মিচেল-ব্লান্ডেলে আবারো ঘুরে দাঁড়াল নিউজিল্যান্ড
প্রকাশিত : ১৬:৩৩, ২৪ জুন ২০২২
ড্যারিল মিচেল ও টম ব্লান্ডেল
প্রথম দুই টেস্টের মতো তৃতীয় টেস্টেও যথারীতি দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে নিউজিল্যান্ড। বৃহস্পতিবার লিডসে শুরু হওয়া এই টেস্টে দলীয় ১২৩ রানেই অদ্ভুতভাবে আউট হয়ে হেনরি নিকোলসের বিদায়ে বিপর্যয়ে পড়ে যাওয়া দলের হাল আবারও ধরলেন যথারীতি ড্যারিল মিচেল ও টম ব্লান্ডেল। ষষ্ঠ উইকেটে তাদের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে নামা কিউয়িরা।
মিচেল-ব্লান্ডেল জুটিতে ভর করেই লিডসে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ৫ উইকেটে ১২৩ রানের নড়বড়ে অবস্থান থেকে নিউজিল্যান্ড প্রথম দিন শেষ করে ৫ উইকেটে ২২৫ রানে। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনেও এখন পর্যন্ত যোগ করেছে ১৩ রান। অর্থাৎ পঞ্চম উইকেটে আরও একবার শতাধিক রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এই দুজন।
প্রথম দুই টেস্টেই সেঞ্চুরি করা মিচেল আরেকটি শতকের আশা জাগিয়ে খেলছেন ৮২ রানে। তার ১৭৫ বলের এই ইনিংসে রয়েছে ছয়টি চার ও ২টি ছক্কার মার। আর অন্যপ্রান্তে ১১৯ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত আছেন কিপার-ব্যাটার টম ব্লান্ডেল। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ১২০ রান।
সিরিজে এখন পর্যন্ত ৫ ইনিংসে এই দুজনের জুটির সংগ্রহ ৬১১ রান, যা যে কোনো সিরিজে নিউজিল্যান্ডের কোনো জুটির সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এই সংগ্রহ নিয়েই মিচেল-ব্লান্ডেল জুটি পেছনে ফেলেছেন ১৯৯০-৯১ মৌসুমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করা মার্টিন ক্রো ও আন্ড্রু জোন্সের ৫৫২ রানের জুটিকে।
এদিকে, সব দেশ মিলিয়ে কোনো সিরিজে পঞ্চম উইকেটে বা এর পরের কোনো জুটির তৃতীয় সর্বোচ্চ রান এটি। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে ৫ ইনিংসে জুটি বেঁধে ৬৩০ রান করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লার্ক ও মাইকেল হাসি। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দরপল ও কার্ল হুপার ২০০২ সালে ভারতের বিপক্ষে ৫ ইনিংসে করেছিলেন ৭২৩ রান।
হেডিংলিতে বৃহস্পতিবার উইকেট থেকে যথেষ্ট মুভমেন্ট পেয়েছেন পেসাররা। স্টুয়ার্ট ব্রড, ম্যাথু পটসদের দারুণ বোলিংয়ে প্রথম দুই সেশনে নিউজিল্যান্ডকে চেপে ধরে ইংলিশরা। তবে শেষ সেশনে মিচেল ও ব্লান্ডেলের সামনে তেমন সুবিধা করতে পারেননি স্বাগতিক বোলাররা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই টম ল্যাথামকে হারায় নিউজিল্যান্ড। অভিজ্ঞ পেসার ব্রডের বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার (০)। প্রথম ঘণ্টায় আর কোনো বিপদ হতে দেননি উইল ইয়াং ও কেন উইলিয়ামসন। তবে পানি পানের বিরতির পর লিচের করা প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে যান ৪২ বলে ২০ রান করা ইয়াং।
উইলিয়ামসনও থিতু হয়ে ইনিংস টেনে নিতে পারেননি। লাঞ্চের একটু আগেই তিনি বিদায় নেন ব্রডের বলে কিপারকে ক্যাচ দিয়ে। ৬৪ বলে ৫ চারে কিউয়ি অধিনায়ক করেন ৩১ রান। এরপর ১১ রানে জীবন পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ডেভন কনওয়ে। তিনি বোল্ড হন জিমি ওভারটনের বল স্টাম্পে টেনে এনে। অভিষিক্ত ইংলিশ পেসার পান প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের স্বাদ।
৮৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধের চেষ্টা করেন নিকোলস ও মিচেল। কিন্তু চা বিরতির আগে ১২৫ বলে ৪০ রানের জুটি ভাঙে নিকোলসের ওই আউটে। ৯৯ বলে একটি চারে তিনি করেন ১৯ রান।
তখন ১২৩ রানে ৫ উইকেট হারানো সফরকারীদের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারত, যদি মিচেলের বিপক্ষে এলবিডব্লিউয়ের রিভিউ নিতেন বেন স্টোকস। ৮ রানে ‘বেঁচে’ যাওয়া মিচেল প্রতিরোধ গড়েন ব্লান্ডেলকে নিয়ে।
সিরিজজুড়েই যাদের ব্যাটে বিপর্যয় থেকে বারবার উদ্ধার হয়েছে নিউজিল্যান্ড, সেই মিচেল ও ব্লান্ডেল দাঁড়িয়ে গেছেন আরও একবার। লিচকে ছক্কায় উড়িয়ে মিচেল ফিফটি করেন ১০০ বলে। মাঝে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। পরে দ্বিতীয় নতুন বলেও জুটি ভাঙতে পারেনি স্বাগতিকরা।
এনএস//