ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বেঁচে ফিরলেন এরিকসেন, স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল ফুটবলবিশ্ব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫০, ১৩ জুন ২০২১ | আপডেট: ০৮:৫২, ১৩ জুন ২০২১

এরিকসনকে বাঁচানোর সেই মুহূর্ত

এরিকসনকে বাঁচানোর সেই মুহূর্ত

Ekushey Television Ltd.

মাত্র ঘণ্টা খানেক আগেও মনে হচ্ছিল অসম্ভব। সবাই ধরেই নিয়েছিলেন, হয়তো আর ফিরবেন না ২৯ বছরের মিডফিল্ডার। কিন্তু যখন ডেনমার্ক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং উয়েফা থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হলো- সুস্থ আছেন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন, কথা বলছেন, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ফুটবল দুনিয়া।

ঠিক কার জন্য সম্ভব হলো এই অসম্ভব? জানা গেছে, এরিকসেনের জীবন বাঁচিয়েছেন তাঁরই দলের অধিনায়ক সাইমন কায়ের।

এরিকসেনের জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য অনেকেরই কৃতিত্ব প্রাপ্য। তিনি যখন মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন রেফারি অ্যান্টনি টেলর একটুও সময় নষ্ট না করে খেলা থামিয়ে দেন। এরপর চিকিৎসক দল অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করে দেন। ডেনমার্কের ফুটবলাররা এরিকসেনের চারপাশে বলয় তৈরি করেন, যে দৃশ্য ফুটবল ইতিহাসে জায়গা করে নেবে।

কিন্তু এঁদের সবাইকে ছাপিয়ে যান ড্যানিশ অধিনায়ক সাইমন কায়ের। তিনি সবার আগে ছুটে যান এরিকসেনের কাছে। তাঁর দলের সবথেকে নির্ভরযোগ্য ফুটবলারের জিভ যাতে গলায় আটকে না যায়, সেটা নিশ্চিত করেন তিনি। তারপর এরিকসেনের বুকে চাপ দিয়ে কৃত্রিমভাবে তাঁর শ্বাস প্রক্রিয়া চালু রাখেন। চিকিৎসকরা মাঠে আসার আগেই কায়ের সতীর্থের জন্য সিপিআর চালু করে দেন। 

এসি মিলানের এই ডিফেন্ডার ইতালি লিগে তাঁর চিরপ্রতিপক্ষ ইন্টার মিলানের মিডফিল্ডারের জন্য আক্ষরিক অর্থেই ঝাঁপিয়ে পড়েন। দেশীয় সতীর্থদের নিয়ে এরিকসেনের চারপাশে প্রাচীর তৈরি করে দেন ড্যানিশ ফুটবলাররা। তারপর চিকিৎসকরা এসে এরিকসেনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। বাকিটা ইতিহাস।

পরে দেখা যায়, মাঠের মধ্যেই এক নারীকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন সাইমন কায়ের। আর সেই নারী হাউমাউ করে কাঁদছেন। পরে জানা যায়, তিনি এরিকসেনের স্ত্রী সাবরিনা।

ডেনমার্ক বনাম ফিনল্যান্ড ম্যাচের বয়স তখন ৪২ মিনিট। থ্রো থেকে আসা বল ধরার জন্য এগিয়ে যাচ্ছিলেন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। হঠাৎই মুখ থুবড়ে পড়ে গেলেন তিনি। কয়েক মুহূর্তের জন্য কেউ বুঝতেই পারছিলেন না কেন পড়ে গেলেন এরিকসেন। কিন্তু তাঁকে উঠতে না দেখে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের মাঠে ঢোকার জন্য সঙ্কেত দেন রেফারি।

চিকিৎসকরা মাঠে ঢুকে এরিকিসেনকে সিপিআর দিতে শুরু করেন। ততক্ষণে তাঁদের ঘিরে গোলাকার প্রাচীর তৈরি করে দিয়েছেন ডেনমার্কের ফুটবলাররা। চিকিৎসার সেই দৃশ্য ক্যামেরাও ধরেনি স্বাভাবিক নিয়মেই। মাঠের দর্শকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে আশঙ্কা! কী ঘটছে বুঝতে না পারলেও আতঙ্ক তাঁদের চোখে মুখে স্পষ্ট। কেউ কাঁদছেন, কেউ মুখ ঢেকে রেখেছেন, কেউ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন। ডেনমার্কের ফুটবলারদের চোখে মুখেও আতঙ্ক। কাঁদছেন কেউ কেউ। মাঠে উপস্থিত সকলের মধ্যেই উৎকণ্ঠা।

প্রায় ১০ মিনিট চিকিৎসা চলার পর স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নিয়ে আসার প্রস্তুতি শুরু হয়। ততক্ষণে ফিনল্যান্ডের ফুটবলাররা মাঠ ছাড়তে শুরু করেছেন। এরিকসেনকে ঘিরেই মাঠ ছাড়েন ডেনমার্কের ফুটবলাররাও। সেই মুহূর্তে ক্যামেরায় ধরা পড়ে চোখ মেলেছেন তিনি। কিছুটা স্বস্তি ফেরে বিশ্ব ফুটবলে। উয়েফা জানায়, এরিকসেনের অবস্থা স্থিতিশীল। 

শেষতক খেলা শুরু হয় এবং ম্যাচটিতে ১-০ গোলের জয় পায় ফিনল্যান্ড। খেলার ৫৯তম মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন ফিনিশ তারকা জোয়েল পোজানপালো। অন্যদিকে, রোমেলু  লুকাকুর জোড়া গোলে ৩-০ ব্যবধানে রাশিয়াকে হারায় বেলজিয়াম।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি