বিশ্বমঞ্চে অনন্য সাকিবকে নিয়ে যা বললেন শিশির
প্রকাশিত : ১৬:১৬, ২০ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ১৬:২৯, ২১ অক্টোবর ২০২১
স্বামীর সঙ্গে সাকিবপত্নী উম্মে আহমদ শিশির
চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারার পর সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন অনেকেই। যদিও ওইদিন বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার। তবে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) ওমানের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাট ও বল হাতে দুর্দান্ত নৈপুণ্যে বাংলাদেশকে দারুণ এক জয় এনে দেয়ার পর রীতিমত প্রশংসায় ভাসলেন সাকিব।
আর এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচকদের উদ্দেশ্যে কড়া জবাব দিয়েছেন সাকিবপত্নী উম্মে আহমেদ শিশির।
বোলিংটা সাকিবের ভালোই চলছিল, তবে ব্যাট হাতে গেল কয়েক ম্যাচে যেন ছিলেন নিজের ছায়া হয়েই। বিশ্বকাপে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে সাকিব খেললেন নিজের মতোই। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৬টি চারের সাহায্যে ২৯ বলে ৪২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে ৮০ রানের অনবদ্য জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ১৫৩ রানের লড়িয়ে পুঁজিও এনে দেন সাকিব।
ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও এদিন সমান উজ্জ্বল ছিলেন সাকিব। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২৮ রান খরচায় তুলে নেন তিনটি উইকেট। ব্যাট ও বল হাতে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের সুবাদে এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের ম্যাচে ম্যাচসেরার খেতাবও ওঠে সাকিবের হাতে। সব মিলিয়ে আইসিসি ইভেন্টে বাংলাদেশের সর্বশেষ পাঁচটি জয়ের সবগুলোতেই ম্যাচসেরার পুরস্কার পেলেন এই অলরাউন্ডার।
নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে সাকিবের এমন পরিসংখ্যান শেয়ার করে শিশির বলেন, ‘এগুলো কেবলই তোমার মাইলফলক না! এগুলো তোমার ডেডিকেশন ও দৃঢ় মানসিকতার ফল। তুমি কখনও ভয় কিংবা অন্য কোনো পরিস্থিতিতে পিছিয়ে যাওনি৷’
আসলেই দেশের জন্য এখন পর্যন্ত অনেক গৌরবের মুহূর্ত এনে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ক্রিকেটের বাইশ গজে তিনি অনেক অসাধ্য সাধন করেছেন। সেইসঙ্গে মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা কাণ্ডে সমালোচিতও হয়েছেন বহুবার। বারবার সমালোচিত হলেও সাকিবের কাছে দেশের স্বার্থই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমনটাই তুলে ধরেছেন শিশির।
সাকিবপত্নী বলেন, “কাজগুলো কতটা কঠিন ছিলো, সেটা কোনও ব্যাপার না। যদিও সবচেয়ে সমালোচিত মানুষটি তুমিই। তোমার কাছে দেশ সবসময়ই প্রাধান্য পেয়েছে। তুমি তীরের মতোই সোজা।”
এদিকে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মালিঙ্গাকে (১০৭) ছাড়িয়ে সেরা বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সাকিব আল হাসান এখন পর্যন্ত ৯০টি ম্যাচ খেলে ১৮ গড়ে নিয়েছেন ১১১টি উইকেট। আর ব্যাট হাতে ২৩.১০ গড়ে ও ১২১ স্ট্রাইকরেটে ১৮২৫ রান করা সাকিব আর মাত্র ৩৮টি রান করতে পারলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেরা রান সংগ্রাহকদের মাঝে সেরা সাত-এ উঠে বসবেন।
বর্তমানে বিশ্বমঞ্চে ২৮ ম্যাচ খেলা সাকিবের রান সংখ্যা ৬৪০। ৬৬১ রান নিয়ে সাতে অবস্থান করছেন লঙ্কান গ্রেট কুমার সাঙ্গাকারা। ৩১ ম্যাচ খেলে ওই রান করেন তিনি। সমান সংখ্যক ম্যাচে ১০১৬ রান করে সবার উপরে আছেন আরেক লঙ্কান গ্রেট মাহেলা জয়াবর্ধনে।
চলতি বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ খেলতে পারলে তাঁকেও ছাড়িয়ে যেতে পারেন সাকিব আল হাসান। সেইসঙ্গে হতে পারেন সেরা উইকেট শিকারী বোলারও। এজন্য তাঁর দরকার মার পাত্র পাঁচটি উইকেট। কারণ, সর্বোচ্চ ৩৯টি উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি।
এটাই হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রাণ, সাকিব আল হাসান। নামে ততটা বড় না হলেও পারফরম্যান্সে নামের থেকেও বড়। বিশ্বমঞ্চে দেশের প্রয়োজনে স্বাভাবিকের চেয়ে আরো শানিত।
এনএস//