ করে। এছাড়া জয়সুরিয়া ৭ বলে ১৩ এবং ডি সিলভা অপরাজিত ৫ বলে ১২ করলে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রানে গিয়ে পৌঁছে লঙ্কার স্কোর। 

টাইগারদের হয়ে শফিউল ও সৌম্য ৩টি করে উইকেট তুলে নিতে সক্ষম হন। এর মধ্যে শেষ ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান পার্টটাইম বোলার সৌম্য সরকার। 

এছাড়া রুবেল ও তাইজুল একটি করে উইকেট লাভ করেন। তবে মাহমুদউল্লাহকে দিয়ে ৩ ওভার বল করালে ২২ রান দেন তিনি।   
 
বুধবার কলম্বোর রনসিংহ প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে করুনারত্নের দল। তবে শুরুটা ভালো হয়নি, মাত্র ১৩ রানেই উইকেট হারায় লঙ্কা। শফিউলের শিকার হয়ে ফেরেন আগের ম্যাচের সেরা স্কোরার আভিস্কা ফার্নান্ডো। আজ ৬ রান করেই ফিরতে হয় লেগ বিফোর হয়ে। 

এরপর অবশ্য দ্বিতীয় উইকেটে কুশল পেরেরাকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কাটা ভালোভাবেই সামাল দেন অধিনায়ক কাম ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে। দুজনেই যখন সাবলীল খেলে ফিফটির কাছাকাছি চলে যান, তখনই বল হাতে টাইগারভক্তদের মুখে হাঁসি ফিরিয়ে আনেন তাইজুল ও রুবেল। এক ওভার ও ২ রানের ব্যবধানে এই দুই বোলার তুলে নেন লঙ্কান দুই সেট ব্যাটসম্যানকে। 

তাইজুলের শিকার হয়ে ৪৬ রান করে ফেরেন করুনারত্নে, আর ৪২ রানে রুবেলের শিকার হন কুশল পেরেরা। দুজনেই ক্যাচ দেন উইকেটের পিছনে মুশফিকের গ্লাভসে। প্রথমজন ছয়টি এবং পরেরজন পাঁচটি বাউন্ডারি হাঁকান। ফলে ৯৮ রানেই তিন উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। 

এনএস/এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি