যেসব নতুন নিয়মে আজ মাঠে ফিরছে ক্রিকেট
প্রকাশিত : ১২:৩১, ৮ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ১২:৩২, ৮ জুলাই ২০২০
এখন থেকে ঠিক ১১৫ দিন (চার মাস) আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখেছিল বিশ্ব। দিনটি ছিল মার্চের ১৩ তারিখ। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দর্শক শূন্য স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। ম্যাচে অজিরা জিতেছিল ৭১ রানের ব্যবধানে।
সেই ম্যাচের পর পেরিয়ে গেছে প্রায় চার মাস। মাঝের সময়টায় একবারের জন্যও দেখা মেলেনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর কখনও এত লম্বা বিরতি পড়েনি ক্রিকেটে। এবার করোনা ভাইরাসের কারণে ক্রিকেটে এত দীর্ঘ বিরতি। অবশেষে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজ দিয়ে পুনরায় মাঠে গড়াচ্ছে খেলা।
অবশ্য নিয়ম কানুন বেশ পাল্টে গেছে। প্রাণঘাতি এ করোনা ভাইরাসের কারণে গ্যালারিতে থাকবে না কোন দর্শক। সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মাথায় রেখেই এ সিদ্ধান্ত। শুধু ফাঁকা গ্যালারিই নয়, মাঠের খেলার নিয়মেও আনা হয়েছে ৫টি পরিবর্তন। এসব নিয়ম মেনেই শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট সিরিজ। করোনায় পাল্টে যাওয়া কিছু নিয়ম:
বলে লালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খেলোয়াড়রা ম্যাচের মধ্যে লালার মাধ্যমে বল উজ্জ্বল করতে পারবেন না। কেউ যদি অভ্যাসবশত বলে লালার ব্যবহার করে ফেলেন, তাহলে বিষয়টি আম্পায়ারের নজরে আনবেন। আম্পায়াররা সমস্যা সমাধান করবেন।
করোনা সাবস্টিটিউট
গত অ্যাশেজ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখেছে কনকাশন সাবস্টিটিউট। অর্থাৎ টেস্ট ম্যাচে কোন খেলোয়াড় মাথায় আঘাত পেলে তার পরিবর্তে নামানো হয় অন্য আরেকজন একই ধরনের খেলোয়াড়। সে নিয়মের সঙ্গে এবার যোগ হলো করোনা সাবস্টিটিউট।
নতুন এ নিয়মের আওতায় টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন কোন খেলোয়াড়ের মধ্যে যদি করোনা ভাইরাসের কোন উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে ম্যাচ রেফারির অনুমতি সাপেক্ষে অন্য একজন খেলোয়াড়কে মাঠে নামানো যাবে। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির জন্য এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়।
তবে একই কাজ বারবার হতে থাকলে পুরো দলকে আনুষ্ঠানিক সতর্কতা দেয়া হবে। প্রতি ইনিংসে একটি দল সর্বোচ্চ দুইবার সতর্কতা পাবে। এরপর থেকে বলে লালা ব্যবহার করলে ব্যাটিং দলকে দেয়া হবে ৫টি পেনাল্টি রান। বলে লালা ব্যবহার করা হলে সেটিকে ভালোভাবে মুছে তবেই খেলা শুরু করা যাবে।
স্থানীয় আম্পায়ার দিয়ে খেলা পরিচালনা
স্বাভাবিক সময়ে যেকোন সিরিজ আয়োজনে অন্তত একজন নিরপেক্ষ দেশের আম্পায়ার থাকা বাধ্যতামূলক। তবে করোনাকালীন সময়ে যেকোন দেশ চাইলে স্থানীয় আম্পায়ারদের দিয়েই ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবে। এক্ষেত্রে আইসিসিই তাদের আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিদের প্যানেলভুক্ত আম্পায়ারদের মধ্য থেকে আম্পায়ার ও রেফারি ঠিক করে দেবে। ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম ম্যাচে আম্পায়ারিং করবেন রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ এবং রিচার্ড কেটেলব্রো। দু’জনই ইংল্যান্ডের।
অতিরিক্ত রিভিউ সিস্টেমের অনুমতি
করোনাকালীন সময়ে স্থানীয় আম্পায়ারদের দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার কারণে ভুল সিদ্ধান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে কুম্বলেদের প্রধান নির্বাহী কমিটি। এটি বিবেচনায় সব দলের জন্য বাড়তি একটি রিভিউ নেয়ার সুযোগ দেবে আইসিসি।
এতদিন ধরে প্রতি ইনিংসে টেস্টে দুই, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে একটি করে রিভিউ নিতে পারত সব দল। অস্বাভাবিক এ সময়টাতে টেস্টে তিন, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে নেয়া যাবে দুইটি করে রিভিয়।
জার্সিতে বাড়তি লোগোর ব্যবহার
আগামী ১২ মাসের জন্য জার্সিতে বাড়তি লোগো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে আইসিসি। তবে সেটি ৩২ স্কয়ার ইঞ্চির বেশি হতে পারবে না, যা থাকবে খেলোয়াড়দের বুকের মধ্যে। এতদিন ধরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এটি ব্যবহৃত হলেও, টেস্টে এর অনুমতি ছিল না। এছাড়া বাকি তিনটি লোগো ব্যবহারের নিয়মনীতি আগের মতোই থাকবে।
এআই/এমবি