বিশ্বকাপে যত মাইলফলকের সামনে সাকিব
প্রকাশিত : ১৭:২০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
সাকিব আল হাসান
কিছুদিন আগেই অনন্য এক রেকর্ডের মালিক হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে ৭ উইকেট নিয়ে ক্রিকেটের এই শর্টার ভার্সনে একশ উইকেট ও ১৫শ রানের মাইলস্টোন স্পর্শ করেন সাকিব। এবার এক বা দুই না, তিন তিনটি মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন টাইগার সেরা এই তারকা।
আসন্ন বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আহামরি না হলেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে গত দুটি সিরিজেই দারুণ পারফর্ম করেছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে সমান অবদান রেখে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে হয়েছেন সেরা খেলোয়াড়। অজিদের ৪-১ ব্যবধানে হারানো টাইগাররা ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে তাঁদেরই প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডকে।
কিউইদের বিপক্ষে সিরিজে ব্যাটে-বলে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও (৪৫ রান ও ৪ উইকেট) আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাত্র ২টি উইকেট নিলেই তিন তিনটি ব্যক্তিগত ও বৈশ্বিক মাইলফলক স্পর্শ করবেন বিশ্বসেরা এই তারকা। যেমন-
আর মাত্র ২টি উইকেট পেলেই তিন ফরম্যাট মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬০০ উইকেট পূর্ণ হবে সাকিবের। বর্তমানে তার শিকার ৫৯৮ উইকেট।
২টি উইকেট পেলেই টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মালিঙ্গাকে টপকে এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক হবেন সাকিব। বর্তমানে তাঁর উইকেট সংখ্যা ১০৬, মালিঙ্গার ১০৭।
আর মাত্র ২টি উইকেট শিকার করলেই ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাট মিলে ১২ হাজার রান ও ৬০০ উইকেট পূর্ণ হবে সাকিবের।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ৫৮টি টেস্ট, ২১৫টি ওয়ানডে ও ৮৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা সাকিবের রান যথাক্রমে ৩ হাজার ৯৩৩, ৬ হাজার ৬০০ ও ১ হাজার ৭৬৩ এবং উইকেট সংখ্যা যথাক্রমে ২১৫, ২৭৭ ও ১০২টি।
অন্যদিকে, যে কোনও ক্রিকেটেরই সবচেয়ে বড় মঞ্চ হলো বিশ্বকাপের আসর। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেরা রান সংগ্রাহকদের মাঝে সাকিবের অবস্থান (৫৬৭ রান নিয়ে) এখন ১২তম। আর মাত্র ১০০টি রান করতে পারলেই সেরা সাত-এ উঠে আসবেন সাকিব!
বর্তমানে খেলে যাচ্ছেন সাকিবের সামনে এরকম ক্রিকেটার আছেন কেবল বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মা। আসন্ন বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ৩ ম্যাচ, সঙ্গে চূড়ান্ত পর্বের ৫ ম্যাচের সবকটা খেলতে পারলে ২৫০ রান না হওয়ার কোনো কারণ নেই! এর পরের বিশ্বকাপও খেলতে পারলে ১ হাজার রান করাও অসম্ভব নয়! তখন সাকিব থাকবেন সেরা ৫-এ! এটা কি অবিশ্বাসযোগ্য? তিন ফিফটি করা সাকিবের পরিসংখ্যান কিন্তু সেটাই বলে!
তাছাড়া বোলার সাকিব তো ব্যাটার সাকিবের চেয়ে অলটাইম বেস্ট। কিন্তু বিশ্বের বাঘা বাঘা সব বোলারের মাঝে আপনি কি সাকিবকে সেরা ১০-এ রাখবেন! সেরা ১০ স্পিনারের তালিকায় হয়তো রাখবেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে ২৫ ম্যাচে ৩০টি উইকেট নিয়ে সাকিব আছেন সেরা ৭-এ। সর্বোচ্চ শিকারীর থেকে মাত্র ৯ উইকেট দূরে। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী শহীদ আফ্রিদি ৩৯ উইকেট নিতে খেলেছেন সাকিবের চেয়ে ৯ ম্যাচ বেশি। আসন্ন বিশ্বকাপের ৮ ম্যাচেই সাকিব সবাইকে ছাড়িয়ে যাবেন, তা বলাই যায়।
টি-টোয়েন্টিতে যার ক্যারিয়ার গড় ২৩ (২২.৮৯), বিশ্বকাপে তা প্রায় ২৯ (২৮.৩৫)। ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট যেখানে ১২২, সেখানে বিশ্বকাপে ১২৯ প্রায় (১২৮.৮৬)। ক্যারিয়ার বোলিং গড় যেখানে ২০.৬৮, বিশ্বকাপে বোলিং গড় সেখানে ১৯.৫৩। তবে ক্যারিয়ার সেরা বেস্ট বোলিং ফিগার ৫/২০ হলেও বিশ্বকাপে তা ৪/১৫ এবং ক্যারিয়ার ইকোনমি রেট ৬.৭৩, বিশ্বকাপে তা ৬.৬৫।
এটাই হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রাণ, সাকিব আল হাসান। নামে ততটা বড় না হলেও পারফরম্যান্সে নামের থেকেও বড়। বিশ্বমঞ্চে দেশের প্রয়োজনে স্বাভাবিকের চেয়ে আরো শানিত।
এনএস//