হোয়াইটওয়াশেই প্রতিশোধ নিতে চায় বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১৯:৩০, ৪ মার্চ ২০২২
নাসুম আহমেদকে ঘিরে সতীর্থদের উদযাপন
সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় এবং শেষ টি-টোয়েন্টিতে জয় ছাড়া ভিন্ন কিছুই ভাবছে না বাংলাদেশ। জয় দিয়েই সিরিজ শেষ করতে মরিয়া টাইগাররা। শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বিকেল ৩টায়।
প্রথম ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে ৬১ রানে সহজ জয়ে এখন সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় শুধু সিরিজ জয়ই নয়, ক্রিকেটের যে কোনো ফরম্যাটে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন পূরণ করবে টাইগারদের।
অবশ্য ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ হাতছাড়া করেছে টাইগাররা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরে যাওয়ায় ২-১ ব্যবধানেই সিরিজ জয় করে টাইগাররা।
তবে এবারের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে আফগানদের বিপক্ষে প্রতিশোধ নেয়া হবে বাংলাদেশের।
২০১৮ সালে নিজেদের হোম ভেন্যু করে ভারতের হায়দারাবাদে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল আফগানরা।
দুই দলের মধ্যে জয়-পরাজয়ের অনুপাতের দিক থেকেও আসন্ন ম্যাচে জয় বাংলাদেশ সমান অবস্থানে আনবে। এখন পর্যন্ত দু’দল সাতটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে চারটিতে জিতেছে আফগানিস্তান, আর তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ।
তাই যখন মাত্র একটি জয় দিয়েই অনেক কিছু অর্জন করা যায়, তখন হালকা মেজাজে থাকার অবকাশ নেই টাইগারদের। আর টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশের স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ তাই পরিষ্কার করে জানিয়েছেন, এই সিরিজ জয়ের জন্য তারা কতটা ক্ষুধার্ত। হেরাথ বলেন, ‘এটা দুই ম্যাচের সিরিজ। সিরিজ জিততে হলে পরের ম্যাচে তাই জিততেই হবে। আমি মনে করি না, আমরা কাউকে বিশ্রাম দিচ্ছি এবং আমরা আমাদের সেরা একাদশ নিয়ে খেলতে নামবো।’
ওয়ানডে সিরিজের জন্য চট্টগ্রামে পেস সহায়ক উইকেট প্রস্তুত করেছিল বাংলাদেশ। সে পরিকল্পনা বেশ ভালোভাবেই কাজে লেগেছে এবং তারা সফলও হয়। তবে মিরপুরে সুবিধা পান স্পিনাররাই। তাই সেখানে উইকেট স্পিন সহায়ক ও স্লো হওয়ায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকবে আফগানিস্তান। কারণ সফরকারীদের দলে রয়েছে উঁচু মানের স্পিনার।
সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করতে পারলেই খুশি হবে বাংলাদেশ। মিরপুরের উইকেট ধীর গতির হওয়ায়, স্পিনাররা সহায়তা পেয়েছিল। কিন্তু রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী এবং মুজিব উর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত আফগানদের স্পিন আক্রমণকে পরাস্ত করেন বাংলাদেশি দুই স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং সাকিব আল হাসান। যেটা সিরিজ জিততে এবং এই ফরম্যাটে আফগানদের আধিপত্য ভাঙতে আরও বেশি উৎসাহিত করবে বাংলাদেশকে।
এদিকে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪৪ বলে ৬০ রান করা লিটন দাস বলেন, ‘পুরো বিপিএলে মুজিবের বিপক্ষে খেলাটা আমাদের কিছুটা সুবিধা দিয়েছে। একইসঙ্গে রশিদ ও নবির বিপক্ষে আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল যে, আমরা তাদের বিপক্ষে আমাদের পরিকল্পনা ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি এবং তাই আমরা সফল হয়েছি।’
মূলত লিটনের ইনিংসটিই বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে ১৫৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ এনে দেয়। পরে নাসুম আহমেদের ১০ রানে ৪ উইকেট শিকারে মাত্র ৯৪ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। সাকিব আল হাসান ১৮ রানে ২ উইকেট নেন।
হেরাথ বলেন, ‘আমি মনে করি, শুরুতে দুই উইকেট পতনের পর লিটনের সঙ্গে ভালো জুটি হয়েছিল। আমাদের বোলিং লাইনআপের সামনে ১৫৬ রান তাড়া করা আফগানদের জন্য সহজ ছিল না। কৃতিত্ব দিতেই হবে লিটন-নাসুম-শরিফুল-সাকিব ও মুস্তাফিজদের। একটি ইউনিট হিসাবে আমরা একটা দারুণ পারফরমেন্স করেছি।’
এদিকে, সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ১২৪টি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। জয় ৪৪টি, হার ৭৮টিতে। দু’টি ম্যাচে কোনো ফল হয়নি। তাই জয়ের পাল্লা ভারী করাটাও লক্ষ্য টাইগারাদের।
বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য):
লিটন কুমার দাস, মুনিম শাহরিয়ার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসাইন, ইয়াসির আলী চৌধুরী, শেখ মাহেদি হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ।
আফগানিস্তান একাদশ (সম্ভাব্য):
রহমানউল্লাহ গুরবাজ, হজরতউল্লাহ জাজাই, দারউইশ রাসুলি, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি (অধিনায়ক), করিম জানাত, আজমত ওমরজাই, মুজিব উর রহমান, রশিদ খান, কাইস আহমেদ ও ফজল হক ফারুকি।
এনএস//