ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

সুপার ওভারের রোমাঞ্চে ফের জয়ী ইংল্যান্ড

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৫৭, ১০ নভেম্বর ২০১৯

সিরিজ জয়ের পর ইংল্যন্ড দল

সিরিজ জয়ের পর ইংল্যন্ড দল

বৃষ্টি-বাধায় ৯ ওভার কাটা পড়ে ২০ ওভারের ম্যাচটাই নেমে এলো ১১ ওভারে। আর তাতেই চার-ছক্কার বন্যা বয়ে গেল গ্যালারীজুড়ে। তারপরও রোমাঞ্চকর এক নাটকীয়তা জমে উঠল শেষ প্রহরে। বিশ্বকাপ ফাইনালের পর আরেকটি নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড লড়াই গড়ালো ‘টাই’-এ। আবারও সুপার ওভারের নাটকে মঞ্চস্থ হলো সেই ইংলিশদের জয়। 

এমনই উত্তেজনায় ঠাসা শেষ ম্যাচ জিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ বগলদাবা করল ইংল্যান্ড। অকল্যান্ডে আজ রোববার (১০ নভেম্বর) সুপার ওভারে নিষ্পত্তি হওয়া ম্যাচে কিউইরা হার মানে ৯ রানে।

এর আগে বৃষ্টির কারণে মূল ম্যাচটি কার্টেল ওভারে নেমে আসে ১১ ওভারে। যাতে দুই দলই ছক্কা-চারের বৃষ্টি ঝরিয়ে তুলেছে ১৪৬ রান করে। যেখানে স্বাগতিকদের ইনিংসেই ছক্কা ছিল ১৪টি অন্যদিকে, ইংলিশদের ইনিংসে ছক্কাবৃষ্টি ছিল ১৩টি। তবে উভয় দলই চারের মার মারে মাত্র ৭টি করে। 

এমনই উত্তেজনাকর ম্যাচটি জয়ের মুখ না দেখে টাই-এ রূপ নিলে ফলাফল বের করতে আশ্রয় নিতে হয় সুপার ওভারের। যে ওভারে ইংল্যান্ড ১৭ রান তুলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলে তাতে আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। এক উইকেট হারিয়ে মাত্র ৮ রান তুলতে সক্ষম হলে হেরে যায় ৯ রানে। 

আর এমন নাটকীয় জয়ের ফলে প্রথম তিন ম্যাচে সিরিজে পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্ত সিরিজ জিতে নিল ৩-২ ব্যবধানেই।

রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচটিতে ব্যাটে-বলে দর্শক মাতিয়েছেন বেশ কয়েকজন। তবে ইংল্যান্ডের শেষের নায়ক ক্রিস জর্ডান। নয় নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে একদিকে যেমন দলকে নিশ্চিত পরাজয়ের দুয়ার থেকে নিরাপদ করেছেন। তেমনি পরে বল হাতে সুপার ওভারে নিশ্চিত করেছেন অবিস্মরণীয় এক জয়।

অনেক উত্থান-পতনের লড়াইয়ে মূল ম্যাচের শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। জিমি নিশামের প্রথম দুই বলে স্যাম বিলিংস নিতে পারেন মাত্র ৩ রান। তৃতীয় বলে আউট হয়ে যান টম কারেন।

যার ফলে শেষ তিন বলে ইংলিশদের প্রয়োজন হয় ১৩ রান। তখনই ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিস জর্ডান প্রথম বলেই ফুল টস পেয়ে ছক্কা মেরে জমিয়ে দেন ম্যাচ। পরের বলে ২ রান নিলে শেষ বলে জয়ের জন্য জর্ডানের চাই মাত্র ৫ রান। এ সময় আরেকটি ফুলটস পেয়ে জর্ডান হাঁকান ছক্কার উদ্দেশ্যে। তবে ওভার বাউন্ডারির পরিবর্তে বাউন্ডারি পেয়েই সন্তুষ্ট হতে হয় তাকে। যাতে নাটকীয় টাই-এ রূপ লাভ করে উত্তেজনাকর ম্যাচটি!

