মোমিনুল ও দ্বিতীয় টেস্ট নিয়ে যা বললেন সাকিব
প্রকাশিত : ১১:১২, ২০ জুন ২০২২
মোমিনুল হক সৌরভ ও সাকিব আল হাসান
রানের জন্য রীতিমত সংগ্রাম করছেন মোমিনুল হক। টেস্ট ক্রিকেটে টানা ৯টি ইনিংসেই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি তিনি। এই অফফর্মের কারণেই তাকে ইতিমধ্যেই টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে। আর এখন, তার এই ফর্মই তাকে দল থেকেই ছিটকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে বাংলাদেশের পরাজয়ের পর তো এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি বলেছেন, তার পূর্বসূরি (মোমিনুল) যদি নিজের ফর্ম ফিরে পেতে ক্রিকেট থেকে কিছুটা বিরতি নিতে চান, তাহলে অবশ্যই তাকে স্বাগত জানানো হবে।
টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘এটা বলা আমার পক্ষে আসলেই কঠিন, কিন্তু আমি তার (মোমিনুল) সঙ্গে নিয়মিত কথা বলি এবং আমরা আবারও কথা বলব। যদি তিনি মনে করেন যে, তার বিরতি দরকার, তাহলে এটা হতেই পারে।’
তবে সিদ্ধান্তটা এখনই নয় উল্লেখ করে সাকিব বলেন, ‘আসলে, ম্যাচের পরেই সিদ্ধান্ত নেয়াটা আদর্শ নয়। আমাদের দুই দিনের বিরতি আছে। সেন্ট লুসিয়ায় আমাদের অনুশীলনের পরের দিন আমরা সেরাটা নিয়েই ভাবব। আর সবই হবে দলের জন্যই।’
সদ্য সমাপ্ত অ্যান্টিগা টেস্টে মোমিনুল দুই ইনিংসে শূন্য ও ৪ রান করে আউট হয়েছেন। প্রথমে জাইডেন সিলসকে দ্বিতীয় স্লিপে এবং তারপর কাইল মায়ার্সের মিডিয়াম পেসে পরাস্ত হয়ে এলবিডব্লিউ হন তিনি। তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো- উভয় বোলারের বিপক্ষেই বাঁহাতি এই ব্যাটার কীভাবে আউট হয়েছেন সেটার ধরন।
মোমিনুলের সর্বশেষ ৯টি ইনিংসের মধ্যে দুটি ছাড়া বাকি সবকটিতেই ১০০ রানেরও কম রানে প্রথম চার উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। সঙ্গে যোগ হওয়া নাজমুল হোসাইন শান্তর বাজে ফর্ম এবং মাহমুদুল হাসান জয়ের রান পাওয়া-না পাওয়া মিলিয়ে অ্যান্টিগায় বাংলাদেশ দলকে রীতিমত উড়িয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাইতো, শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া পরবর্তী টেস্টের দলে কিছু পরিবর্তন আনার কথাই ভাবা উচিত টিম ম্যানেজমেন্টকে।
তবে এ বিষয়ে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আপনি নিশ্চয়তা দিতে পারবেন না যে, অনেক পরিবর্তন আনলেই তা দলের জন্য ভালো হবে। কিন্তু আপনি যদি পরিসংখ্যানের দিকে তাকান, আমরা গত ১৬টি ইনিংসের মধ্যে ১২টিতেই ১০০ রানের আগেই ৪টি উইকেট হারিয়েছি। যা খুবই উদ্বেগজনক। শুধুমাত্র সমন্বিত দলীয় প্রচেষ্টাই আমাদের এখান থেকে বের করে আনতে পারে। আর আমি জানি আমরা এখান থেকে বের হতে পারব। আমরা এরকম পরিস্থিতিতে আগেও পড়েছি, তাই আমি বিশ্বাস করি, আমরা বেরিয়ে আসতে পারব।’
টেস্টে ভালো করতে হলে তথা জয়ের চিন্তা করতে হলে বাংলাদেশ দলকে অবশ্যই আরও রান করতে হবে। বিশেষ করে, প্রথম ইনিংসে। তারা অ্যান্টিগা টেস্ট শুরুই করে প্রথম সেশনে ছয়টি উইকেট হারিয়ে। যার পরিণামে ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় দল। সেখান থেকে ফিরে আসার সত্যিই কোনো উপায় ছিল না।
তবে এর মাঝেও দুই ইনিংসেই অর্ধশতক হাঁকান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি বলেন, ‘টেকনিক্যালি ভালো মানের ক্রিকেটার খুব বেশি আমাদের কাছে নেই। প্রত্যেকেরই টেকনিক্যাল সমস্যা রয়েছে। কিন্তু তাদের রান করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে, ক্রিজে থাকতে হবে। এটা ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেই আসতে হবে। কিন্তু এটা (কোচিং) তো আমার কাজ নয়। এটা কোচের বিষয়। একইসঙ্গে কোচ এবং অধিনায়কের ভূমিকা পালন করা আমার জন্য কঠিন হবে। আসলে সবাই তাদের নিজ নিজ কাজগুলো ঠিকঠাকভাবে করলে তা সবই দলকে সাহায্য করবে।’
সাকিব বলেন, ‘এই ম্যাচ থেকে আমার খুব বেশি প্রত্যাশা ছিল না, তবে আমি মনে করি, আমাদের আরও ভালো করার সক্ষমতা ছিল। আমরা সেই সুযোগটি মিস করেছি। আমরা প্রথম সেশন থেকে পিছিয়ে ছিলাম। যার অর্থ হলো- আমরা সবসময়ই ম্যাচে ফেরার জন্য লড়াই করেছি।’
টাইগার টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘আসলে, আমরা ম্যাচে কখনই এগিয়ে থাকতে পারিনি। এটাই আফসোস। তবুও আমি বোলারদের নিয়ে খুশি। আমাদের ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং বিশেষ করে, ক্যাচিংয়ে উন্নতি করতে হবে। প্রথম টেস্টে আমরা যা করেছি, তার থেকে আমাদের আরও ১০০-১৫০ রান বেশি করতে হবে। বেশিরভাগ ব্যাটারই দুই ইনিংসেই রান করতে পারেনি। তাই বোর্ডে আরও কিছু রান থাকলে আমাদের যে বোলিং আক্রমণ, তাই দিয়েই আমরা কঠিন লড়াই করতে পারতাম।’
এনএস//