লঙ্কান স্পিনারদের ঘাম ছুটিয়েই ছাড়ল উইন্ডিজ
প্রকাশিত : ১৫:২০, ২৫ নভেম্বর ২০২১
প্রতিরোধের দেয়াল গড়েন দুই ক্যারিবীয় ব্যাটার জশুয়া ও বনার, যদিও বড় জয়ের হাসিটা শোভা পায় দিমুথের বদনেই
শ্রীলঙ্কার দেয়া ৩৪৮ রানের বিশাল লক্ষ্যে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক স্পিনারদের মায়াবী ছোবলে মাত্র ১৮ রানেই ৬ উইকেট হারিয়েই পরাজয়ের প্রহর গুণতে থাকে উইন্ডিজ। অন্যদিকে বিশাল জয়ের গন্ধ পেতে থাকে দিমুথ করুনারত্নের দল। জয়টা অবশ্য পেয়েছে তাঁরা, তবে লঙ্কান স্পিনারদের রীতিমত ঘামের ফোয়ারা ছুটিয়ে তবেই ছেড়েছেন ক্যারিবীয় দুই ব্যাটার জশুয়া ডা সিলভা ও এনক্রুমাহ বনার।
এই দুই ব্যাটারের অনবদ্য ধৈর্য্যশীল দুই ইনিংসের কল্যাণেই শ্রীলঙ্কার কাছে পরাজয়ের ব্যবধানটা কমিয়ে ১৮৭ তে নিতে পারে উইন্ডিজ। আর এই জয়ে দুই টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩৮৬ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের পক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সর্বোচ্চ ১৪৭ রান করেন অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা করেন ৫৬ রান। তাদের উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ১৩৯ রান।
এছাড়া ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ব্যাট থেকে আসে ৬১ রান আর উইকেটরক্ষক দীনেশ চান্দিমাল করেন ৪৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে রোস্টন চেজ একাই ৫টি উইকেট এবং জোমেল ওয়ারিক্যান ৩টি ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ২টি উইকেট শিকার করেন।
লঙ্কানদের ৩৮৬ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ২৩০ রানে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন কাইল মেয়ার্স। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্যাথওয়েটের ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। শ্রীলঙ্কার পক্ষে প্রবীণ জয়াবিক্রমে ৪টি এবং রমেশ মেন্ডিস ৩টি উইকেট শিকার করেন।
ফলে ১৫৬ রানে এগিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৯১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। তৃতীয় উইকেটে ১২৩ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে ও সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। করুনারত্নে ১০৪ বলে ৮৩ রান করেন। তার ইনিংসে ছিল ৯টি চার। আর ৮৪ বলে ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাথিউজ। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৬টি চার ও দুটি ছক্কায়।
ক্যারিবীয়দের পক্ষে রাহকিম কর্নওয়াল ও জোমেল ওয়ারিক্যান ২টি করে উইকেট লাভ করেন। যার ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৪৮ রান।
বিশাল এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেই লঙ্কান স্পিনের সামনে মহাবিপর্যয়ে পড়ে উইন্ডিজ। মাত্র ১৮ রানেই তারা হারিয়ে ফেলে ৬টি উইকেট। সবাই সাজঘরে ফেরেন এক অঙ্কের ঘরে। ক্যারিবীয় টপ ও মিডল অর্ডারে এই ধস নামান দুই স্পিনার রমেশ মেন্ডিস ও লাসিথ এম্বুলডেনিয়া।
তবে লঙ্কানদের মায়াবী স্পিন ছোবলের সামনে নীল হয়ে পড়া দলকে বিষমুক্ত করে মাথা তুলে দাঁড়াতে বুক চিতিয়ে লড়াই করেন এনক্রুমাহ বনার ও জশুয়া ডা সিলভা। সপ্তম উইকেটে ১০০ রানের জুটি গড়েন এই দুই ক্যারিবীয় ব্যাটার।
তবে এরপরই এম্বুলডেনিয়ার আরেকটি আঘাতে ভেঙে যায় লড়াকু এই জুটি। জশুয়া সাজঘরে ফেরেন ১২৯ বলে ৫৪ রান করে, দলীয় ১১৮ রানের মাথায়। এরপর রাহকীম কর্নওয়াল, জোমেল ওয়ারিক্যান ও গ্যাব্রিয়েলরা ব্যর্থ হন বনারকে সঙ্গ দিতে। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়ে যায় ১৬০ রানে।
২২০ বল মোকাবেলা করে ৭টি চারের মারে ৬৮ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন বনার। তবে শ্রীলঙ্কা পায় ১৮৭ রানের বড় জয়। অবশ্য এই দুজনকে আগেই ফেরাতে পারলে জয়টা আরও বড় ব্যবধানেরই হতে পারত।
যাইহোক, এ ইনিংসে শ্রীলঙ্কার পক্ষে লাসিথ এম্বুলডেনিয়া ৫টি, রমেশ মেন্ডিস ৪টি ও প্রবীণ জয়াবিক্রমা ১টি উইকেট শিকার করেন। আর দুই ইনিংস মিলিয়ে মেন্ডিস, এম্বুলডেনিয়া ও জয়াবিক্রমা নিয়েছেন যথাক্রমে ৭, ৬ ও ৫টি করে উইকেট। তবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দুই ইনিংস মিলিয়ে ২৩০ রান করা লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নেই।
দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ নভেম্বর, এই গলেই।
এনএস//