স্বপ্নের ফাইনালে ইংল্যান্ড
প্রকাশিত : ০৮:০১, ৮ জুলাই ২০২১
প্রথমবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে উঠলো ইংল্যান্ড। ৫৫ বছর পর বড় কোন টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলবে থ্রি লায়নরা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ডেনমার্ককে হারিয়েছে তারা। ঘরে মাঠে ফাইনালের স্বপ্ন দেখে আসছিল হ্যারি কেইনরা। সেই স্বপ্নের ফাইনালে টানা ৩৩ ম্যাচে অপরাজিত ইতালির মুখোমুখি হবে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।
বুধবার (৭ জুলাই) রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ডেনমার্ককে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। মিকেল ডামসগার্ডের দারুণ ফ্রি কিকে এগিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আত্মঘাতী গোল করে বসে ডেনমার্ক। অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে ব্যবধান গড়ে দেন হ্যারি কেইন।
এই আসরে প্রথম দুই ম্যাচ হারার পর রূপকথা তৈরি করে ২৯ বছর পর সেমিফাইনালে উঠেছিল ডেনমার্ক। প্রথম ম্যাচে ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের মাঠে জ্ঞান হারানার পর বেঁচে ফেরায় অনুপ্রাণিত হয় পুরো দল। কিন্তু সেমিফাইনালে এসে উড়তে থাকা ইংল্যান্ডের গোলবুহ্য ভাঙার পরও সাফল্যের দেখা পেলো না ডেনিশরা।
পুরো ম্যাচে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য দেখায় ইংল্যান্ড। ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে গোলের উদ্দেশে ২০টি শট নেয় তারা, যার ১০টিই ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে ডেনিশরা শট নিতে পারে ৬টি, যার চারটি ছিল লক্ষ্যে।
প্রথম ১০ মিনিটের ইংলিশ আক্রমণের পর ধীরে ধীরে গুছিয়ে ওঠে ডেনমার্ক। উল্লেখযোগ্য সুযোগ অবশ্য কেউই পাচ্ছিল না। গোটা টুর্নামেন্টে গোলপোস্ট অক্ষত রাখা ইংল্যান্ড ভেঙে পড়ে ৩০ মিনিটে। ডামসগার্ডের দুর্দান্ত ফ্রি কিক থামাতে পারেননি পিকফোর্ড। ঝাঁপিয়ে বলে আঙুল ছোঁয়ালেও রুখতে পারেননি তিনি। এবারের ইউরোয় সরাসরি ফ্রি কিকে এটাই প্রথম গোল।
৩৮তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাহিম স্টার্লিং। হ্যারি কেইনের পাস পেয়ে ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডারের নেওয়া শট দারুণ নৈপুণ্যে রুখে দেন কাসপের স্মাইকেল। পরের মিনিটেই প্রতিপক্ষের ভুল আর কিছুটা ভাগ্যের জোরে সমতায় ফেরে ইংলিশরা।
কেইনের দারুণ থ্রু বল ধরে বুকায়ো সাকা বাইলাইন থেকে গোলমুখে স্টার্লিংয়ের উদ্দেশে ক্রস বাড়ান। সেটাই রুখতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করে বসেন ডেনিশ অধিনায়ক সিমন কায়ের।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে কাসপের ডলবার্ডের ডি-বক্সে বাইরে থেকে নেওয়া নিচু শট ঝাঁপিযে ফেরান পিকফোর্ড। চার মিনিট পর হ্যারি ম্যাগুইয়ারের হেড একইভাবে ঠেকিয়ে দলকে সমতায় রাখেন স্মাইকেল। ৭৩তম মিনিটে ম্যাসন মাউন্টের ক্রসও কর্নারের বিনিময়ে ফেরান তিনি।
ফলে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে দুই দলেরই স্কোর সমান। এই অর্ধে সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোন দলই। তাতে ২০০০ সালের পর প্রথমবার ইউরোর দুটি সেমিফাইনালই গেলো অতিরিক্ত সময়ে। প্রথম সেমিফাইনালে স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে ইতালি।
অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের শুরুতে আবারও ইংল্যান্ডকে হতাশ করেন স্মাইকেল; এবার কেইনের কোনাকুনি শট রুখে দেন তিনি। তবে ১০৪তম মিনিটে কেইনকে আর রুখতে পারেননি ডেনিশ গোলরক্ষক। মাহলে বক্সের মধ্যে স্টার্লিংকে ফাউল করলে পেনাল্টি দেন রেফারি। ভিএআরেও সেই সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। কেইন নেন পেনাল্টি, তার শট স্মাইকেল রুখে দিলেও ফিরতি শটে গোল করেন ইংলিশ অধিনায়ক।
গ্রুপ পর্বে গোলশূন্য থেকে খানিকটা সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কেইন। তবে নকআউট পর্ব শুরু হতেই ভিন্ন চেহারায় আবির্ভূত হন ইংলিশ অধিনায়ক, তিন ম্যাচেই করলেন চার গোল।
ম্যাচের শেষ দিকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ স্টার্লিং কাজে লাগাতে না পারলেও ইতিহাস গড়া জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।
আগামী ১১ জুলাই রোববার এই মাঠেই শিরোপা লড়াইয়ে নামবে ছন্দে থাকা দল দুটি। টানা ৩৩ ম্যাচ ধরে অপরাজিত ইতালির মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
এএইচ/