ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৫ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

উত্তেজনাকর ম্যাচে ১ রানের জয় চট্টগ্রামের

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ২২:২০, ২ ডিসেম্বর ২০২০ | আপডেট: ২৩:০০, ২ ডিসেম্বর ২০২০

Ekushey Television Ltd.

চলমান বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে আজ মুখোমুখি পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ও মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। সন্ধ্যায় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে শেষ বল পর্যন্ত চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে মাত্র ১ রানে হেরেছে রাজশাহী। অন্যদিকে এমন জয়ে টানা চার জয় নিয়ে শীর্ষেই থাকলো চট্টগ্রাম।

এর আগে লিটন দাসের ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিং শৈলিতে ১৭৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করে আগে ব্যাট করা চট্টগ্রাম। ব্যাটিংয়ে লিটনকে যোগ্য সঙ্গ দেন সৌম্য সরকার ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। জবাবে শেষ বলে চার রানের প্রয়োজন থাকলেও দুই রান নিতে সক্ষম পারায় ওই ১ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মিঠুন-মুস্তাফিজের দল।

১৭৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে জবাবটা ভালোই দিচ্ছিলো রাজশাহী। দলনায়ক নাজমুল হোসাইন শান্ত ২৫ রানে এবং মোহাম্মাদ আশরাফুল ২০ রান করে আউট হয়ে ফিরলেও এই দুজনের সঙ্গে যথাক্রমে ৫৬ ও ৪৪ রানের দুটি মূল্যবান জুটি গড়ে দলীয় স্কোরকে ঠিকই লক্ষ্যপানে নিয়ে যাচ্ছিলেন আরেক ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমন।

এরইমধ্যে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম ফিফটিও তুলে নেন আনিসুল। তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ক্যারিয়ার সেরা ৫৮ রান করেন নারায়ণগঞ্জের অলরাউণ্ডার। তার এই ৪৪ বলের ইনিংসে ছিল ছয়টি চারের সঙ্গে একটি বিশাল ছক্কার মার। আনিসুল ফেরার পরও ম্যাচটি রাজশাহীর অনুকূলেই ছিল। কিন্তু ১৭তম ওভারের শেষ বলে এবং ১৮তম ওভারের প্রথম বলে পরপর মেহেদী হাসান (২৫) ও ফজলে মাহমুদ (১১) ক্যাচ তুলে আউট হলেই যেন খেই হারিয়ে ফেলে পদ্মাপাড়ের দলটি। 

১৭ বলে তখন শান্তদের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। মুস্তাফিজের করা ওই ওভারে রনি তালুকদারের হাঁকানো ছক্কাসহ মোট ৮ রান সংগ্রহ করলে শেষ ১২ বলে রাজশাহীর লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭ রান। শরিফুলের করা ১৯তম ওভারে একটি করে ছক্কা-চার হাঁকিয়ে ফরহাদ রেজা (১২) যখন জয়ের আভাস দিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাকে মাঠ ছাড়া করেন তরুণ এই বাঁহাতি পেসার। তবে ওই ওভারে ১৩টি রান আসায় শেষ ওভারে নুরুল হাসান ও রনি তালুকদারদের প্রয়োজন পড়ে ১৪ রানের।

শেষ ওভার করা মুস্তাফিজ তার প্রথম বলেই নুরুলকে (৮) তুলে নিলে খেলা জমে যায়। এরপরের দুটি বল ডট হয়ে গেলে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে উভয় শিবিরে। তিন বলে ১৪ রান! এমনই টান টান উত্তেজনাময় অবস্থায় পর পর দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকান রনি। ফলে শেষ বলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪ রান। এতে হতাশ হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম শিবির, অন্যদিকে উজ্জীবিত দেখায় রাজশাহীকে।

তবে নিজের শেষ বলটিতেই যেন সবটুকু অভিজ্ঞতা ঢেলে দেন ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট মুস্তাফিজ। উইকেট সোজা অনেকটা ইয়র্কার হওয়া ওই বল থেকে তাই দৌড়ে দুই রানের বেশি নিতে পারেনি রাজশাহীর দুই ব্যাটসম্যান। যাতে ১ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম। ৩৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট লাভ করেন মুস্তাফিজ। অপর বাঁহাতি পেসার শরিফুলে শিকার ২টি, ৪১ রানের বিনিময়ে। তবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন লিটন দাস।    

এর আগে সন্ধ্যায় টস জিতে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে আগে ব্যাটিং করার জন্য আমন্ত্রণ জানায় মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। ওপেনিংয়ে নেমে চট্টগ্রামের পক্ষে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। তাদের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৬২ রান। অষ্টম ওভারে এই জুটি ভাঙেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। আনিসুল ইসলাম ইমনের তালুবন্দী হয়ে ফিরে যান সৌম্য। ২ ছক্কা ও ৪ চারে ২৯ বলে ৩৪ রান করেন এই বাঁহাতি ওপেনার।

ওপেনিংয়ে সফলতার পরই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক মিঠুন। মাত্র ১১ রান করে ইমনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। মিঠুনের বিদায়ের পরে শামসুর রহমান শুভও ফিরে যান ১ রান করেই। ফরহাদ রেজার বলে বোল্ড হন তিনি। তবে একপ্রান্তে অবিচল থেকে অর্ধশতক তুলে নেন লিটন দাস। টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক স্পর্শ করেন ৩৫ বলে। 

চতুর্থ উইকেটে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে জুটি গড়েন লিটন। জীবন পেয়ে সেটা কাজে লাগান মোসাদ্দেক। মারকুটে এই ব্যাটসম্যান রানের চাকা সচল রাখলে বড় সংগ্রহের দিকেই এগিয়ে চলে চট্টগ্রাম। দুইজনে শেষ ৫ ওভারে তোলেন ৬১ রান। যদিও শেষ ওভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোসাদ্দেক। আউট হওয়ার আগে নামের পাশে শোভা পায় ৪২টি রান। ২৮ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ওই ইনিংস সাজান সৈকত। তার আউটের পর আরেক সৈকত (আলী) নেমে একটি মাত্র বল মোকাবেলার সুযোগ পেলেও আউট হয়ে যান তিনি।

তবে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খেলে লিটন অপরাজিত থাকেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার সেরা ৭৮ রান করে। এসময়ে তিনি মোকাবেলা করেন ৫৩টি বল। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১টি ছক্কা ও ৯টি চারে। যার ফলে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে চট্টগ্রাম সংগ্রহ করে পাঁচ উইকেটে ১৭৬ রান।

রাজশাহীর পক্ষে শেষ ওভারে ওই দুটিসহ মোট ৩টি উইকেট শিকার করেন মুকিদুল। আর একটি করে উইকেট পান ফরহাদ রেজা ও আনিসুল ইসলাম ইমন।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি