রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ভারতের জয়
প্রকাশিত : ০৯:০১, ২৯ জুন ২০২২
উত্তেজনার ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের জন্য শেষটা হলো হতাশার। অবিশ্বাস্য এক জয়ের আশা জাগিয়েও ভারতের বিপক্ষে পারল না তারা। দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ভারত জিতেছে ৪ রানে। তাতে আয়ারল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে হার্দিক পান্ডিয়ার দল।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিটা জিততে হার্দিক পান্ডিয়ার ভারতকে তেমন বেগই পেতে হয়নি। তবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে একটু এদিক ওদিক হলেই হারের কবলে পড়ত দলটি। শুরুতে ব্যাট করে ২২৫ রানের পাহাড় গড়েও শেষ ওভারে উমরান মালিকের বোলিংয়ের সুবাদে জয় পেয়েছে ভারত।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ১৩ রানে ঈশান কিষাণকে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৮৫ বলে ১৭৬ রানের বিশাল জুটি গড়েন সাঞ্জু স্যামসন আর দীপক হুদা। দলীয় ১৮৯ রানে সাঞ্জু ৪২ বলে ৭৭ রানে ফেরেন।
তবে ওপাশে দীপক অবিচল ছিলেন, চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে তুলে নেন টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি। ৫৭ বলে করেন ১০৪। তার ইনিংসের সুবাদেই পরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ঢাকা পড়ে গেছে। অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে যে পরের সবাই উইকেট হারিয়েছেন নিয়মিত বিরতিতে।
সূর্যকুমার যাদব (১৫) দীনেশ কার্তিক (০), অক্ষর পটেল (০), হারশাল পাটেলরা (০) হতাশা উপহার দিয়েছেন ভারতকে। শেষ পর্যন্ত ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক হার্দিক এবং ভূবনেশ্বর কুমার ১ রানে।
শেষ চার ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ভারত পৌঁছে ২২৫ রানে।
জবাবে আগ্রাসী মেজাজে শুরু করে আয়ারল্যান্ডও। ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম ওভারে ১৮ রান নিয়ে শুরু হয় আয়ারল্যান্ডের রান তাড়ার অভিযান। অ্যান্ডি বালবার্নি-স্টার্লিং এই জুটি ৪ ওভারেই ৫০ রান তোলে। স্টার্লিং ১৯ বলে তিন ছক্কা ও পাঁচ চারে ৪০ রান করেন। তার বিদায়ে ভাঙে ৩৫ বল স্থায়ী ৭২ রানের জুটি।
এরপর হার্দিক পান্ডিয়ার সরাসরি থ্রোয়ে শূন্যতে ডেলানি রান আউট হয়ে ফেরেন। পরের বলেই উমরানকে ছক্কায় ওড়ান বালবার্নি। ৯ ওভারেই তিন অঙ্ক স্পর্শ করে আয়ারল্যান্ডের রান। বালবার্নি পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৩৪ বলে, সিঙ্গেল নিয়ে। পরের ওভারে হার্শালকে চারের পর মারেন ছক্কা। পরের বলেই অবশ্য ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক।
৩৭ বলে সাত ছক্কা ও তিন চারে তিনি করেন ৬০ রান। তখনও স্বাগতিকদের প্রয়োজন ৫৭ বলে ১০৯ রান।
আগের ম্যাচে ঝড় তোলা হ্যারি টেক্টর তখনও শান্ত। প্রথম ১০ বলে তিনি করেন ১০ রান। এরপর তিন বলের মধ্যে বিষ্ণইকে দুটি চার মেরে মনোযোগ দেন রানের গতি বাড়ানোয়। নিজের তৃতীয় ওভারে প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের স্বাদ পান উমরান। গতিময় এই পেসার বিদায় করেন লর্কান টাকারকে।
ছক্কায় রানের খাতা খোলার পর তিন বলের মধ্যে বিষ্ণইকে দুই চার মেরে আয়ারল্যান্ডকে কক্ষপথে রাখেন জর্জ ডকরেল। পরে হার্শালকে দুটি ছক্কায় উড়িয়ে লক্ষ্যটা আরও কাছে নিয়ে আসেন তিনি। শেষ ৩ ওভারে আইরিশদের প্রয়োজন ছিল ৩৮ রান।
১৮তম ওভারে টেক্টরকে ফিরিয়ে ২১ বল স্থায়ী ৪৭ রানের জুটি ভাঙেন ভুবনেশ্বর। তাকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন টেক্টর। পাঁচ চারে তিনি ২৮ বলে করেন ৩৯।
সেই ওভারে শেষ বলে চার মেরে একটু হলেও আশা বাঁচিয়ে রাখেন ডকরেল। রান উৎসবের ম্যাচে শেষ ২ ওভারে ৩১ রান অসম্ভব কিছু নয়। ১৯তম ওভারে হার্শালকে চারের পর ছক্কায় ওড়ান অ্যাডায়ার। উজ্জ্বল হয়ে ওঠে আয়ারল্যান্ডের আশা। ওভার থেকে আসে ১৪ রান।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। উমরানের ‘নো’ বল আর অ্যাডায়ারের দুই বাউন্ডারির সুবাদে প্রথম ৩ বলে আসে ৯ রান। এরপরের কাজটা খুব অসম্ভব কিছু ছিল না। কিন্তু উমরানের মাথা খাটিয়ে বোলিংয়ে আর পেরে ওঠেনি আয়ারল্যান্ড।
প্রথম বলে কোনো রান দেননি তিনি। পরের বলটা নো বল করে দলকে বিপাকে ফেলেন তিনি। ফ্রি হিটে চার মারেন অ্যাডায়ার, মারেন এর পরের বলেও৷ সমীকরণটা দাঁড়ায় তিন বলে ৮ রানের। পরের তিন বলে মাত্র তিন রান দেন কাশ্মিরের তরুণ উমরান।
তাতেই চার রানের জয়োল্লাস মেতে ওঠে ভারত। নিশ্চিত করে হোয়াইটওয়াশ।
এএইচ