৬৩ বছর আগের রেকর্ড ভাঙলেন লিটন-মুশফিক
প্রকাশিত : ১৬:০৩, ২৩ মে ২০২২ | আপডেট: ১৭:৪৪, ২৩ মে ২০২২
আবারো ত্রাণকর্তা সেই মুশফিক ও লিটন
২৪ রানেই শেষ ইনিংসের অর্ধেক! সম্প্রতি এমন ধ্বংসস্তুপের মাঝে দাঁড়িয়ে ইমারত রচনা করতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ে ৪৩, ৫৩ কিংবা ৮০ রানে ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
তবে এবার ঢাকার মিরপুরে ৬৩ বছর আগে গড়া সেই রেকর্ড ভেঙে তেমন কিছু হতে দিলেন না মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস।
২৫ কিংবা তারও নিচে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটা ছিল ঢাকার মাঠেই। বর্তমানের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ১৯৫৯ সালে পাকিস্তানের ওয়ালিস মাথিয়াস ও সোজাউদ্দিন গড়েছিলেন ৮৬ রানের জুটি। ২২ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েছিলেন তারা।
এমন বাজে শুরুর পর ষষ্ঠ উইকেটে এর আগে কখনও ২০ পার করতে পারেনি বাংলাদেশ। কদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডারবান টেস্টে দল ১৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর নাজমুল হোসাইন শান্ত ও ইয়াসির আলী যোগ করতে পারেন মাত্র ১০টি রান। আর ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে ১৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে লিটন যোগ করেছিলেন ১৬ রান।
এবার দলের ভীষণ বাজে শুরুর পরও মুশফিক ও লিটনের স্বপ্নময় জুটি পেরিয়ে গেছে যেন সব সীমানা। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এর আগে কোনো জুটি যা করতে পারেনি তাই করে দেখিয়েছেন এই দুই জনে।
তাদের হাত ধরে টেস্ট ক্রিকেট ষষ্ঠ উইকেটে দেখল প্রথম শতরানের জুটি, যেখানে প্রথম ৫ উইকেট পড়েছিল ২৫ কিংবা এর নিচে। এই জুটি গড়ার পথেই মাথিয়াস ও সোজাউদ্দিনের রেকর্ড পেরিয়ে যান মুশফিক ও লিটন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ২০০৭ সালে কলম্বোয় মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ১৯১ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। যা ছিল বাংলাদেশের পক্ষে এতদিন ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এদিন সেটাও ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড করেন এই দুজন।
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর আর কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৮৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৭৭ রান। যেখানে মুশফিক-লিটনের অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ২৫৩।
আশিথা ফার্নান্ডোর করা ৬৩তম ওভারের শেষ বলে পাঁচ রান নিয়ে ১৪৯তম বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন লিটন দাস। ১৩টি চারের সাহায্যে শতকের মাইলফলকে পৌঁছান এই উইকেটকিপার ব্যাটার। যা ৩৪ বছর বয়সী এই ব্যাটারের ৩৩ টেস্টের ক্যারিয়ারে তৃতীয় শতক। অপরাজিত আছেন ১৩৫ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে।
অন্যদিকে, ২১৭ বলে ১১টি চারের সাহায্যে লঙ্কানদের বিপক্ষেই টানা দ্বিতীয় শতক হাঁকানোর পাশাপাশি তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ৯ম শতকটিও। ১১৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে অপরাজিত আছেন চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা এই ব্যাটার।
এনএস//