ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪

‘টেকনিক্যাল নয়, সমস্যাটা ছিলো মানসিক’

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ১১:৩৮, ১৯ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ১৩:৩৩, ১৯ জুলাই ২০২১

সাকিব আল হাসান

সাকিব আল হাসান

বিশ্বকাপে চরম সাফল্যের পর দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যাটে রান ছিল না তার। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট- সব ময়াদানেই ব্যর্থ ছিলেন সাম্প্রতিক সময়ে। বল হাতে নিয়মিত ছন্দে থাকলেও অবশেষে ব্যাট হাতেও ছন্দ খুঁজে পেয়েছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। রোববার হারারেতে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলার পর জানিয়েছেন মানসিকতার পরিবর্তন করেই সফল হয়েছেন তিনি।

ঠিকই ধরেছেন, সাকিব আল হাসানের কথাই বলছিলাম। গত জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি হাফ সেঞ্চুরি করার পর সাকিব ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন আইপিএল, ডিপিএল ও চলতি সফরে জিম্বাবুয়ের সাথে আগের ম্যাচ দুটোতে। প্রায় প্রতি ম্যাচেই মনোযোগ হারিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিতে দেখা গেছে তাঁকে।

তবে রোববার হারারেতে ম্যাচ জয়ী যে ইনিংসটা সাকিব খেললেন, এক কথায় অসাধারণ। এদিন রানে ফিরে বিসিবির তরফ থেকে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় এই অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, তাঁর ব্যাটিংয়ে টেকনিক্যাল কোনও সমস্য ছিলো না। মানসিক সমস্যাটা ছিলো বেশি। এদিন ম্যাচের আগে সেটিও পরিবর্তন করেন তিনি। সাকিব জানিয়েছেন, এটা ধরা রাখতে পারলে নিয়মিত রান করাও সম্ভব।

সাকিব আল হাসান বলেন, ‘পরিশ্রম তো করতেই হয়। কিন্তু মেন্টাল মাইন্ডসেটটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, আমি অনেক বেশি চিন্তা করছিলাম। এই ম্যাচের আগে যা পরিবর্তন করেছি। কিছু কিছু জিনিস এই ম্যাচের আগে আমাকে হেল্প করেছে ফোকাস রাখতে। চেষ্টা করবো এই ফোকাসটা যেন ধরে রাখতে পারি। এতো দিন খেলার পরে আসলে খুব বেশি টেকনিক্যাল সমস্য হয়না। মানসিক সমস্যটাই বেশি হয়। তো এখানে যদি নিজের সাথে নিজে জিততে পারি, তাহলেই নিয়মিত রান করা সম্ভব।’

দলের বিপর্যয়ে ১০৯ বলে ৯৬ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন সাকিব। পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেয়ার পর আর কোনও জুটিই হচ্ছিল না দলের। সাকিব এক প্রান্ত আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তে বজায় ছিল আশা যাওয়ার মিছিল। 

মিরাজ (৬), আফিফ (১৫) দ্রুত বিদায় নিলে অনেকটা পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে যায় বাংলাদেশ। তবে অষ্টম উইকেটে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে (২৮) সঙ্গী করে ৬৯ রানের জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

নিজের রানে ফেরা ও দলের জয় নিশ্চিত করা দুটোতেই তাই যারপরনাই খুশি সাকিব। তার কাছে কোনওটাকেই ছোট করে দেখেন সাকিব, ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। যেহেতু দলের জেতার জন্য খুব অবদান রেখেছে সেই দিক থেকে খুব খুশি। কোনটার থেকে কোনটাই কম না। আমি চেষ্টা করি সব সময় দলের জন্য খেলতে। তো দুটোই করতে পেরে আমি খুব খুশি।’

১৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকেই গিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর আফিফ হোসাইনের সঙ্গে ২৮ রানের জুটি গড়ে দলকে কিছুটা হলেও লক্ষ্যে ফেরান সাকিব। বাকী কাজটা শেষ করেন সাইফুদ্দিনকে নিয়ে। ম্যাচ শেষে তিনি জানিয়েছেন, ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ার পর তাঁর একটাই লক্ষ্য ছিল- ম্যাচটা যতোটা সম্ভব ক্লোজ করা।

সাকিব বলেন, ‘যখন আফিফের সাথে ব্যাটিং করছিলাম- একটা কথাই বলছিলাম, আমরা যদি ৪৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে পারি তাহলে বুঝতে পারবো কোথায় আছি। ১৫-২০ রান দুই তিন ওভারেও মেকাপ করা সম্ভব। সব সময় লক্ষ্য ছিল খেলা যতোটা ক্লোজ করতে পারি।’

মাত্র চার জন্য শতক না পেলেও আক্ষেপ নেই সাকিবের। তবে সেঞ্চুরিটা পেলে অবশ্যই আরও ভালো লাগতো তার। তিনি বলেন, ‘আমি আমার মতোই খেলেছি, তবে অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট পড়ার কারণে আমার এর থেকে বেশি কিছু করার ছিল না। তবে খেলা শেষ করার জন্য কৃতিত্ব অবশ্যই সাইফুদ্দিনের।’

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি