আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের আরাফাত
প্রকাশিত : ১১:৩৮, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
মুহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত। রোমাঞ্চপ্রিয় এক তরুণ। ২০১৭ সালে ২০ দিনে পাড়ি দিয়েছিলেন এক হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ। দৌড়ে গিয়েছিলেন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়ে যাওয়ার কৃতিত্ব গড়ার পর রোমাঞ্চ তাকে পেয়ে বসে। এরপর থেকে দেশ-বিদেশে নানা অভিযানে অংশ নিয়েছেন তিনি। চলতি বছরই সপ্তমবারের মতো পাড়ি দিয়েছেন বাংলা চ্যানেল। রোমাঞ্চপ্রিয় আরাফাত এবার পথ ধরেছেন মার্কিন মুলুকের। সেখানে ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় আয়রনম্যান ৭০.৩ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেবেন তিনি।
এখানে রয়েছে সাঁতার, সাইক্লিং ও দৌড়—প্রতিযোগিতার মত তিনটি ধাপ। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট জর্জ ইউটা শহরের আয়রনম্যান ৭০.৩ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রত্যেক প্রতিযোগীকে প্রথমে প্রায় দুই কিলোমিটার সাঁতরাতে হবে, তারপরই ৯০ কিলোমিটার সাইকেলে যেতে হবে এবং শেষ হবে প্রায় ২১ কিলোমিটার হাফ ম্যারাথনের মধ্য দিয়ে। প্রতিযোগীদের এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে সাড়ে ৮ ঘণ্টার মধ্যে।
এ বিষয়ে প্রস্তুতি সম্পর্কে আরাফাত বলেন, ‘আয়রনম্যান ৭০.৩ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিযোগী নির্বাচিত করা হয় বছরব্যাপী আয়োজিত বিভিন্ন আয়রনম্যান ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী অ্যাথলেটদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। সেই হিসেবে আমিও সুযোগ পেয়ে যাই। প্রস্তুতিতে ঘাটতি রাখিনি। আয়রনম্যান অভিযানের লক্ষ্যে আমি দীর্ঘদিন কঠিন অনুশীলন করে চলেছি। আমার লক্ষ্য, সাড়ে ৫ ঘণ্টার মধ্যে এই কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা।’
আরাফাত প্রথম ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ায় আয়রনম্যান আয়োজনে অংশ নেন। এরপর ২০১৯ সালে আয়রনম্যান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন। একই বছর আয়রনম্যান মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আয়রনম্যান ৭০.৩ বাংসায়েনে অংশ নিয়েছেন।
পেশায় ব্যাংকার মুহাম্মদ সামসুজ্জামান আরাফাত বলেন, ‘আমি সুস্থ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। সে স্বপ্ন পূরণে কাজ করতে চাই। রোমাঞ্চকর নানা আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে চাই।’
আরাফাতের আয়রনম্যান ৭০.৩ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে সহযোগিতা করছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, আকাশ ডিটিএইচ, ডিএইচএস মটরস এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড।
উল্লেখ্য, আয়রনম্যান প্রতিযোগিতা নামক একটি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা গত কয়েক বছর যাবত চালু হয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্যে লাগে বিশেষ শারীরিক মানসিক যোগ্যতা। এ জন্য বিশেষ শর্তও পূরণ করতে হয়। এ প্রতিযোগীদের একনাগাড়ে প্রথমে সমুদ্রে প্রায় ২.৪ মাইল সাতার শেষে ১১২ মাইল সাইক্লিং শেষ করেই ২৬ মাইলের ম্যারাথন দৌড় শেষ করতে হয় ১৬ বা ১৭ ঘন্টার মধ্যে। যা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশে বসবাসরত প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এটি সাফল্যের সাথে শেষ করেন মোহম্মাদ শামসুজ্জামান আরাফাত। যদিও বাংলাদেশী আরেকজন আয়রনম্যান আছেন। যার নাম সুমিত পাল। তিনি একজন প্রবাসী।
মুহাম্মদ সামসুজ্জামান আরাফাত হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক। আরাফাত পিকেএসএফের তৃণমূল পর্যায়ের ক্রীড়া কর্মসূচীর ২০১৭ সালের ক্রীড়াদূতের সম্মানে ভূষিত হন। এর পর আরাফাত ৭ বার বাংলা চ্যানেল সাতার কেটে পাড়ি দিয়েছেন। তার ইচ্ছা ভবিষ্যতে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়া।
এসএ/