জয়ে শুরু করতে চায় শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান
প্রকাশিত : ১৬:৪০, ২৭ আগস্ট ২০২২
দুই অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি ও দাসুন শানাকা
শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের ম্যাচ দিয়ে শনিবার থেকে মাঠে গড়াচ্ছে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৫তম আসরের। জয় দিয়ে এবারের এশিয়া কাপ মিশন শুরু করতে চায় ‘বি’ গ্রুপে থাকা শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। এ গ্রুপের তৃতীয় দল বাংলাদেশ।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই ম্যাচটি আফগানিস্তানের জন্য হতে যাচ্ছে স্মরণীয়। কারণ এদিনই যে শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামবে আফগানরা।
করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি এশিয়া কাপ। অবশেষে চার বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশিয়া কাপ। এবারের আসরটি হবার কথা ছিল শ্রীলঙ্কার মাটিতে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসছে এশিয়া কাপের আসর। তবে আয়োজক থাকছে শ্রীলঙ্কাই।
এবারের এশিয়া কাপ হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে, এমন পরিকল্পনা করেছে এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাটিতে হওয়া আসরটি হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।
২০১০ সালের পর স্বাগতিক হয়ে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ খেলার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। নিজেদের কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ২০১৪ সালের পর আবারও এশিয়া কাপ জয়ের সুযোগটা কাজে লাগাতো তরুণ দলটি। কিন্তু দুভার্গ্য লঙ্কানদের। দেশের রাজনৈতিক দুরাবস্থার কারণে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে পারছে না লঙ্কানরা। তারপরও মরুর দেশের শিরোপা জয়ের জন্য অন্যতম ফেভারিট শ্রীলঙ্কা।
তবে টি-টোয়েন্টিতে দলটির সাম্প্রতিক পারফরমেন্স আশানুরুপ নয়। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ থেকে বিদায় নেয় তারা। আর বিশ্বকাপের পর তিনটি দ্বিপাক্ষীক সিরিজ খেলে সবগুলোতেই হেরেছে লঙ্কানরা।
অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাঁচ ও তিন ম্যাচের সিরিজ এবং ভারতের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজ হারে শ্রীলঙ্কা। ১১টি ম্যাচে জয় মাত্র ২টিতে।
শ্রীলঙ্কার তারুণ্যনির্ভর এই দলটির গড় অভিজ্ঞতা খুব বেশি নেই। ব্যাটিংয়ে টপ-অর্ডারে কুশল মেন্ডিস, দানুশকা গুণাথিলাকা, দিনেশ চান্দিমালের উপর নির্ভর করে শ্রীলঙ্কার সাফল্য। তবে দলটির মূল শক্তি তাদের বোলিং। স্পিনে তাদের সবচেয়ে বড় তারকা ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা ডি সিলভা। তার সঙ্গে আছেন মাহিশ থিকশানা, প্রবীণ জয়াবিক্রমা ও জেফরি ভান্ডারসে।
তবে পেস বিভাগ শ্রীলঙ্কার মাথা ব্যথার কারণ ইনজুরিতে শেষ মুর্হূতে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেছেন পেসার দুসমন্থা চামিরা। তার পরিবর্তে লঙ্কানদের দলে সুযোগ হয়েছে পেসার নুয়ান থুসারার। পেস আক্রমণে নতুন মুখ হিসেবে আছেন- আসিথা ফার্নান্দো, দিলশান মধুশঙ্কা এবং মহেশ পাথিরানা। এই তিনজনের কারও অবশ্য আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে খেলার অভিজ্ঞতা নেই।
তবে এই দল নিয়েই এশিয়া কাপ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তিনি বলেন, ‘দলের সকলেই পরীক্ষিত। এশিয়া কাপ জয়ের ভালো সম্ভাবনা আছে আমাদের। ছেলেরা নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিতে পারলে শিরোপা জয় সম্ভব। এই দল নিয়ে আমি আশাবাদী।’
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার এশিয়া কাপের শিরোপা জয়ী দলটির নাম শ্রীলঙ্কা। তারা রানার্স-আপ হয়েছে ছয় বার। সর্বশেষ ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপ জিতেছিল লঙ্কানরা।
এশিয়া কাপের ১৪টি আসরে অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৫৪টি ম্যাচ খেলেছে শ্রীলঙ্কা। এরমধ্যে ৫০টি ওয়ানডেতে ৩৪ জয় ও ১৬টি ম্যাচে হেরেছে দলটি। আর ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে একটি জয়ের বিপরীতে হার ৩টিতে।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার মতই সাম্প্রতিক পারফরমেন্স আহামরি নয় আফগানিস্তানের। এ মাসেই আয়ারল্যান্ডের কাছে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে হেরেছে আফগানরা। তবে গত জুনে জিম্বাবুয়ের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল আফগানিস্তান। আর গত মার্চে বাংলাদেশ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিল আফগানিস্তান।
২০১৪ সালে প্রথম এশিয়া কাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে আফগানিস্তান। এরপর ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার এই টুর্নামেন্টে খেলে তারা। বলর মত কোনো সাফল্য নেই তাদের। এশিয়া কাপে ৯টি ওয়ানডে ম্যাচে ৩টিতে জয়, ৫টি হার ও ১টি ম্যাচ টাই করে আফগানিস্তান।
তবে আগের সব রেকর্ডকে মুছে এবারের এশিয়া কাপে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। তিনি বলেন, ‘এশিয়া কাপে আমাদের ভালো কোনো রেকর্ড নেই ঠিকই। তবে আমরা টি-টোয়েন্টিতে ভালো দল। সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে এবার ভালো কিছু করতে চাই।’
টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত মাত্র একবারই দেখা হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনে কোলকাতায় হওয়া ওই ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছিল লঙ্কানরা। তবে এবার ঘুরে দাঁড়াতে চায় আফগানরা।
শ্রীলঙ্কা একাদশ (সম্ভাব্য)
কুশল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), দানুশকা গুনাথিলাকা, চারিথ আসালাঙ্কা, ভানুকা রাজাপাকসে, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা/ আসেন বান্দারা, দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, চামিকা করুনারত্নে, মাহিশ থিকসানা, মাথিসা পাথিরানা, দিলশান মধুশঙ্কা।
আফগানিস্তান একাদশ (সম্ভাব্য)
হজরতউল্লাহ জাজাই, রহমানুল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), ইব্রাহিম জাদরান, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি (অধিনায়ক), সামিউল্লাহ শিনওয়ারি, রশিদ খান, করিম জানাত, নাভিন-উল-হক, মুজিব উর রহমান, নূর আহমেদ।
এনএস//