এক খেলোয়াড়ের বউ ভাগিয়ে নিলেন আরেক খেলোয়াড়!
প্রকাশিত : ২২:৫২, ১৮ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ২৩:১৩, ১৮ অক্টোবর ২০১৯
মাউরো ইকার্দি, ওয়ান্ডা ও লোপেজ
ফুটবলার মাউরো ইকার্দির প্রেমে পড়ে ঘর ছাড়েন আরেক ফুটবলার ম্যাক্সি লোপেজের মডেল বউ। শুধু এই এক নারীর জন্য আর কোনও ফুটবল দলকে এতটা ভুগতে হয়নি, যতটা ভুগতে হয়েছে আর্জেন্টিনা দলকে। সুন্দরী ওই মডেলের এমন কাণ্ডে তোলপাড় শুরু হয় দেশটির ফুটবলে। যে সম্পর্কের জেরে রীতিমত বিপাকে পড়েছেন ইকার্দিও।
তবে বহুদিন পর এ ব্যাপারে ইকার্দিকে ক্ষমা করে দিলেন লোপেজ। শুধু তা-ই নয়, ওয়ান্ডা নারা নামের ওই মডেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছাড়াছাড়িতে ভূমিকা রাখায় ইকার্দিকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ড!
ম্যাক্সি লোপেজ মডেল ওয়ান্ডা নারাকে বিয়ে করেন ২০০৮ সালে। প্রথমদিকে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। তিন সন্তানকে ঘিরে আবর্তিত তাদের সুখের সেই সংসারে ঝড় তোলেন আরেক ফরোয়ার্ড মাউরো ইকার্দি। এ যেন লোপেজের পা থেকে বল কেড়ে নিয়েই গোল দেয়ার মত ঘটনা!
২০১২ সালের ঘটনা। ওই মৌসুমে সাম্পদোরিয়াতে যোগ দেন ইকার্দি। দুজনেই আর্জেন্টাইন হওয়ায় ইকার্দি ও লোপেজের মধ্যে গড়ে ওঠে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। কিন্তু মৌসুম শেষ না হতেই সে সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। কারণ ততদিনে লোপেজকে ছেড়ে যে নিঃসঙ্গ ইকার্দির প্রেমে মজেছেন তিন সন্তানের জননী ওয়ান্ডা। এক পর্যায়ে লোপেজের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েই ইকার্দির ঘরে চলে যান সুন্দরী ওই মডেল।
এদিকে ত্রিভুজ প্রেমের এই ঘটনা যে শুধু লোপেজের ঘর পুড়িয়েছে, তা কিন্তু নয়। বরং আগুন জ্বেলে দেয় গোটা আর্জেন্টাইন ফুটবলেও। যার উত্তাপ স্পর্শ করে ফুটবল ইশ্বর খ্যাত ডিয়েগো ম্যারাডোনাকেও।
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী তো তখন সরাসরি ইকার্দিকে আজীবন নিষিদ্ধের দাবি তোলেন। ম্যারাডোনা বলেন, যে বন্ধুর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেয় তাকে কখনও জাতীয় দলে ডাকা ঠিক না। আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হোক।
অন্যদিকে ঘর পোড়া লোপেজের সঙ্গে মেসিসহ জাতীয় দলের বেশকিছু সদস্যের ভালো সম্পর্ক ছিল। যে কারণেই নাকি ক্লাব ফুটবলে বছরের পর বছর দুর্দান্ত খেলেও মূল দলে ডাক পাচ্ছিলেন না ইকার্দি। আর্জেন্টিনার পক্ষে একটিমাত্র ম্যাচ খেলা এই ফরোয়ার্ড ওয়ান্ডাকে বিয়ের পরের তিন বছরে ক্লাবে ফুটবলে গোলবন্যা বইয়ে দিয়েও ঢুকতে পারেননি আর্জেন্টিনা দলে।
এদিকে, ছাড়াছাড়ির পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অন্যকে খোঁচা দিয়েই সময় পার করেছেন সাবেক দম্পতি ওয়ান্ডা ও লোপেজ। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এক সাক্ষাৎকারে ইকার্দিকে ক্ষমা করার সঙ্গেসঙ্গে ওয়ান্ডাকে সবচেয়ে বড় খোঁচাটাই দিলেন লোপেজ।
বলেছেন, ‘আমি ইকার্দিকে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং ওর সঙ্গে আমার আর কোনও সমস্যা নেই। আমার জীবনে এখন ফুটবল ছাড়া একটাই লক্ষ্য, সেটা হলো আমার বাচ্চাদের খুশি করা।’
এটুকু বলেই থামেন নি লোপেজ। ইকার্দিকে ক্ষমা করার খবরটি আজ প্রকাশ পাওয়ার পর ইনস্টাগ্রামে আরেকটু যোগ করেন তিনি, ‘আমি শুধু মাউরোকে ক্ষমাই করিনি, ডব্লুকে (ওয়ান্ডা) নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদও দিতে চাই...’!
তবে এত বড় খোঁচা খেয়ে থেমে থাকেন নি ওয়ান্ডাও। নিজের ইনস্টাগ্রামে লোপেজকে জবাব দিয়ে লিখেছেন, ‘সম্মান হলো টাকার মতো। আপনি চাইতে পারেন, কিন্তু সেটা অর্জন করাই ভালো।’
যাইহোক, লোপেজকে ছাড়ার পর ওয়ান্ডার সঙ্গে ইকার্দির ঘরবাঁধার পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ কিন্তু লোপেজের ইঙ্গিতকেই সমর্থন করে। কেননা, বিয়ের পর ওয়ান্ডাকে নিজের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেন ইকার্দি। এরপর থেকেই ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় আর্জেন্টাইন প্রতিভাবান এই ফরোয়ার্ডের। যার প্রেক্ষিতে গত মৌসুমের শেষদিকটায় ফর্মের তুঙ্গে থাকতেও বসিয়ে রাখা হয়েছিল মাউরোকে।
আর চলতি মৌসুমে তো সেখানে থাকতেই পারলেন না, ধারে চলে যেতে হয়েছে ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে। তবে সেখানে এসেও ঝামেলা পাকিয়েছেন স্ত্রী ওয়ান্ডা। বলেছেন, পিএসজি নাকি ইকার্দির সম্ভাব্য গন্তব্যের মাঝে সবচেয়ে বাজে পথ! তার এমন তীর্যক উক্তি পিএসজি যে ভালোভাবে নেয়নি, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এনএস/