অবিস্মরণীয় জয়ে এগিয়ে গেল উইন্ডিজ
প্রকাশিত : ১০:১৪, ১৭ আগস্ট ২০২১
রোচের সঙ্গে জয়ের উল্লাসে মাতেন ম্যাচ সেরা সিলস
জ্যামাইকা টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ উইকেট জুটিতে কেমার রোচ ও জেইডেন সিলসের ১৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে পাকিস্তানকে ১ উইকেটে হারিয়েছে উইন্ডিজ। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার টেস্টে পাকিস্তানকে ১ উইকেটে হারালো ক্যারিবীয়রা। প্রথমটি ছিলো ২০০০ সালে, সেন্ট জোন্স-এ।
সাবিনা পার্কে সোমবার (১৬ আগস্ট) ১৬৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৫১ রানের মধ্যে ৯ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ অবস্থায় ম্যাচ জয়ের চিন্তাও হয়তো করেনি ক্যারিবীয়রা। আর ১টি উইকেট শিকারের অপেক্ষা, যেন তর সইছিলো না পাকিস্তানের। কিন্তু পাকিস্তানি বোলারদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ান শেষ দুই ব্যাটসম্যান কেমার রোচ ও জেইডেন সিলস। জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়লেন তারা।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরে এটি ছিলো পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ম্যাচ। যে ম্যাচ জয়ে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট পেল উইন্ডিজ। আর শুন্য হাতে মাঠ ছাড়লো পাকিস্তান।
এর আগে রোববার তৃতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ১৬০ রান করেছিলো পাকিস্তান। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে লিড ছিলো ১২৪ রানের। অধিনায়ক বাবর আজম ৫৪ ও ফাহিম আশরাফ ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
সোমবার চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমে বাবর মাত্র ১ রান যোগ করে ও ফাহিম ৮ রান যোগ করে ফেরেন। শেষদিকে হাসান আলীর ২৮ রানে ভর করে ২শ পেরোয় পাকিস্তানের স্কোর। এতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬৮ রানের টার্গেট দিতে সক্ষম হয় পাকিস্তান।
এই ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে একাই ৫ উইকেট নেন জেইডেন সিলস। সেইসঙ্গে ৭১ বছরের পুরনো একটি রেকর্ডও ভাঙ্গলেন সিলস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। ১৯ বছর ৩৩৬ দিন বয়সে এমন কীর্তি গড়লেন ক্যারিবীয় পেসার।
আগের রেকর্ডটি ছিলো স্পিনার অ্যালফ ভ্যালেন্টাইনের। ১৯৫০ সালে ২০ বছর ৪১ দিনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের এক ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ভ্যালেন্টাইন। এছাড়া ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
যাইহোক, পাকিস্তানের দেয়া ১৬৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৬ রানের মধ্যে উপরের সারির তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় স্বাগতিকরা। তিনটি উইকেটই নেন পাক পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি।
এরপর ৬৮ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামলে নেন ক্যারিবীয় দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান রোস্টন চেজ ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড। চেজ ২২ রানে আউট হলেও, টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৫তম হাফ-সেঞ্চুরি পূরণ করে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন জার্মেই ব্লাকউড।
পরের দিকে কাইল মায়ার্স ০, জেসন হোল্ডার ১৬, উইকেটরক্ষক জসুয়া ডা সিলভা ১৩ ও জোমেল ওয়ারিকান ৬ রান করে ফিরলে জয় নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারণ শেষ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিলো আরও ১৭ রান। আর ৯ উইকেট শিকার করা পাকিস্তানের দরকার ছিল আর মাত্র একটি উইকেট।
তবে দায়িত্ব নিয়ে দলের প্রয়োজন মিটিয়েছেন রোচ ও সিলস। ৫২ বলে ২টি চারে অপরাজিত ৩০ রান করেন রোচ। আর ১৩ বলে ২ রান করে অপরাজিত থাকেন সিলস।
জয় বঞ্চিত সফরকারীদের পক্ষে আফ্রিদি ৫০ রানে ৪টি উইকেট নেন। এছাড়া হাসান আলী ৩টি ও ফাহিম আশরাফ নেন ২টি উইকেট। তবে মোট ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তরুণ জেইডেন সিলস-ই।
আগামী ২০ আগস্ট কিংস্টনে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি। এর আগে চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে পাকিস্তান।
এনএস//