রাসেলের বল-ব্যাটের ম্যাজিকেও হারল কেকেআর
প্রকাশিত : ২০:৪২, ২৩ এপ্রিল ২০২২
আন্দ্রে রাসেল
ম্যাচে মাত্র ৬টি বলই করলেন আন্দ্রে রাসেল। তার মধ্যে ৪টি বলেই পেলেন উইকেট, বাকি দুই বলে দিলেন মোটে ৫ রান। অর্থাৎ এক ওভার বল করে মাত্র ৫ রান দিয়ে নিলেন ৪ উইকেট। এরপর ব্যাট হাতেও কারিশমা দেখান এই ক্যারিবীয় দানব। তবে ছয়টি ছক্কা মেরেও দলকে জেতাতে পারলেন না তিনি, ফলে টানা চতুর্থ ম্যাচেও হারল কোলকাতা।
শনিবার বিকেলের ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটান্সের কাছে শ্রেয়াস আইয়ারের দল হারল মাত্র ৮ রানে। আর এর ফলে ৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানটি আরও শক্ত করল গুজরাট। অন্যদিকে, ৮ ম্যাচে টানা চতুর্থ হারে মাত্র ৬ পয়েন্ট নিয়ে সাতে শাহরুখ খানের দল।
এদিন টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার অর্ধশতকে চড়ে ১৯ ওভারেই ১৫১ রান তুলে ফেলে, ৫ উইকেট হারিয়ে। ৪৯ বলে দুই ছক্কা ও ৪টি চারের মারে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে হার্দিক আউট হলেও উইকেটে ছিলেন রাহুল তেওয়াটিয়া এবং অভিনব মনোহর।
হাতে আরও পাঁচটি উইকেট থাকায় আরও ১২ থেকে ১৫টি রান যোগ হতেই পারত শেষ ওভারে। কিন্তু গুজরাটের সেই আশায় জল ঢেলে দেন রাসেল।
গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে মাত্র একটি ওভারই বল করার সুযোগ পান রাসেল। তাও ইনিংসের একেবারে শেষ ওভারে তার হাতে বল দিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। তাতেই ভেল্কি দেখালেন রাসেল।
হ্যাটট্রিক না হলেও মাত্র ৫ রান দিলেন। আউট করলেন ৪ ব্যাটারকে। এবারের আইপিএলে দ্বিতীয় সেরা বোলিং করলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। এক ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে তার আগে রয়েছেন শুধু যুজবেন্দ্র চহাল।
এ দিন বল হাতে রাসেল ছিলেন হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা। আর এতে প্রশ্ন উঠতেই পারে রাসেলকে কেন আরও আগে আক্রমণে আনলেন না শ্রেয়াস। তাহলে হয়তো আরও আগেই শেষ হয়ে যেত গুজরাটের ইনিংস। কিন্তু ওস্তাদের মার তো শেষ রাতেই হয়।
তবে কলকাতার শেষটা ভালো করতে পারলেন না ওস্তাদ রাসেল। বল হাতে শেষ ওভারে ম্যাজিক দেখালেও ব্যাট হাতে কারিশমাটা দেখাতে পারলেন না শেষ ওভারটিতে। ১৯তম ওভার শেষে নাইটদের সংগ্রহ তখন ১৩৯, ৭ উইকেটে। তবে খেলাটা তখনও ছিল রাসেলের হাতেই।
কেননা, পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে মাত্র ২৩ বলে ৪২ রানের তান্ডুবে ইনিংস খেলে তখনও ক্রিজে ক্যারিবীয় দানব। সঙ্গী উমেশ যাদবও আছেন ১২ বলে ১৩ করে। আর জয়ের জন্য শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ১৮টি রান।
কিন্তু কেকেআরকে শেষ রক্ষা করতে পারলেন না আন্দ্রে রাসেল। হার মানলেন স্বদেশী আলজারি জোসেফের কাছেই। প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের সমীকরণটা যখন ৫ বলে ১২ করে ফেললেন, তখন নিশ্চিত জয়ই হয়তো দেখতে পাচ্ছিলেন ভক্তরা।
সেই আশাতেই পরের বলেও উড়িয়ে মারলেন জোসেফকে। কিন্তু বলটি দূরত্বে যাওয়ার পরিবর্তে উঠে যায় বেশি। সীমানা থেকে অনেকখানি দৌড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন লকি ফার্গুসন। আর সেইসঙ্গে গর্জে ওঠে গোটা ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়াম। অন্যদিকে নিরবতা আর হতাশার অন্ধকার নেমে আসে কেকেআর শিবিরে।
রাসেলের ২৫ বলে খেলা ৪৮ রানের ঝোড়ো ইনিংসটি শেষ হতেই ৪ বল বাকি থাকতেই যেন জয়ের উল্লাসে মাতে গুজরাট শিবির। একটি চারের সঙ্গে ছয়টি ছক্কা হাঁকান রাসেল। পরের ৪ বল থেকে মাত্র ৩টি রান নিতে পারলে কেকেআর হেরে যায় ৮ রানে।
রাসেল ছাড়া অন্যদের মধ্যে ৩৫ রান করেন রিংকু সিংহ, আর ১২ রান করে আউট হন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। মোহাম্মদ শামি, রশিদ খান ও যশ দয়াল ২টি করে উইকেট তুলে নেন। ম্যাচ সেরা হন ২২ রানে ২ উইকেট নেয়া রশিদ খানই।
এনএস//