জয়ের পরই তুমুল ক্ষোভ ঝাড়লেন মাহমুদউল্লাহ
প্রকাশিত : ২২:০৭, ২১ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ২৩:২০, ২১ অক্টোবর ২০২১
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
স্কটিশদের কাছে হেরে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করা টাইগাররা পড়েছিল সুপার টুয়েলভের আগেই বাদ পড়ার শঙ্কায়। ওই ম্যাচের পর দলের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি কাঠগড়ায় দাঁড় করা হয় সিনিয়র ক্রিকেটারদের। তবে ওমানকে হারানোর পর চলতি বিশ্বকাপে বৃহস্পতিবার পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়ের সঙ্গে নিশ্চিত হয়েছে সুপার টুয়েলভও।
এমন জয়ের পরই সেই সমালোচনার ক্ষোভ ঝাড়লেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। স্পষ্টত জানালেন, এমন ঢালাও সমালোচনা দল ভালোভাবে নেয়নি।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, ‘আজকে ভালো খেলেছি দেখে মনে হচ্ছে, ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। সবার কাছে এরকম মনে হবে আজকে। যদি এক ম্যাচে খারাপ হয় খুব বেশি করে সমালোচনা শুরু হয়ে যাবে। আমরা চেষ্টা করছি দল হিসেবে যেন ভালো পারফর্ম করতে পারি। সবার কমিটমেন্ট আজ শতভাগেরও বেশি ছিল, এটা সবসময়ই থাকে। ভালো কিছু করার জন্য দলের সবাই উদগ্রীব ছিল।’
সেদিন স্কটল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলের তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স ও সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই। অনেক সংবাদমাধ্যমে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সমালোচনা হয়েছিল। এর কড়া জবাব দিয়েছেন অধিনায়ক।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথম জয় পায় ওমানের বিপক্ষে। সেই ম্যাচের পর সাকিব আল হাসান জানিয়েছিলেন, সিনিয়ররাই টি-টোয়েন্টিতে বেশি ভালো করছেন। মুশফিকুর রহিম ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে না পারলেও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে দারুণ ছন্দে ছিলেন সাকিব ও রিয়াদ। সাকিবের ‘প্রতিবাদী’ সুর পাওয়া গেল রিয়াদের কথাতেও।
তিনি জানান, গণমাধ্যম, ক্রিকেট বোর্ড থেকে শুরু করে সব জায়গার সমালোচনা স্পর্শ করে দলকেও। তিনি বলেন, ‘স্পর্শ সবই করে। আমরা মানুষ, আমাদেরও অনুভূতি কাজ করে। আমাদের সবার পরিবার আছে, আমাদের বাবা-মায়েরা, বাচ্চারা টিভির সামনে বসে থাকেন। তারাও মন খারাপ করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও এখন হাতের নাগালে।’
যদিও সমালোচনায় রিয়াদের কোনো আপত্তি নেই। তার মতে, খারাপ খেললে সমালোচনা করা দোষের কিছু নয়। তবে মাত্রাতিরিক্ত সমালোচনা বা কাউকে খুব ছোট করে দেখার মানসিকতায়ই মূলত ক্ষেপেছেন ক্রিকেটাররা।
রিয়াদ বলেন, ‘সমালোচনা তো হবেই। খারাপ খেলেছি, অবশ্যই সমালোচনা হবে। কেন হবে না? কিন্তু সমালোচনার মাধ্যমে কেউ কাউকে খুব ছোট করে ফেললে খুব খারাপ লাগে। অনেক প্রশ্ন এসেছে। সিনিয়র ক্রিকেটারদের স্ট্রাইক রেট নিয়ে কথা উঠেছে। আমরা তো চেষ্টা করেছি। চেষ্টার বাইরে তো আমাদের কাছে কিছু নেই। এরকম না যে, আমরা চেষ্টা করিনি। আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। হয়ত ফলাফল পক্ষে আনতে পারিনি। সমালোচনা কাম্য। কিন্তু আরেকটু স্বাস্থ্যকর সমালোচনা হলে ভালো।’
সেইসঙ্গে সিনিয়রদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন না তোলার আহ্বান জানিয়ে রিয়াদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দিলে আমাদেরও গর্ব হয়। সবারই ত্যাগ থাকে। কারও ব্যথা থাকে, কারও অনেক ধরনের ইঞ্জুরি থাকে। ওগুলো নিয়েই আমরা খেলি। দিনের পর দিন পেইন কিলার খেয়েই আমরা খেলি। হয়ত অনেকেই এগুলো জানে না। এজন্য কমিটমেন্ট নিয়ে কখনও প্রশ্ন করা ঠিক না।’
টাইগার এই অধিনায়ক আরও বলেন, ‘এটা আমাদের দেশ, আমরা সবাই একসাথে। আমি সবসময় বলি, যখন খেলি পুরো দেশ একসাথে খেলি এবং আমাদের চেয়ে বেশি অনুভূতি কারও নেই। সমালোচনা অবশ্যই হবে, খারাপ খেলেছি। কিন্তু একেবারে ছোট করে ফেলা ঠিক না। এটা আমাদের সবারই খারাপ লেগেছে।’
এদিকে, গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে এদিন রিয়াদের কাছে সরাসরিই জানতে চাওয়া হল- সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিরা একটু শক্ত অবস্থান নিচ্ছেন কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে রিয়াদের সোজাসাপ্টা জবাব, ‘শক্ত হওয়াটাই মনে হয় স্বাভাবিক। বিগত কয়েকদিনে… আমরা মানুষ আমরাও ভুল করি। এ কারণে একেবারে ছোট করে ফেলা ঠিক না।’
এনএস//