ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

যে পাঁচ কারণে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারল ভারত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৫, ২৫ অক্টোবর ২০২১

২৯ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে হার। লজ্জার ইতিহাসের সাক্ষী থাকল বিরাট কোহলির ভারত। রোহিত শর্মা, কে এল রাহুল, জশপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ শামি। একের পর এক বিশ্বমানের ক্রিকেটার থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানের কাছে কার্যত অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হল বিরাট বাহিনীকে। কিন্তু কেন এই হার? ময়নাতদন্তে উঠে আসছে যে কারণগুলো।

বিরাটের অধিনায়কত্ব
প্রতিপক্ষের সেরা বোলার শাহিন আফ্রিদি প্রথম দুই ওভারেই ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপের কোমর ভেঙে দিয়েছেন। সেখানে পাকিস্তান ইনিংসের শুরুতেই নিজের সেরা অস্ত্র বুমরাহকে কেন ব্যবহার করলেন না বিরাট কোহলি? 

চতুর্থ ওভারে বরুণ চক্রবর্তী যখন কম রান দিয়ে চাপ সৃষ্টি করলেন, তার পরের ওভারে জাদেজা বা বুমরাহকে এনে চাপ আরও বাড়ানোর চেষ্টা কেন করা হল না? 

তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, পাকিস্তান যেখানে তিনজন স্পিনার খেলিয়ে ভারতকে বেঁধে ফেলল, সেখানে ভারতেরও কি তিন স্পিনার খেলানো উচিত ছিল না? এমন নানবিধ প্রশ্নের উত্তর অধিনায়ক কোহলিকে দিতে হবে।

টস এবং শিশির
এই ধরণের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস অবশ্যই জরুরি। টসে হেরে এদিন ভারতকে ব্যাটিং করতে হয়। দুবাইয়ের পিচে প্রথমে ব্যাট করে জেতাটা যে বেশ কঠিন, তা কমবেশি সকলের জানা। টিম ইন্ডিয়ার কোচ রবি শাস্ত্রী টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই আশঙ্কা করেছিলেন বিশ্বকাপে বিরাট ফ্যাক্টর হতে চলেছে শিশির। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তেমনটাই হল। প্রথমে ভারত যখন ব্যাটিং করছিল, বল অনেকটাই থেমে থেমে ব্যাটে আসছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শিশিরের জেরে পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য অনেকটাই সোজা হয়ে যায়। যার সুবিধা পায় পাকিস্তান। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বিরাটও শিশিরকেই অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করলেন।

টপ অর্ডারের ব্যর্থতা
ভারতীয় দলে সেভাবে জেনুইন অল-রাউন্ডার না থাকায় ছ’জন ব্যাটার নিয়ে খেলতে হয় টিম ইন্ডিয়াকে। এক্ষেত্রে টপ অর্ডারের ভাল খেলাটা জরুরি। কিন্তু শাহিন আফ্রিদির আগুনে বোলিংয়ে দলের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যান রোহিত এবং রাহুল দুজনেই ব্যর্থ হলেন। পারলেন না সূর্যকুমার যাদবও। বিরাট রান পেলেও তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। যে সময় তিনি আউট হলেন, সেটাও ভারতকে ধাক্কা দিয়েছে।

অনবদ্য পারফরম্যান্স
ভারত কী ভুল করেছে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার পাকিস্তান কী কী ঠিক করেছে। এই ম্যাচের একেবারে শুরু থেকে ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ভারতকে পরাস্ত করেছে পাকিস্তান। শুরুতেই বলতে হয় শাহিন আফ্রিদির কথা। বিরাট, রোহিত, রাহুল। ভারতের সেরা তিন অস্ত্রকেই পকেটে পুরে নিয়েছেন তিনি। তাঁর বোলিংয়েই কোমর ভাঙে ভারতের ইনিংসের। আর ব্যাট করতে নেমে যেভাবে রিজওয়ান এবং বাবর একাগ্রভাবে নিখুঁত ব্যাটিং উপহার দিলেন, সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। শেষ কবে কোনও পাক ওপেনিং জুটি এত ভাল ব্যাটিং করেছে, বলা মুশকিল।

স্নায়ুযুদ্ধে হার
ভারত-পাক ম্যাচ মানেই স্নায়ুযুদ্ধ। আর এই স্নায়ুযুদ্ধে এবারে জয়ী হলেন বাবর আজমরাই। ম্যাচের একেবারে শুরু থেকেই পাক ক্রিকেটারদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল চনমনে। তুলনায় অনেকটাই ঝিমিয়ে ছিল ভারত। বিরাট কোহলি বা রবীন্দ্র জাদেজা ব্যাটিংয়ের সময় যতটা পাক বোলারদের সমীহ করলেন, সেটা হয়তো আর কোনও দেশের বোলারকে সামনে পেলে করতেন না। আর এই সবটাই স্নায়ুর চাপের খেলা। আগের পাকিস্তান দলগুলি রান চেজ করতে গেলেই স্নায়ুর চাপ সামলাতে না পেরে একের পর এক উইকেট খোয়ানোর বহু উদাহরণ রেখে গিয়েছে। বাবরের পাকিস্তান কিন্তু সেটা করল না। স্নায়ুযুদ্ধের এই জয়ই ম্যাচ জিতিয়ে দিল পাকিস্তানকে।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি