ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

নাসুম-শরিফুলে ধরাশায়ী তারকাবহুল ঢাকা

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ২২:০৩, ২২ জানুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ২২:১৩, ২২ জানুয়ারি ২০২২

দাপুটে জয়ে দারুণ খুশি অধিনায়ক মিরাজ

দাপুটে জয়ে দারুণ খুশি অধিনায়ক মিরাজ

প্রথম ম্যাচে নিজে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেও দলকে জেতাতে পারেননি অধিনায়ক। তবে সতীর্থ নাসুম আহমেদ ও শরিফুলের বোলিং তোপে তারকাবহুল মিনিস্টার ঢাকাকে ধরাশায়ী করে দ্বিতীয় ম্যাচেই কাঙ্ক্ষিত জয় তুলে নেয় মিরাজের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। শনিবার রাতের ম্যাচে তামিম-রিয়াদের ঢাকাকে ৩০ রানে পরাজিত করে মিরাজ বাহিনী।

হাইভোল্টেজ ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে ব্যাটারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৮ উইকেটে ১৬১ রান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম। জবাবে তামিম ইকবালের টানা দ্বিতীয় অর্ধশতকের পরও ঢাকা থামে ১৩১ রানে। মাত্র ৯ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।

যদিও দুবার জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে আসল ভূমিকা পালন করেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য শরিফুলই। বাঁহাতি এই তরুণ পেসার ৩৪ রান দিয়ে নেন ৪টি উইকেট। যা তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার।

তবে জবাব দিতে নামা ঢাকার শুরুটা কিন্তু শেষের মত এতোটা করুণ ছিল না। পাওয়ার প্লে-তেই ৪২ রান তুলে ফেলা দলটি সপ্তম ওভারেই হারায় ওপেনার শাহজাদকে। এদিন আর তেমন সুবিধা করতে না পারা শাহজাদ মুগ্ধের বলে মুগ্ধ হয়ে আউট হন ১২ বলে ৯ রান করেই। 

এরপর জহিরুলকে নিয়ে ৩০ বলে ৩১ রানের জুটি গড়ার পথে চলতি বিপিএলে নিজের টানা দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন তামিম। তবে এরপরেই ঘটে ছন্দপতন। ৪২ বলে ফিফটি পূরণ করা ঢাকার ওপেনার এদিনও আউট হন ঠিক এরপরেই। যেন আগের দিনেরই পুনঃমঞ্চায়ন! 

শরিফুলের স্ট্যাম্পে থাকা বল হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন তামিম। ফেরার আগে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৪৫ বলে ৫২ রান, যাতে ছিল ছয়টি চারের সঙ্গে দুটি বিশাল ছক্কার মার। তামিমকে আউট করার এক বল পরেই সঙ্গী ১২ বলে ১০ রান করা জহিরুলকে ক্যাচ তুলে দিতে বাধ্য করেন শরিফুল। তাঁর একই ওভারে এই জোড়া আঘাতে ৭২ রানে এক উইকেট থেকে মুহূর্তেই ৭৪ রানে ৩ উইকেট হয়ে যায় ঢাকার স্কোর।

এরপর দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন নাসুম আহমেদ। বাঁহাতি এই অর্থডক্স স্পিনারও একই ওভারে তুলে নেন মোহাম্মদ নাঈম (৪) ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে (৫)। আর এই দুজনকে হারিয়েই যেন ব্যাকফুটে চলে যায় মিনিস্টার ঢাকা। আর দলটির স্কোর একশ হওয়ার আগেই ক্যারিবীয় দানব আন্দ্রে রাসেলকে ফিরিয়ে ম্যাচটি পুরোপুরিই নিজেদের দখলে নিয়ে নেন নাসুম।

পরে আবারও জোড়া আঘাত হেনে ঢাকার ইনিংসে শেষটাও মুড়িয়ে দেন শরিফুল। তাঁর করা ওই ১৯তম ওভারেই অবশ্য একটি রান আউটসহ তিনটি উইকেট হারায় রিয়াদের দল। আর শেষ ওভার করতে আসা নাঈম ইসলাম রুবেলকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেললে এক বল বাকি থাকতেই শক্তিশালী ঢাকা গুঁড়িয়ে যায় ১৩১ রানেই। 

ফলে ৩০ রানের দাপুটে জয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াল মেহেদী মিরাজের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ২৪ জানুয়ারি তৃতীয় ম্যাচে মুশফিকের খুলনার মুখোমুখি হবে দলটি।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উইল জ্যাকসের ২৪ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ রান, বেনি হাওয়েলের ১৯ বলে ৩৭ রান, সাব্বির রহমানের ১৭ বলে ২৯ রান ও অধিনায়ক মেহেদী মিরাজের ২৫ বলে ২৫ রানের চারটি কার্যকরী ইনিংসে ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোরই গড়ে চট্টগ্রাম।

মিনিস্টার ঢাকার পক্ষে অবশ্য এদিন দারুণ বোলিং করেন পেসার রুবেল হোসাইন। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ব্রেকথ্রু এনে দেয়াসহ ২৬ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট লাভ করেন আরাফাত সানি, ইসুরু উদানা, শুভাগত হোম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। 

তবে বল হাতে এদিন কোনও সাফল্য পাননি একটি ওভার করে ১৭টি রান দেয়া অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। ব্যাট হাতেও কিছু উপহার দিতে পারেনি এই ক্যারিবীয় দানব। 

তবে এ ম্যাচেও ফিফটি হাঁকিয়ে বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান শিকারের তালিকায় মুশফিকুর রহিমকে টপকে শীর্ষে উঠে বসেছেন তামিম। যদিও টানা দুই ম্যাচেই ফিফটি হাঁকিয়ে তাঁর আউট হওয়া নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন, চলছে আলোচনা। তবে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান বলেই জানিয়েছেন দেশ সেরা এই ওপেনার।

এদিকে, দ্বিতীয় ম্যাচেই শক্তিশালী ঢাকাকে হারিয়ে জয়ে ফিরতে পারায় দারুণ খুশি দলটির অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। সবটুকু কৃতিত্ব সতীর্থদের দিয়ে জয়ের এই ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডার।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি