জয়ে বন্ধ্যাত্ব ঘোঁচানোর মিশন শুরু করতে চায় উভয়েই
প্রকাশিত : ২২:২৭, ২২ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ২২:৫৭, ২২ অক্টোবর ২০২১
অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ‘সুপার টুয়েলভ’ লড়াই শুরু শনিবার
- ‘ভারতকে হারালেই সেমিফাইনাল খেলবে পাকিস্তান’
- বিশ্বকাপের সেরা চমক, আইরিশদের উড়িয়ে সুপার টুয়েলভে নামিবিয়া
- আইরিশদের টপকে সুপার টুয়েলভে নামিবিয়া!
- ৯০ বছর বয়সী ভক্তকে কাঁদিয়ে ছাড়লেন নাদাল
- লিটনকে আরো সুযোগ দেয়ার পক্ষে অধিনায়ক
- সুপার টুয়েলভের ‘চ্যালেঞ্জ’ নিতে মুখিয়ে বাংলাদেশ
- বিশ্বকাপের মূল পর্বে যাদের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ
শেষ হলো চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাথমিক পর্ব। রোববার (২২ অক্টোবর) শুরু হচ্ছে সপ্তম আসরের সুপার টুয়েলভের লড়াই। এদিন গ্রুপ ১-এ অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দিয়েই শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্টের মূল পর্ব। জয় দিয়ে সুপার টুয়েলভ পর্ব শুরু করতে চায় দু’দলই। উভয় দলেরই চাওয়া, বিশ্বকাপ জিততে না পারার বন্ধ্যাত্ব ঘোঁচানো।
আবু ধাবিতে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হবে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার হাইভোল্টেজ ম্যাচটি।
যদিও আত্মবিশ্বাসে কিছুটা ঘাটতি নিয়েই এবারের বিশ্বকাপ মিশনে নামছে পাঁচবারের ওয়ানডে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে দলটি। এরপর টানা পাঁচটি সিরিজেই হেরেছে অজিরা। যার সর্বশেষটি গেল আগস্টে বাংলাদেশের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে হারে অস্ট্রেলিয়া।
কেবল দলীয় পারফরম্যান্সই নয়, দলটির খেলোয়াড়ের ফর্মহীনতাও চিন্তায় রেখেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে। অফ-ফর্মে অজিদের টপ-অর্ডার। বিশেষকরে রান খরায় ভুগছেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার। অফ-ফর্মের কারণে আইপিএলের সংযুক্ত আরব আমিরাত পর্বে মাত্র দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পান তিনি। ঐ দুই ম্যাচে ওয়ার্নার করেন ০ ও ২। এমনকি আইসিসির দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ ওয়ার্নার। নিউজিল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে যথাক্রমে ০ ও ১ রান করেন বাঁহাতি এই মারকুটে।
তবে প্রস্তুতিমূলক দুই ম্যাচেই রান করেছেন দলের আরেক সেরা ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথ। ৩৫ ও ৫৭ রান করেন তিনি। তবে তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়েই দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন-আপে সেরা ফর্মে আছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ১৪ ইনিংসে ৪২.৭৫ গড়ে এবং ১৪৪.১০ স্ট্রাইক রেটে ৫১৩ রান করেছেন ম্যাক্সি। প্রস্তুতি ম্যাচে একমাত্র ভারতের বিপক্ষে ব্যাট হাতে নেমে ২৮ বলে ৩৭ রান করেন ম্যাক্সওয়েল।
এছাড়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ, মিচেল মার্শ, মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েডের ব্যাটের দিকে চেয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের আগে অফিসিয়াল দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হারলেও, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেটে জয় পায় অজিরা।
বোলিং লাইন-আপে অস্ট্রেলিয়ার শক্তি মিচেল স্টার্ক, কেন রিচার্ডসন, প্যাট কামিন্স ও এডাম জাম্পা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে রিচার্ডসন ৩টি ও জাম্পা ২টি উইকেট নেন। উইকেট পেয়েছিলেন আরেক স্পিনার অ্যাস্টন আগারও। তবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে পুরোপুরিই ব্যর্থ ছিলো অস্ট্রেলিয়ার বোলিং ইউনিট। ভারতের পতন হওয়া একমাত্র উইকেটটি নেন আগারই।
অন্যদিকে, সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বেশ এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দল। সর্বশেষ তিন সিরিজের সবগুলোতেই জিতেছে প্রোটিয়ারা। এ বছরের শুরুতে পাকিস্তানের কাছে দু’বার হারলেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে টেম্বা বাভুমার দল।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দুই প্রস্তুতি ম্যাচেও দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪১ রানে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় পায় প্রোটিয়ারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮৭ রানের টার্গেট অনায়াসে স্পর্শ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫১ বলে অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস খেলেন রাসি ফন ডার ডুসেন।
দুই ম্যাচে রান পেয়েছেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও। ৩১ ও ৪৬ রান করেন তিনি। দলের ব্যাটিং লাইন-আপের প্রধান ব্যাটার এইডেন মার্করাম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৫ বলে ৪৮ রান করেন তিনি। যদিও পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে নামেননি মার্ক।
তবে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও রেজা হেনড্রিক্স। ডি কক দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৭ ও ৬ রান করেন। আর শুধুমাত্র পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা হেনড্রিক্সের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৭ রান।
বোলিং বিভাগে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান ভরসার নাম পেসার কাগিসো রাবাদা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে বোলিংয়ে আছেন লুঙ্গি এনগিডি, এনরিক নরকিয়া, কেশব মহারাজ ও তাবরাইজ শামসি। টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে বোলারদের তালিকায় শীর্ষে বাঁহাতি এই স্পিনার।
এদিকে, ওয়ানডে বিশ্বকাপে একক রাজত্ব করলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত মাত্র একবার ফাইনাল খেলতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১০ সালের সেই ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে রানার্স-আপ হয় অজিরা। অন্যদিকে এখনও বিশ্বকাপের ফাইনালই খেলতে পারেনি চোকার খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে ২০০৯ ও ২০১৪ সালে সেমিফাইনাল খেলার রেকর্ড আছে প্রোটিয়াদের।
টি-টোয়েন্টিতে এ পর্যন্ত ২১ বার মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। যারমধ্যে অজিদের জয় ১৩টি ও প্রোটিয়াদের জয় ৮টি। ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সর্বশেষ তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে ২-১ ব্যবধানে জিতে আসে অস্ট্রেলিয়া। আর বিশ্বমঞ্চে একবারই মুখোমুখি হয় দু’দল। শ্রীলঙ্কায় ২০১২ সালের আসরের সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে হারিয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ (সম্ভাব্য):
অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, ম্যাথু ওয়েড (কীপার), অ্যাস্টন আগার, মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জাম্পা ও জস হ্যাজেলউড।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ (সম্ভাব্য):
কুইন্টন ডি কক, টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), এইডেন মার্করাম, রাসি ফন ডার ডুসেন, ডেভিড মিলার, হেইনরিক ক্লাসেন, উইয়ান মুল্ডার, কাগিসো রাবাদা, তাবরাইজ শামসি, কেশভ মহারাজ ও অ্যানরিক নরকিয়া/লুঙ্গি এনগিদি।
এনএস//