এর আগে ম্যাচের শেষটা ইংল্যান্ডের হলেও শুরুটা ছিল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডেরই। টস হেরে ব্যাট করতে নামা কিউইদের হয়ে বিধ্বংসী সূচনা এনে দেন মার্টিন গাপটিল ও কলিন মুনরো। মাত্র ১৬ বলেই দলীয় ফিফটি এনে দেন এই জুটি। আর ৫ ওভারেই আসে ৮৩ রান! পাঁচ ছক্কা হাঁকানো গাপটিল ফিফটি স্পর্শ করেন মাত্র ১৯ বলে।

এরপরই গাপটিলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ। এসময় আরেক ওপেনার মুনরোর ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ৪৬ রান। তিনিও হাঁকান চারটি ছক্কা।

ওয়ান ডাউনে নামা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমে সুবিধা করতে না পারলেও পুষিয়ে দেন টিম সাইফার্ট। পাঁচ ছক্কায় ১৬ বলে ৩৯ রান করেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। যাতে ১১ ওভারের ম্যাচে কিউইরা পায় ১৪৬ রানের বড় স্কোর।

জবাবে রান তাড়ায় নেমে ভালো শুরুটাই পায়নি ইংল্যান্ড। প্রথম দুই ওভারেই ফিরে যান ওপেনার টম ব্যান্টন ও তিনে নামা জেমস ভিন্স। তবে শুরুর এ জোড়া ধাক্কা সামলে ঘুরে দাড়ান আরেক ওপেনার জনি বেয়ারস্টো।

মাঝে অধিনায়ক ইয়ন মরগান ৭ বলে ২ ছক্কায় ১৭ করে বিদায় নিলেও একাই লড়াই চালিয়ে যান বেয়ারস্টো। ছুটতে থাকেন স্যাম কারানকে নিয়ে। চতুর্থ উইকেটে এ দুজনে মিলে মাত্র ৪ ওভারে যোগ করে ৬১ রান। 

এ সময়ে কিউই পেসার স্কট কুজ্ঞেলেইনের এক ওভারে দুটি করে চার ও ছক্কায় ২০ রান নেন কারান। আর লেগ স্পিনার ইশ সোধিকে টানা তিন ছক্কায় উড়িয়ে দেন বেয়ারস্টো। তবে এ দুজনকে দ্রুত হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। ১৮ বলে পাঁচ ছক্কায় ৪৭ করে নিশামের শিকার হন বেয়ারস্টো। আর ১১ বলে ২৪ রান করা স্যাম কারানকে ফেরান মিচেল স্যান্টনার।

পরে লুইস গ্রেগোরি উইকেটে গিয়েই ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলে আউট হয়ে গেলে ম্যাচ হেলে পড়ে নিউজিল্যান্ডের দিকে। তবুও হাল ছেড়ে না দেয়া ইংলিশরা চালিয়ে যান লড়াই। শেষ ওভারের শেষ তিন বলে জর্ডানের ব্যাটিং বীরত্বে ম্যাচ টাই করে সফরকারীরা।

ম্যাচ নিষ্পত্তির সুপার ওভারে কিউই অধিনায়ক টিম সাউদিকে একটি করে ছক্কা মারেন ইংলিশ অধিনায়ক মরগান ও বেয়ারস্টো। যাতে স্কোরে জমা হয় ১৭ রান। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথে আবারো বাধা হয়ে দাঁড়ান সেই ক্রিস জর্ডান। 

তার করা ওভারের প্রথম দুই বলে গাপটিল ও সেইফার্ট ৭ রান তুলে নিতে পারলেও পরের চার বলেই মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যায় কিউইদের। আর মাত্র ১ রান যোগ করেই সিরিজ হাত ছাড়া করে ফেলে নিউজিল্যান্ড। 

এদিকে, ৩-২ ব্যাবধানে সিরিজ জয় করা ইংলিশদের এ জয়ে মূল নায়ক হিসেবে জর্ডান ভূমিকা রাখলেও তাকে টপকে জনি বেয়ারস্টোই পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তবে সান্ত্বনা হিসেবে সিরিজ সেরার পুরস্কারটা ওঠে সর্বোচ্চ ১১ উইকেট নেয়া কিউই অলরাউণ্ডার মিচেল স্যান্টনারের হাতে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি