রেকর্ড জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের
প্রকাশিত : ২৩:৫১, ১৩ জুলাই ২০২২ | আপডেট: ০০:০৬, ১৪ জুলাই ২০২২
নিজেদের প্রিয় ফরম্যাটে ফিরে জ্বলে উঠল বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সহজ জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে রেকর্ড জয় পেয়েছে টাইগাররা।
শুরুতে বোলারদের দারুণ বোলিং। স্পিনাররা উইকেট নিলেন নিয়মিত বিরতিতে। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুটিয়ে দেওয়া গেল অল্প রানে। পরে ব্যাটাররাও খেললেন দেখেশুনে, ধীরস্থিরভাবে। ব্যাট-বলের এমন পারফরম্যান্সে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
ঠিক যখন জয়ের থেকে ১ রান দূরে ছিল বাংলাদেশ। তখন তামিমের লক্ষ্য ছিল আরেকটু বেশি। ৪ রান হলেই তিনি পেয়ে যাবেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৩তম ফিফটি। অবশেষে গুদাকেশ মোতির বল মিড অফ দিয়ে উড়িয়ে তামিম পেয়ে গেলেন ফিফটি। আর বাংলাদেশ ছুঁয়ে ফেলল ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ১০৯ রানের লক্ষ্য। ফলে ৯ উইকেটের বিশাল জয়ে বাংলাদেশ এক ম্যাচ বাকি থাকতেই জিতে নিল ওয়ানডে সিরিজ।
এর আগে মিরাজ-নাসুমের দাপটে প্রথমে ব্যাট করা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ১০৮ রানে অলআউট করেছে সফরকারী দলটি।
বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডেতে ১৪৯ রানে থেমেছিল উইন্ডিজ।
বুধবার গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হয়। যেখানে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
আগের ম্যাচে ওয়ানডে অভিষেক ঘটে নাসুম আহমেদের। অভিষেকে উইকেট না পাওয়ার আক্ষেপ আজ গুছিয়েছেন এ স্পিনার। উইকেটের খাতাটা যখন খুললেন নাসুম, তখন রীতিমতো অপ্রতিরোধ্যই হয়ে উঠেন। তিন ওভারের ব্যবধানে নেন তিন উইকেট, শেষ দুটো আবার একই ওভারে। তাতেই দারুণ বিপদে উইন্ডিজ।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে নাসুম আহমেদ প্রথম ওয়ানডে উইকেটটা পেয়েই গিয়েছিলেন। হোপের বিপক্ষে একটা কট বিহাইন্ডের আবেদন তুলেছিলেন, তাতে আম্পায়ার সাড়াও দিয়েছিলেন। তবে বিপত্তি বাধায় রিভিউ। তৃতীয় আম্পায়ারের রিভিউতে দেখা যায়, বলটা হোপের ব্যাটেই লাগেনি, শব্দ যা শোনা গিয়েছিল, আর স্নিকোমিটারের স্পাইক যা দেখাচ্ছিল, সেটা ব্যাট মাটিতে লাগার শব্দ। তাতে রিভিউতে সফলতা পায় উইন্ডিজ, হতাশায় পড়ে টাইগাররা। আগের ম্যাচে দারুণ কিপটে বোলিংই করছিলেন, ৮ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ১৬ রান। উইকেটের সুযোগও তৈরি করছিলেন, দুবার পেয়েও গিয়েছিলেন, সেই দুই বারও নাসুমের পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল উইন্ডিজের রিভিউ।
তবে আজ আর পারল না। ইনিংসের ১৪তম ওভারে দারুণ এক আর্মারে বিভ্রান্ত করে বোল্ড করেন শামার ব্রুকসকে। উইকেটের পর ইশারায় রিভিউ দেখাচ্ছিলেন নাসুম, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল, প্রতিপক্ষের রিভিউ কতটা হতাশায় রেখেছিল তাকে। এরপর দ্বিতীয় আর তৃতীয় উইকেটের দেখা পেলেন দ্রুতই। এক ওভার বাদে তিনি ফেরান বিপদজনক হয়ে উঠতে থাকা শেই হোপকে। তার লেন্থ বলকে স্লগ সুইপ করে সীমানাছাড়া করার চেষ্টা করেন হোপ, তবে সফলতা মেলেনি। শর্ট মিড উইকেটে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
এর এক বল পরই আবারও নাসুমের আঘাত। এবার তাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বিভ্রান্ত হন নিকলাস পুরান। তাতে ৪৫ রানে চার উইকেট খুইয়ে বসে উইন্ডিজ, যাতে নাসুমের একারই শিকার ৩ উইকেট। নাসুম আহমেদ ১০ ওভার বল করে ৪টি মেডেনসহ ১৯ রানে ৩ উইকেট লাভ করেন।
স্কোর: বাংলাদেশ ১১২/১ (২০.৪ ওভার), ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৮/১০ (৩৫ ওভার)
২০১৮ সাল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে কোন ওয়ানডে হারেনি বাংলাদেশ। এসময় টানা আটটি ওয়ানডে জিতেছে টাইগাররা। ঐ বছর যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো বাংলাদেশ। এরপর ২০১৯ ও ২০২১ সালে দু’টি সিরিজ যথাক্রমে, ২-১ ও ৩-০ ব্যবধানে জিতে টাইগাররা। এসময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেন্যু, বহুজাতিক টুর্নামেন্ট বিশ্বকাপ ও ত্রিদেশীয় সিরিজেও জয় পায় বাংলাদেশ।
এসএ/