ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ভারত প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫৭, ২ নভেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১৫:৩১, ২ নভেম্বর ২০২১

টি২০ বিশ্বকাপে দুরন্ত ছন্দে রয়েছে পাকিস্তান। অন্যদিকে অপ্রত্যাশিত ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারত। বিশ্বকাপের মাঝপথে এসে প্রতিবেশী দুই দেশের চিত্রটা এখন এ রকমই। পাকিস্তান যেখানে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে প্রায় উঠেই গিয়েছে, ভারত সেখানে বিদায়ের মুখে দাঁড়িয়ে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ক্রিকেটারদের সব রকম বিতর্ক থেকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে তাদের দল। এক কথায় ভারত প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এটেছে পাকিস্তান খেলোয়াড়রা।

এমনই একটি বিষয় ধরা পড়েছে সোমবার। পাকিস্তান-নামিবিয়া ম্যাচের আগের দিন শোয়েব মালিকের সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় দলের ব্যর্থতা নিয়ে খোঁচানোর চেষ্টা করা হলে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যান পাক দলের মিডিয়া ম্যানেজার।

এ দিন দুপুরে দুবাই থেকে ভিডিও কলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন শোয়েব। সাংবাদিক বৈঠক কিছুটা গড়ানোর পরে প্রথম বিতর্কিত প্রশ্নটা উঠে আসে। প্রশ্নকর্তা বলেন, ‘‘এখন তো বিশ্বকাপে দুটো দলকে নিয়ে খুব চর্চা হচ্ছে। একটা পাকিস্তান, অন্যটা ভারত। আপনার কি মনে হয় এই অবস্থা থেকে ভারত আর সেমিফাইনালে যেতে পারবে?’’ 

এর পরে প্রশ্নকর্তা আরও যোগ করেন, ‘‘আপনার স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে অবসর নেবেন। এখন কি মনে হচ্ছে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে?’’

প্রশ্ন দুটো শুনেই গম্ভীর হয়ে যান পাক অলরাউন্ডার। বলে উঠেন, ‘‘আপনি তো এক সঙ্গে অনেকগুলো প্রশ্ন করে বসলেন। কোনটার জবাব দেব আগে?’’ তারপরে একটু থেমে বলেন, ‘‘আচ্ছা প্রথম প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি আগে। আমরা শুধু আমাদের দলের উপরে নজর দিচ্ছি। কী আমাদের লক্ষ্য, কী আমাদের পরিকল্পনা আর এগুলো কী ভাবে পূরণ করা যায়, শুধু সেটাই মাথায় রাখছি। এ ছাড়া ডানে-বাঁয়ে যা ঘটছে, তার দিকে তাকাচ্ছি না। কোনও ভাবেই নেতিবাচক ব্যাপারগুলোকে আমরা শিবিরে ঢুকতে দেব না।’’ এরপরে নিজের অবসর প্রসঙ্গে পাক ব্যাটার বলেন, ‘‘আমরা এখন বিশ্বকাপে খেলছি। আমাদের সমস্ত মনোযোগ এখন এখানে ভাল করার উপরে। তাই অন্য কিছু নিয়ে ভাবার কোনও সময় নেই।’’

শোয়েবের উত্তর শেষ হতে না হতেই আসরে নেমে পড়েন মিডিয়া ম্যানেজার। সাংবাদিকদের উদ্দেশে জানিয়ে দেন, ‘‘কাল পাকিস্তান ম্যাচ। আপনারা সেই ম্যাচ নিয়েই প্রশ্ন করুন। অন্য কিছু নিয়ে নয়।’’ কিন্তু বিতর্ক উস্কে দেওয়ার চেষ্টা তাতে থামেনি। পরের প্রশ্নটা উড়ে আসে— “গণমাধ্যমে চর্চা চলছে যে, জৈব সুরক্ষা বলয়ে দীর্ঘদিন ধরে থাকতে হয়েছে বলে ভারতের খেলা খারাপ হচ্ছে। এটা ঠিক নাকি সাত দিন আগে পাকিস্তানের কাছে প্রথম ম্যাচ হারায় চাপে পড়ে গিয়েছে ভারত?’’ 

প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই মিডিয়া ম্যানেজারের গলা ভেসে আসে— ‘‘আপনি দয়া করে পাকিস্তান দল নিয়ে প্রশ্ন করুন। তার বাইরে নয়।’’ প্রশ্নকর্তা তবু বলার চেষ্টা করেন, ‘‘আমি তো পাকিস্তান দল নিয়েই করছি। পাকিস্তানের কাছে হেরে চাপে পড়ে গেল কি না ভারত?’’ এ কথা শোনার পরে প্রশ্নকর্তাকে আর সুযোগ দেননি মিডিয়া ম্যানেজার। সঙ্গে সঙ্গে চলে যান পরবর্তী সাংবাদিকদের কাছে। পরে শুধু পাকিস্তানের সাফল্যের প্রসঙ্গে শোয়েব বলেছেন, ‘‘প্রতিযোগিতার শুরুতেই ভাল একটা দলকে বড় ব্যবধানে হারালে স্বাভাবিক ভাবে ছন্দটা চলে আসে ড্রেসিংরুমে।’’

এর পরে মিনিট পাঁচেকের বেশি আর চলেওনি সাংবাদিক বৈঠক। তার মধ্যে অবশ্য জৈব সুরক্ষা বলয় নিয়ে এমন একটা মন্তব্য করলেন শোয়েব, যা পুরো উল্টো যশপ্রীত বুমরার বক্তব্যের থেকে। নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পরে সাংবাদিকদের বুমরা বলেছিলেন, ‘‘দীর্ঘদিন জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার পরে মানসিক অবসাদটা আসা স্বাভাবিক।’’ শোয়েবের কাছে প্রশ্ন করা হয়, জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার অভিজ্ঞতাটা আপনার কেমন?

শোয়েব বলে গেলেন, ‘‘ব্যাপারটা অবশ্যই সহজ নয়। কিন্তু এখানে আমাদের পরিবার সঙ্গে আছে। আমরা সতীর্থরা একসঙ্গে সময় কাটাতে পারছি। যদি জীবনে কিছু পাওয়ার লক্ষ্য থাকে, তা হলে কঠিন রাস্তায় হাঁটতেও হবে। সত্যি বলতে কী, এই জৈব বলয়ের জীবন আমি এখন উপভোগও করছি।’’
সূত্র : আনন্দবাজার
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি