নাটকীয় ড্রয়ে মান বাঁচালেন ব্রড-অ্যান্ডারসন
প্রকাশিত : ১৫:৩৫, ৯ জানুয়ারি ২০২২
রুদ্ধশ্বাস ড্র ছিনিয়ে আনার পর মাঠ ছাড়ছেন ইংল্যান্ডের শেষ জুটি ব্রড ও অ্যান্ডারসন।
অবশেষে পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙতে পারল ইংল্যান্ড। লিচ-ব্রড ও অ্যান্ডারসনের সৌজন্যে অজিদের বিপক্ষে হার এড়িয়ে নাটকীয় ‘ড্র’ আদায় করল ইংল্যান্ড। যাতে সিডনি টেস্ট শেষ হয়েছে কোনো ফলাফল ছাড়াই।
অ্যাশেজ নিয়ে এমনিতেই উন্মাদনার কমতি নেই। মাঠের লড়াইয়ে কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে নারাজ দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। আর তা যদি হয় সিডনির মতো বিখ্যাত মাঠে, তাহলে তো কথাই নেয়। যদিও অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যে ৩-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ জিতে নেয়ায় সিডনি টেস্টের জৌলুস কিছুটা হলেও হারিয়েছিল।
তবে সেই জৌলুস ফিরিলে আনল ইংল্যান্ড দল। সিডনি টেস্টের চতুর্থ দিনে ইংল্যান্ডকে ৩৮৮ রানের বড় লক্ষ্যই ছুঁড়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। স্বাভাবিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল, এই টেস্ট হয়তো অস্ট্রেলিয়ার পক্ষেই যাবে। বিনা উইকেটে ৩০ রান করে দিন শেষ করা ইংল্যান্ড ৫ম দিন সকালেই উইকেট হারিয়ে বসে।
৪৬ রানে প্রথম উইকেট হারালে জ্যাক ক্রাউলি ও মালান মিলে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। সেই চেষ্টায় পানি ঢেলে দেন ন্যাথান লায়ন। মালানের বিদায়ের পর রুটের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ইংলিশ ওপেনার। তবে এবার নিজেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। দলীয় ৯৬ রানে আউট হলেও সাজঘরে ফেরার আগে ক্রাউলির ব্যক্তিগত রান ছিল ৭৭।
যাইহোক এই অবস্থায় ইংল্যান্ডের মান বাঁচাতে লড়াই করে যান রুট ও স্টোকস। ১২২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে প্রথম সেশন শেষ করা ইংল্যান্ড দ্বিতীয় সেশনটাও পার করে দেয় মাত্র একটি উইকেট হারিয়ে। এসময়ে রুট বিদায় নিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন স্টোকস ও বেয়ারস্টো মিলে।
সিডনি টেস্ট দিয়েই সেঞ্চুরির দেখা পান বেয়ারস্টো। সেই সাথে শেষ সেশনে ছন্দে ছিলেন স্টোকসও। তবে দলীয় ১৯৩ রানে স্টোকসের বিদায় ঘণ্টা বাজান সেই লায়ন। তবুও ইংল্যান্ডের আশা ছিল এবার হয়তো ফর্মে ফিরবেন বাটলার। তবে সেটা আর হয়নি, কামিন্সের বলে এলবিডব্লুর শিকার হন তিনি।
২১৮ রানের মাথায় বাটলার ফিরতেই সাজঘরে ফেরেন মার্ক উডও। আর ১৯ রান যোগ করতেই বিদায় নেন ৪১ রান করা বেয়ারস্টোও। ফলে ২৩৭ রানে ৮ উইকেট হারালে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার হাতে। তবে সিডনি টেস্টের আসল রোমাঞ্চটা যে শুরু হয় তখনই। অজিদের সামনে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়া জ্যাক লিচ।
লিচ ও ব্রডের ব্যাটিংই মূলত জয় বঞ্চিত করে অস্ট্রেলিয়াকে। আর পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচায় ইংল্যান্ডকে। কিন্তু তখনও যে ম্যাচে বাকি ছিল প্রায় ১০টি ওভার। ব্রডকে নিয়ে প্রায় ৮ ওভার কাটিয়েও দেন লিচ। কিন্তু ২৬ রান করা লিচকে ঠিক তখনই বিদায় করে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে দেন স্টিভ স্মিথ।
তখনও ম্যাচের ১২ বল বাকি! তবে সব আশঙ্কাকে দাফন করে শেষ বিকেলের সেই ১২টি বল ক্রিজে টিকে থাকতে পারেন ব্রড ও অ্যান্ডারসন।
লায়নের করা প্রথম ওভারটি ব্রড ও স্মিথের করা দিনের শেষ ওভারটিতে উইকেট বিলিয়ে না দিয়ে ইংল্যান্ডকে ড্র উপহার দেন অ্যান্ডারসন। আর রোমাঞ্চ ছড়ানো নাটকীয় এই ম্যাচের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার উসমান খাজা।
আগামী ১৪ জানুয়ারি হোবার্টে অনুষ্ঠিত হবে এবারের অ্যাশেজের পঞ্চম তথা শেষ ম্যাচটি।
এনএস//