জোড়া ধাক্কায় এলোমেলো টাইগার শিবির
প্রকাশিত : ২০:২৩, ৯ এপ্রিল ২০২২ | আপডেট: ২০:২৭, ৯ এপ্রিল ২০২২
তামিম ইকবাল খান
তাইজুলের ঘূর্ণিতে শেষ পর্যন্ত ৪৫৩ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস। ৬ উইকেট নিয়ে সাকিবের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে প্রোটিয়াভূমে টেস্টে পাঁচের অধিক উইকেট পেলেন এই স্পিনার। জবাব দিতে নেমেই জয়কে হারালেও শান্তকে নিয়ে ৭৯ রানের জুটি গড়ে ৩ রানের আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছেন তামিম। একই পথে হেঁটে দলকে বিপদে ফেললেন শান্ত।
পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালে ৫ উইকেটে ২৭৮ রান নিয়ে মাঠে নামে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় স্কোরে মাত্র ২২ রান যোগ করতেই ভেরেইন্নেকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান টাইগার পেসার খালেদ আহমেদ। ইনিংসে তিন উইকেট শিকার করেন এই পেসার।
ফেরার আগে ব্যক্তিগত ২২ রান করতে পারেন ভেরেইন্নে। এরপর সপ্তম উইকেট জুটিতে ওয়ানডে স্টাইলে রান তুলতে থাকেন মুল্ডার ও মহারাজ। ১৭ ওভারের মধ্যে ৮০ রান তুলে ফেলেন এই দুই ব্যাটার। এরমধ্যে মহারাজ ছিলেন বেশি আগ্রাসী।
মাত্র ৫০ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছয়ে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন মহারাজ। শেষ পর্যন্ত ৯ চার ও ৩ ছয়ে ৯৫ বলে ৮৪ রান করে তাইজুলের পঞ্চম শিকার হয়ে ফেরেন মহারাজ। তার আগেই অবশ্য মুল্ডারকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তাইজুল। ব্যক্তিগত ৩৩ রান করে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন মুল্ডারও।
আগের দিন ৩ উইকেট নেয়া তাইজুল এদিন নিজের পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন। সাকিবের পর দ্বিতীয় টাইগার বোলার হিসেবে প্রোটিয়ায় পাঁচ উইকেট শিকার করলেন তাইজুল। এটি তাইজুলের ক্যারিয়ারের দশম পাঁচ উইকেট শিকার।
এরপর ২৯ রান করা সিমন হার্মারকে দারুণ এক স্ট্যাম্পিং করে নিজের ৬ষ্ঠ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল। এই উইকেটের মধ্য দিয়ে সাকিবের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টেস্ট ক্যারিয়ারে দেড়শ উইকেট শিকার করলেন তাইজুল। মাত্র ৩৬ টেস্টে পেলেন দেড়শ টেস্ট উইকেটের দেখা।
প্রোটিয়াদের শেষ উইকেট শিকার করেন মেহেদী মিরাজ। টাইগারদের পক্ষে তাইজুল ১৩৫ রানে ৬টি ও খালেদ ১০০ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন।
জবাব দিতে নেমে দলীয় মাত্র ৩ রানেই আউট হয়ে ফেরেন আগের টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইতিহাস গড়া ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। এদিন রানের খাতা খোলার আগেই তাকে সাজঘরে ফেরান ডুয়ান্নে অলিভিয়ের।
তবে শান্তকে নিয়ে শুরুর এই ধাক্কা সামাল দিচ্ছেন ১২ মাস পর টেস্ট খেলতে নামা দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। মারকুটে ব্যাটিংয়ে প্রথম পাঁচ ওভারেই দুজনে তুলে ফেলেন ৩০ রান। এরপর দেখেশুনে খেলে দলীয় স্কোর পঞ্চাশ ছাড়িয়ে এগোচ্ছিলেন শতকের দিকেই, সঙ্গে নিজের ৩২তম ফিফটির লক্ষ্যে।
তবে তা আর হল না। হতে দিলেন না উইয়ান মুল্ডার। ২১তম ওভারে নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই তুলে নেন তামিমকে। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ৪৭ রানেই শেষ হয় দেশ সেরা ওপেনারের ৫৭ বলের ইনিংসটি। যাতে ছিল ৮টি দর্শনীয় চারের মার। ফলে ৮২ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপরের ওভারে এসেই ক্রিজে থিতু হওয়া শান্তকেও ফাঁদে ফেলেন মুল্ডার। পরপর দুই ওভারে দুই সেট ব্যাটারকে তুলে নিয়ে ম্যাচে প্রোটিয়া আধিপত্য কায়েম করেন ডানহাতি এই পেসার। অর্থাৎ ৮৫ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারিয়ে এ টেস্টেও বিপর্যয়ে পড়ল বাংলাদেশ।
ফেরার আগে নাজমুল হোসাইন শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। তার ৭৪ বলের এই ইনিংসে ছিল ছয়টি দারুণ চারের মার।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৪ ওভারে টাইগারদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৯3 রান। অধিনায়ক মোমিনুল হক ৫ রানে এবং মুশফিকুর রহিম ৪ রানে ক্রিজে আছেন।
এনএস//