শ্রীলঙ্কার কঠিন শর্তে সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা!
প্রকাশিত : ১৯:১৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
অনুশীলনে টিম বাংলাদেশ
দু'দিন আগেও আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফরে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের জন্য তামিম-মোমিনুলদের ৭ দিন কোয়ারেন্টাইন করলেই চলবে বলে নীতিগতভাবে সম্মত ছিল লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু হুট করেই লঙ্কান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে- এক সপ্তাহ নয়, কোয়ারেন্টাইন করতে হবে ১৪ দিন।
শুধু তাই নয়, কোয়ারেন্টাইনকালীন সফরকারী বাংলাদেশ দল অনুশীলন করতে পারবে বলে কথা থাকলেও এখন বলছে- সেটাও সম্ভব নয়! এমনকি জাতীয় দল ও বিসিবি এইচপিসহ সফরে মোট ৬৫ ক্রিকেটারের যাওয়ার কথা থাকলেও এখন তারা বলছে- একসঙ্গে এতো সংখ্যক ক্রিকেটার সফর করতে পারবেন না!
কথা ছিল, আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সঙ্গে বিসিবি'র হাইপারফরম্যান্স ইউনিটও (এইচপি) সফর করবে। এর প্রধান কারণ ছিল দুটি। প্রথমত- বিসিবি'র এইচপি ইউনিট ও লঙ্কান এইচপি ইউনিটের মধ্যকার সিরিজ মাঠে গড়ানোর কথা রয়েছে। আর দ্বিতীয়ত- করোনা মহামারীর কারণে যেহেতু স্বাগতিকরা প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য কোনো দল দিতে পারছে না, তাই বিসিবি এইচপি দলের বিপক্ষেই মোমিনুলদের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলার কথা ছিল।
কিন্তু হুট করেই আয়োজক দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য নীতিমালার খড়গে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে এইচপি দলের সিরিজটি। কেননা তারা বিসিবিকে পাঠানো স্বাস্থ্য নীতিমালায় স্পষ্টত উল্লেখ করে দিয়েছে যে, করোনা মহামারীর সময়ে এত সংখ্যক ক্রিকেটার যেন দেশটি সফর না করে।
মূলত বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলের মধ্যকার সিরিজটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং আইসিসি'র বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আওতাধীন, তাই সবার আগে গুরুত্ব পাচ্ছে জাতীয় দলের সিরিজটিই। অন্যদিকে এইচপি দলের সিরিজটি জাতীয় দলের মতো কোনো চ্যাম্পিয়নশিপের অধীনে না হওয়ায় পরবর্তী সময়ে আবারও এই সিরিজ আয়োজন করা সম্ভব হবে। তাই জাতীয় দলের সিরিজটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েই আপাতত এইচপি দলের শ্রীলঙ্কা সফর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সংবাদ মাধ্যমকে এসব কথা জানালেন বিসিবি'র হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের চেয়ারম্যান নাইমুর রহমান দুর্জয়।
তিনি বললেন, ‘দুই বোর্ড এখনো পর্যন্ত একমত হয়েছে ৭ দিনের কোয়ারেন্টাইন নিয়ে। তবে শ্রীলঙ্কান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বলছে- ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন। একইসঙ্গে আগে যেটা ছিল কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় আমরা অনুশীলন করতে পারবো কিন্তু এখন সেটাতেও নিষেধাজ্ঞা আসছে। কাজেই আমরা আমাদের অবজারভেশনগুলো তাদের জানাচ্ছি। এটা শ্রীলঙ্কা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে না, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অনেক ব্যাপার আছে। সফরে সদস্য সংখ্যাও কমানোর চিন্তা ভাবনা করছে। সেটাও একটা ইস্যু।’
যদি শেষ পর্যন্ত সফরে ক্রিকেটারদের সংখ্যা কমাতেই হয় তাহলে কি হবে? এমন প্রশ্নে দুর্জয়ের উত্তর হলো, সেক্ষেত্রে অবশ্যই জাতীয় দল প্রাধান্য পাবে। যেহেতু মুমিনুলদের সফরটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ।
নাইমুর রহমান দুর্জয় আরও বলেন, ‘অগ্রাধিকার তো পাবে জাতীয় দলের সফর। কারণ এইচপি টিমের যে ক্যাম্প সেটা আমরা এখন করতে পারবো, পরেও করতে পারবো। কিন্তু জাতীয় দলের যে সফর সেখানে কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে। আপনারা জানেন, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যাপার আছে। সেক্ষেত্রে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সঙ্গে যদি আমরা এই উইন্ডোটা মিস করি, তাহলে নতুন উইন্ডো বা স্লট বের করা কঠিন হবে। সুতরাং জাতীয় দলের টেস্ট সিরিজটা অগ্রাধিকার পাবে।’
এদিকে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) এমন অনড় অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে কাটছেনা অনিশ্চয়তা। ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে কড়াকড়িভাবে পালন করতেই হবে- মর্মে এখন বিসিবি'র সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় লঙ্কান বোর্ড।
এনএস/