যে কারণে কপাল পুড়ল বিজয়-তাসকিনের
প্রকাশিত : ১৯:৫৪, ১৬ জুলাই ২০২২
এনামুল হক বিজয় ও তাসকিন আহমেদ
উইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান সিরিজটি আইসিসি সুপার লিগের অংশ না হলেও ইতোমধ্যেই দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ দখল করেছে বাংলাদেশ। গায়ানায় তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে তাই বেঞ্চের শক্তি পরখ করার কথাই জানিয়েছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। একাদশে একাধিক পরিবর্তনের আভাস দিয়েছিলেন তারা।
বিশেষ করে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে দলে আসা এনামুল হক বিজয়ের একাদশে সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি ছিল অনেকটাই নিশ্চিত। তবে, রেকর্ড রান করেও এই ওয়ানডে সিরিজে খেলা হলো না বিজয়ের।
শনিবার অনুষ্ঠিত শেষ ম্যাচে মাত্র একটি পরিবর্তন নিয়েই খেলতে নামে বাংলাদেশ দল। যেখানে শরিফুলের স্থলে সুযোগ পেয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
অবশ্য এমন ইঙ্গিত আগেই পাওয়া যায় ডোমিঙ্গোর কথায়। একদিনের ব্যবধানে তার কণ্ঠের সুর বদলে যায় শুক্রবারই। গায়ানার টিম হোটেলে এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, টিম কম্বিনেশন তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একাদশে খুব বেশি পরিবর্তনের সুযোগ কম। আর বিজয় মূলত ডানহাতি ব্যাটার হওয়ার কারণে সুযোগ নাও পেতে পারেন। একাদশে বেশি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান রাখতে চান তিনি।
ম্যাচ খেলার সুযোগ না পাওয়া ক্রিকেটারদের তৃতীয় ম্যাচে পরখ করার বিষয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘ব্যাপারটা আসলে একটু কঠিন। বিজয়কে খেলাতে পারলে ভালো লাগবে আমার। তবে তাতে আরেকজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান বেড়ে যাবে। আমাদের এখানে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান প্রয়োজন। তাই ব্যাটিং লাইন আপে খুব বেশি পরিবর্তন সম্ভবত হবে না।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে-ই একমাত্র ব্যাটার, যে এখানে ৫০ ওভারের সিরিজে এখনও ম্যাচ খেলেনি। তবে সে ডানহাতি। আমার মতে, আমাদের লাইন আপে দরকার যতটা বেশি সম্ভব বাঁহাতি রাখা। সেখানে নাড়াচাড়া করার সম্ভাবনা তাই কমই।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়ানডে ফরম্যাটে রান করা বিজয়কে সুযোগ দেয়া হয়েছে টেস্ট, টি-টোয়েন্টিতে। ওয়ানডেতে তাকে বসিয়ে খেলানো হচ্ছে নাজমুল হোসাইন শান্তকে। এ ফরম্যাটে বারবার ব্যর্থ হওয়া শান্ত ১০ ম্যাচে ১৫০ রান করেছেন, ১৫.০০ গড়ে। নেই কোনো হাফ সেঞ্চুরি। আর এই ১৫০ রানের ৫৭ রানই করেছেন শেষ দুই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
বিজয়কে বসিয়ে শান্তকে খেলানোর যুক্তি তুলে ধরে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘বিজয় (এনামুল) অসাধারণ করেছে (ঢাকা লিগে) এবং দলে ফিরে এসেছে। তবে কোচ হিসেবে আমি ন্যয্য কাজটাই করতে চাই। যে ক্রিকেটার স্কোয়াডে আগে থেকে ছিল, তারই আগে একাদশে সুযোগ পাওয়া উচিৎ। বাইরে থেকে যে স্কোয়াডে আসবে, তাকে সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হবে।’
এমন ঈর্ষণীয় পারফরম্যান্স ও ধারাবাহিকতার পর দলে আসা, কিন্তু প্রথম সিরিজেই একবারও সুযোগ না পাওয়াটা বড় হতাশাই হবে বিজয়ের জন্য। রীতিমতো অবিচার বললেও ভুল হবে না।
শুধু বিজয় নন, আজকের ম্যাচে তাসকিন আহমেদও একাদশে নেই। কন্ডিশনের চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি স্পিনারই খেলাতে চেয়েছিলেন ডমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘পিচ কন্ডিশন দাবি করে বাড়তি স্পিনার। সেখানে আরেকজন পেসারকে সুযোগ দেয়া কঠিন। কারণ উইকেটে তাদের জন্য কিছু নেই। বাড়তি স্পিনারই তাই হয়তো খেলাতে পারি আমরা।’
তাসকিনকে দুর্ভাগা বলে এই প্রোটিয়া কোচ জানান, ‘তাসকিন ভীষণ রকমের দুর্ভাগা, কারণ কন্ডিশনই এরকম। এটা বোঝা মোটেও কঠিন নয়, এই উইকেটে যে পেসাররা কাটার করে এবং ডানহাতি ব্যাটারদের জন্য বল বাইরে নিয়ে যায়, তারাই শ্রেয়তর বিকল্প। তাসকিনের অফ কাটার ডানহাতি ব্যাটারের জন্য ভেতরে আসবে। বাঁহাতি পেসারের বল ডানহাতি ব্যাটারের জন্য বাইরে যাওয়া এখানে বেশি কার্যকর, এজন্যই আমরা একজন কার্যকর বাঁহাতি পেসার ও দুইজন বাঁহাতি স্পিনার খেলাচ্ছি।’
বাস্তবতা তুলে ধরে একাদশে ব্যাপক পরিবর্তনের বিপক্ষেই সব যুক্তি তুলে ধরেন ডোমিঙ্গো। কোচের ভাষায়, ‘আমরা সবাইকে খেলাতে চাই- এটা বলা যতটা সহজ, করা ততই কঠিন। ভারসাম্য ঠিক রেখে এই কন্ডিশনে খেলার জন্য উপযুক্ত দল গড়তে হবে আমাদের। অনেক পরিবর্তনের কথা ভাবা হলেও তাই হয়তো ততটা সম্ভব হবে না।’
এনএস//