‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে মুখোমুখি ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ০০:০৮, ২৯ অক্টোবর ২০২১
বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে প্রথম দুই ম্যাচে হতাশাজনক হারের পর প্রথম জয়ের লক্ষ্যে শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। একই অবস্থা ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও। সুপার টুয়েলভে প্রথম দুই ম্যাচেই হেরেছে ক্যারিবিয়রা। তাই অনেকটা ডু অর ডাই মাঠে নামবে উভয় দলই।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স।
সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও ইংল্যান্ডের কাছে হারে ৮ উইকেটের ব্যবধানে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারলে সেমিফাইনালে খেলার আশা শেষ হয়ে যাবে টাইগারদের।
একই অবস্থা উইন্ডিজেরও। সুতরাং সেমির আশা টিকিয়ে রাখতে জয় ছাড়া বিকল্প নেই দুই দলেরই। তবে ২০০৭ সালে টি-টোয়ন্টি বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই পাওয়া একমাত্র জয়টি বাংলাদেশকে উদ্বুদ্ধ করবে। যদিও এরপর থেকে ক্রিকেটের তৃতীয় বড় ইভেন্টে বাছাই পর্বের বাইরে কোনো জয় তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টিসহ তিনটি সিরিজ জয়ের পর এবার তারা ভালো কিছু করতে পারবে বলে আশা করা হয়েছিলো। কিন্তু বাছাই পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। যদিও পরের দুটি ম্যাচেই ঘুড়ে দাঁড়ায় টাইগাররা। ওমান ও পাপুয়া নিউ গিনিকে হারিয়ে পরের রাউন্ড নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। কিন্তু সুপার টুয়েলভে এসে আবারো সেই হারের বৃত্তে প্রবেশ করে দল।
দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর ব্যাটিং পরিকল্পনা পুন:মূল্যায়নের উপর জোর দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং উপযোগী উইকেট পেয়েও ৯ উইকেটে ১২৪ রানের বেশি করতে পারেনি টাইগাররা। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ওই টার্গেট সহজেই স্পর্শ করে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘অবশ্যই আমরা ব্যাটিং নিয়ে হতাশ। এটি ভাল উইকেট ছিল, কিন্তু আমরা শুরুটা ভাল করিনি এবং মাঝে কোন পার্টনারশিপও ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শুরুটা ভালো হয়নি। এই উইকেটে পরবর্তীতে খেলা কঠিন হয়ে পড়ে। আমাদের পাওয়ার হিটারের চেয়ে বেশি দক্ষ হিটার আছে। আমরা এটি পরিবর্তন করতে চাই না। কারণ আমাদের বিশ্বাস, আমরা ভাল সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারি। কিন্তু আমাদের পুনঃরায় মূল্যায়ন করতে হবে এবং একটি ভাল পরিকল্পনা নিতে হবে।’
বাংলাদেশের মত ওয়েস্ট ইন্ডিজও নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে হেরেছে। ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ হারে তারা। এতে সেমিফাইনালের আগে বাংলাদেশের মত টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে পোলার্ড-গেইলরাও।
দলের দারুণ সব পাওয়ার হিটার থাকা সত্ত্বেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮ উইকেটে ১৪৩ রানের সংগ্রহ পায় ক্যারিবীয়রা।
বাংলাদেশের ধারাবাহিকতার অভাব থাকলেও, তারকা ভরপুর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে অপ্রস্তুত ও অগোছালো লেগেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যারিবীয়দের হারানোর এটাই ভালো সুযোগ।
পরিসংখ্যান বলছে, এই ফরম্যাটে অন্য যে কোনো শীর্ষ দলের তুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে বাংলাদেশের সাফল্যের হার বেশি। যদিও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২ ম্যাচে টাইগাররা পাঁচটিতে জিতেছে। হেরেছে ছয়টিতে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
তবে সামগ্রিকভাবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরমেন্স আশানুরুপ নয়। এখন পর্যন্ত ১১৭ ম্যাচে ৪৩টি জিতেছে তারা। ৭২ ম্যাচে হার ও দু’টি পরিত্যক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে ২৯টি ম্যাচ খেলেছে এবং মাত্র সাতটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে বাছাই পর্ব থেকেই ছয়টি জয় এসেছে।
বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য):
নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসাইন/শামীম হোসাইন, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), শেখ মাহেদী হাসান, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান ও নাসুম আহমেদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ (সম্ভাব্য):
লেন্ডল সিমন্স, এভিন লুইস, নিকোলাস পুরান (উইকেটরক্ষক), ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ড (অধিনায়ক), আন্দ্রে রাসেল, শিমরন হেটমায়ার, ডোয়াইন ব্রাভো, হেইডেন ওয়ালশ, আকিল হোসেইন, রবি রামপল।
এনএস//