ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে হবে টাইগারদের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৩, ২ আগস্ট ২০২১

বড় বড় চারটি নাম, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড, অ্যাডাম জ্যাম্পা, অ্যাশটন অ্যাগার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ জিততে পারবে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে এখানেই। এই চার বোলারকে কতটা সামলাতে পারবে টাইগার ব্যাটসম্যানরা, তার ওপরেই নির্ভর করছে সবকিছু।

চার বছর পর বাংলাদেশে আসা অস্ট্রেলিয়ার এই দলটা কিছুটা খর্বশক্তির। তবে সেটা মূলত ব্যাটিংয়ে। ওয়ার্নার-ফিঞ্চ-স্মিথ-ম্যাক্সি-স্টয়নিস না থাকাতেই। বোলিংয়ে কেবল প্যাট কামিন্স ছাড়া মূল সবাই আছেন। যথারীতি নতুন ও পুরনো দুই ধরণের বলেই সমান কার্যকর স্টার্কই হবেন মূল হুমকি। তাঁকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এখানে আসার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যদিও টি-টোয়েন্টি সিরিজে একটি ম্যাচ ছাড়া অন্য ম্যাচগুলোতে ভালো করেননি। তবে ওয়ানডে সিরিজে ফিরেই আগুনে বোলিং করেছেন। ৩ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হয়েই বাংলাদেশে এসেছেন বাঁহাতি এই পেসার।

হ্যাজলউড সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কখনোই সেভাবে থিতু হতে পারেননি। কিংবা অস্ট্রেলিয়া তার থিতু হওয়ার প্রয়োজন দেখেনি, টানা খেলায়নি। মূলত টেস্টের জন্য তাকে জমিয়ে রেখেছে। তবে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, খারাপ করেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো শুরুর পর সাফল্য না পেলেও ওয়ানডেতে তিনিও ছিলেন দুর্দান্ত।

এমনিতে মিরপুরের উইকেটে তার সুবিধা করতে পারার কথা নয়। কেননা, এই উইকেটে গতি নেই, মুভমেন্ট নেই, বাউন্স নেই। তবে জশের যে স্কিলেরও কমতি নেই! সুইং করানোর ক্ষমতা তার সহজাত। উচ্চতার কারণে বাউন্স তিনি সব উইকেটেই কিছুটা আদায় করতে পারেন। বিশেষ করে, উইকেটে বল যদি গ্রিপ করে, স্টপ করে, হ্যাজলউডের বাড়তি বাউন্স বিপদের কারণ হতে পারে। ডানহাতি এই পেসার হুমকি হবেন মূলত নতুন বলে।

আমাদের এমনিতেই লিটন-তামিম-মুশফিক নেই। নতুন বলে স্টার্ক ও হ্যাজলউড তিন-চারটি উইকেট তুলে নিলে বড় বিপদ হয়ে যাবে।

এছাড়াও পেস আক্রমণে আরও আছেন রাইলি মেরেডিথ। গতি অনেক, কিন্তু লাইন-লেংথ কিছুটা এলোমেলো। জেসন বেহরেনডর্ফ আছেন, উইকেটে সুইং-মুভমেন্ট না থাকলে বড় হুমকি হওয়ার কথা নয়। অ্যান্ড্রু টাই আছেন, স্লোয়ার-ইয়র্কার মিলিয়ে স্লগ ওভারে অনেক সময়ই দারুণ কার্যকর, তবে ধরাবাহিক না।

এছাড়াও আছেন একজন মিশেল মার্শ। মিরপুরের উইকেটে মোইজেস হেনরিকস ও ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানের কাটারও তারা কাজে লাগাত চাইতে পারে। এই মেরেডিথ-বেনরেনডর্থ-টাই-মার্শরা, ধারহীন নন অবশ্যই। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এইটুকু তো সামলাতে হবেই! যদিও স্টার্ক-হ্যাজলউডই গড়ে দিতে পারেন মূল পার্থক্য।

স্পিনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অবশ্যই জ্যাম্পা। সীমিত ওভারের সত্যিকারের ক্লাস বোলার এখন। রান আটকানো, উইকেট শিকার, সবই করেন। তাঁর গুগলিও দুর্দান্ত। ক্রিজের চতুর ব্যবহার করে অ্যাঙ্গেল বদলান ক্রমাগত। সঙ্গে অ্যাশটন অ্যাগার এখন অনেক পরিণত। একসময় খুব সাদামাটা স্পিনার ছিলেন। এখন স্কিল যেমন বেড়েছে, খুব বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংও করেন। টি-টোয়েন্টিতে তার ৬ উইকেট আছে, ৫ উইকেট আছে, আছে হ্যাটট্রিকও।

এই দুজনের জুটিটাও দারুণ, পরস্পরকে কমিপ্লিমেন্ট করেন। এছাড়াও স্পিনে অ্যাশটন টার্নার হাত ঘোরাবেন নিশ্চিত। স্কোয়াডে বিকল্প আছেন লেগ স্পিনার মিচেল সোয়েপসন। রিজার্ভ আছেন আরেক লেগ স্পিনার তানভির সাংঘা।

ব্যাটিংয়ে সেই অর্থে বড় নাম কিংবা প্রতিষ্ঠিত ম্যাচ উইনার নেই একজনও। তার মানে এই নয় যে, ব্যাটিং তাদের একদম যাচ্ছেতাই। জশ ফিলিপে, অ্যাশটন টার্নার, বেন ম্যাকডারমট নিজেদের দিনে বেশ বিপজ্জনক। তবে বাস্তবতা হলো, এই কন্ডিশনে ও মন্থর উইকেটে তারা অনভিজ্ঞ এবং তাদের আটকে রাখা কঠিন হওয়ার কথা নয়। ব্যাটিংয়ের মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে মিচেল মার্শ, ম্যাথু ওয়েড, মোইজেস হেনরিকস ও অ্যালেক্স ক্যারেকেই।

তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি-টোয়েন্টি সিরিজে কেবল মার্শ ছাড়া তারা কেউ ভালো করেননি। শেষ ওয়ানডেতে ওয়েড ফিফটি করেছেন বটে। তবে টি-টোয়েন্টিতে তারা কেউই চেনা ছন্দে নেই। মিরপুরের উইকেটে ছন্দে ফেরাটা সহজ হওয়ার কথাও নয়।

মার্শ অবশ্য তিন নম্বরে নতুন ভূমিকায় দারুণ ফর্মে আছেন। পরের দিকে ক্রিস্টিয়ান ঝড় তুলতে পারেন। তারপরও এই ব্যাটিং লাইন আপ বড় দুর্ভাবনা হওয়া উচিত নয়।

অস্ট্রেলিয়ার বোলিং কতটা সামলাতে পারবে বাংলাদেশ, সেটার ওপরই হয়তো নির্ভর করবে সিরিজের ভাগ্য। যেহেতু ৭ দিনে ৫ ম্যাচ, স্টার্ক-হ্যাজলউড সব ম্যাচে খেলবেনও না। এই সুযোগটাও কাজে লাগাতে হবে। সবমিলিয়ে এটাই বড় সুযোগ। নিজ আঙিনায় এমন অস্ট্রেলিয়াকে সবসময় পাওয়া যাবে না। সুযোগটি তাই লুফে নিতে হবে টাইগারদের।

সেইসঙ্গে, ৭ দিনের মধ্যেই টানা ৫টি ম্যাচ খেলতে হবে। যদিও টি-টোয়েন্টি, তারপরও ফিটনেসের বড় পরীক্ষা হবে। শারীরিক-মানসিক, সব দিক থেকেও। এই পরীক্ষায় পাশ করাটাও জরুরী।

যদিও, জিম্বাবুয়ে সফরে সব ফর্মেট জিতে আসা আমাদের ব্যাটসম্যানরাও আছেন দারুণ ফর্মে। সৌম্য, নাঈম, সাকিব, রিয়াদ, সোহান ও শামীমরা নিজেদের খেলাটা ঠিকমতো খেলতে পারলে অস্ট্রেলিয়া কোন ছার!

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি