ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

তাইজুলের মায়াবী ছোবলে নীল ক্যারিবীয়রা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | আপডেট: ১২:৪৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

চার উইকেট নিয়ে উইন্ডিজকে ধসিয়ে দেয়া তাইজুলকে সতীর্থদের অভিনন্দন, ছবি- ক্রিকইনফো।

চার উইকেট নিয়ে উইন্ডিজকে ধসিয়ে দেয়া তাইজুলকে সতীর্থদের অভিনন্দন, ছবি- ক্রিকইনফো।

উইন্ডিজের লক্ষ্য লিড বাড়ানো, আর বাংলাদেশের লক্ষ্য যতটা দ্রুত উইকেটগুলো তুলে নেয়া। এই দুই লক্ষ্য সামনে রেখেই ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনে মাঠে নেমেছে উভয় দল। আজ রোববার সকালে নেমেই পেসার আবু জায়েদ রাহীর জোড়া আঘাত ও তাইজুলের মায়াবী স্পিন ছোবলে বিষে নীল হয়েছে উইন্ডিজ। যাতে ১১৭ রানেই অলআউট হয়েছে ক্যারিবীয়রা এবং বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ২৩০।

দিনের পঞ্চম ওভারেই দলকে উইকেট উপহার দেন পেসার আবু জায়েদ রাহী। তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান জোমেল ওয়ারিকান। তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান। এনক্রুমাহ বোনার ৮ এবং জোমেল ওয়ারিকান ছিলেন ২ রানে। আগের ২ রানের পর নামের পাশ আর কোনও রানই যোগ করতে পারেননি তিনি।

এর পর দলিয় ৬২ রানে ক্যারিবীয় শিবিরে আবারও আঘাত হানেন রাহী। এবার তার শিকার হন প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে পরাজয়ের স্বাদ দেয়া কাইল মায়ার্স। লেগ বিফোর হয়ে ফেরেন মাত্র ৬ রান করে। রাহী অবশ্য মায়ার্সের উইকেটটি আগেই পেতে পারতেন। ব্যাটকে চুম্বন করে যাওয়া সেবারের বলটি লিটনের গ্লাভসে জমা পড়লেও আম্পায়ার সাড়া না দেয়ায় আর রিভিউ না নেয়ায় যে যাত্রায় বেঁচে যান বাঁহাতি মায়ার্স। 

এরপরেই দৃশ্যপটে আসেন তাইজুল ও নাঈম। লিটনের নৈপুণ্যে ব্লাকউডকে (৯) কঠিন স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার বানিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন বাঁহাতি স্পিনার। যাতে ৭৩ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারায় উইন্ডিজ। এরপর একে একে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জসুয়া ডা সিলভা (২০) ও এনক্রুমাহ বোনারকে (৩৮) তুলে নিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট পূরণ করেন তাইজুল। আর মাঝে ও শেষে আলজেরি জোসেফ (৯) ও দৈত্যাকার কর্নওয়ালকে (১) তুলে নিয়ে নাঈম হাসান শেষ করে দেন সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস। 

এর আগে প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানের লিড পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ম্যাচ জিততে দ্বিতীয় ইনিংসে তাদেরকে অল্পে অলআউট করা একপ্রকার বাধ্যতামূলক বলা চলে বাংলাদেশের জন্য। সে লক্ষ্যে তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে ৪০ রানের আগেই ৩ উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা, ক্যারিবীয়দের চাপে রেখেই শেষ করে দিনের খেলা।

সে ধারাবাহিকতা বজায় রাখলো চতুর্থ দিন সকালেও। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা জোমেল ওয়ারিকানকে সাজঘরে পাঠিয়ে দিনের শুরুটা ইতিবাচকভাবেই করল বাংলাদেশ। পরে আরও দুটি উইকেট তুলে নিল টাইগাররা।

ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে নতুন বলটা দলের একমাত্র পেসার রাহীর হাতে দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল হক। মূলত তৃতীয় দিনে হওয়া ২১ ওভারের মধ্যে এক ওভারও পাননি রাহী। আজ রাহীকে দিয়েই বোলিংয়ের শুরুটা করেছে বাংলাদেশ। সফলতা মিলতেও খুব একটা দেরি হয়নি।

দিনের পঞ্চম ও রাহীর করা তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ওয়ারিকান। খালি চোখেই দেখা যাচ্ছিল পরিষ্কার আউট এটি। যে কারণে রিভিউ নেয়নি ক্যারিবীয়রা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় সংগ্রহ তখন ৪ উইকেটে ৫০ রান। সে ওভারেই তারা হারাতে পারত পঞ্চম উইকেটও।

চতুর্থ উইকেট পতনের পর উইকেটে আসেন আগের ম্যাচের নায়ক কাইল মায়ার্স। প্রথম বলেই চার মেরে শুরু করেন তিনি। সেই ওভারের শেষ বলটি বেরিয়ে যাচ্ছিল অফস্ট্যাম্প দিয়ে। ব্যাট এগিয়ে দিয়েও সরিয়ে নেন মায়ার্স, বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসে।

বাংলাদেশ দল আবেদন করলেও আউট দেননি আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, সেই বলটি লিটনের গ্লাভসে যাওয়ার পথে মায়ারসের ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে গেছে। অর্থাৎ রিভিউ নিলে সে উইকেটটি পেতে পারত বাংলাদেশ, সাজঘরের পথ ধরতে হতো মায়ার্সকে। সিদ্ধান্তহীনতায় তা আর হয়নি।

দলের পক্ষে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম একাই নিয়েছেন চারটি উইকেট, ৩৬ রানের বিনিময়ে। আর ৩টি উইকেট নিয়েছেন তরুণ স্পিনার নাঈম হাসান, ৩৪ রানের বিনিময়ে। এছাড়া একমাত্র পেসার আবু জায়েদ রাহী ২টি এবং বাকি উইকেটটি নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি