নাটকীয় ম্যাচে শেষ বলে জয়
প্রকাশিত : ১৭:২৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৭:২৬, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯
কুমিল্লার জয়ের নায়ক ডেউয়িড মালান
ইনজুরির কারণে অনেকদিন যাবত দলের বাইরে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকেও দেয়া হয়েছে বিশ্রাম। আজ নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে নিজেদের ৯ম ম্যাচে কুমিল্লার মুখোমুখি চট্টগ্রাম। যে ম্যাচে শেষ বলের নাটকে চট্টগ্রামকে তৃতীয় হারের স্বাদ দিয়েছে কুমিল্লা।
নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলতে নেমে বন্দর নগরীর দলটির শুরুটা অবশ্য খুব একটা মন্দ হয়নি। কুমিল্লার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিং করে ১৫৯ রানের সংগ্রহ পেয়েছে চট্টগ্রাম।
যেখানে রান পেয়েছেন দুই ওপেনার লিন্ডল সিমন্স ও জুনায়েদ সিদ্দিক। এ দুজনের পর শেষ দিকে নেমে ঝড় তুলেছিলেন অভিজ্ঞ হার্ড হিটার জিয়াউর রহমান। এই তিনজনের ব্যাটে ভর করেই মূলত চ্যালেঞ্জিং রানের সংগ্রহ পেয়েছে চ্যালেঞ্জার্সরা।
জবাব দিতে নেমে ৩০ রানে প্রথম উইকেট হারায় কুমিল্লা। তবে এরপরই ক্রিজে এসে ঝড় তোলেন দলটির অধিনায়ক ডেউয়িড মালান। চট্টগ্রামের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটান এই ইংলিশ মারকুটে। স্বদেশী প্লাঙ্কেটকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে মাত্র ৩৯ বলেই পূরণ করেন চলতি বিপিএলে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি।
অন্য প্রান্ত থেকে পাঁচজন বিদায় নিলেও দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে ছোটেন তিনি। তবে শেষ বলের আগে দুই রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে ফেরেন মালান। ফেরার আগে ৫১ বলে ৭৪ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন এই বাঁহাতি।
দুর্দান্ত এই ম্যাচে জয়ের জন্য শেষ ওভারে কুমিল্লার দরকার হয় ১৬ রান। এসময় মালান স্ট্রাইকে থাকায় বেশ নির্ভার ছিল কুমিল্লা। তবে প্রথম বলে মাত্র এক রান নিতে পারায় সবার কপালে ফুটে ওঠে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। পরের বলেই লং অনে ক্যাচ তুলে সেই দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দেন আবু হায়দার। তবে ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় সেটি চার হয়ে গেলে উল্টো ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সেই উত্তেজনার পারদ আরও চড়িয়ে দেন আবু হায়দার। তবে চতুর্থ বলে লেগ বাই সূত্রে এক রান নিলে এবং পরের বলে দুই রান নিতে গিয়ে মালান আউট হলে জমে ওঠে শেষ বলের নাটক। কুমিল্লার তখন দরকার ১ বলে ৩ রান।
এ অবস্থায় আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমান চার হাঁকিয়ে দিলে তৃতীয় জয়ের উল্লাসে মাতে কুমিল্লা শিবির। তিন উইকেটে হারে চট্টগ্রাম। যদিও এ হারে তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি দলটির। তবে জিতে কোয়ালিফাই রাউন্ডে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখলো কুমিল্লা।
এর আগে সাইড বেঞ্চ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর এ ম্যাচে সিমন্স ও জুনায়েদ মিলে ওপেনিং জুটিতে তোলেন শতাধিক রান। ১০৩ রানের এ জুটি ভাঙার পরই অবশ্য ১৩ রানের ব্যবধানে চট্টগ্রামের চার উইকেট তুলে নিয়ে খেলার লাগাম টেনে ধরে কুমিল্লা। তবে শেষ দিকে জিয়ার ঝড়ে সেটা আর ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
ছয়ে নেমে মাত্র ২১ বল খেলে ৪টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৩৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন খুলনার এ ক্রিকেটার। সিমন্স ৩৪ বলে পাঁচটি চার ও দুই ছয়ে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন। আর ৩৭ বল খেলা জুনায়েদের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ রান। অনেকদিন জাতীয় দলে খেলা ওপেনারের ইনিংসে চারের মার ছিল ৬টি।
নিজেদের অষ্টম ম্যাচে মাত্র তৃতীয় জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামা কুমিল্লার বোলারদের মধ্যে এদিন সবচেয়ে সফল ছিলেন নিজেকে অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকার। চার ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট।
যাতে এখন পর্যন্ত ১১টি উইকেট নিয়ে তালিকার চার নম্বরে স্থান করে নিয়েছেন এই মিডিয়াম পেসার। এছাড়া সাঞ্জামুল, আল আমিন ও ওয়াইসি একটি করে উইকেট নেন।
এনএস/