শ্রীলঙ্কাকে গুটিয়ে দেয়া নবিদের লক্ষ্য ১০৬
প্রকাশিত : ২১:৫০, ২৭ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ২২:০৬, ২৭ আগস্ট ২০২২
শুরু হয়ে গেল এশিয়া কাপের ১৫তম আসর। উদ্বোধনী ম্যাচেই মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান। কাগজে-কলমে লঙ্কানদের ফেভারিট মনে করা হলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে মোটেও পিছিয়ে নেই আফগানরা। যার প্রতিফলন দেখা গেল তাদের বোলিংয়েই। শানাকার দলকে গুটিয়ে দিল ১০৫ রানেই।
যাতে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় মাত্র ৫ রানেই তিন উইকেট খুইয়ে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। যে চাপ থেকে পরবর্তীতে আর কাটিয়ে ম্যাচে ফিরতে পারেনি দাসুন শানাকার দল। নবি বাহিনীর উপর্যুপরি আক্রমণে আর আঘাতে জর্জরিত ও বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে লঙ্কা।
যদিও ৩১ বলে ৪৪ রানের দারুণ একটা জুটি গড়ে সেই চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চালান দানুশকা গুনাথিলাকা ও ভানুকা রাজাপাকশে। তবে আফগান সাড়াশি বোলিংয়ের মুখে ত্রয়োদশ ওভারেই মাত্র ৬৯ রান তুলতেই ৮টি উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা।
শুরুর চাপে খেই হারিয়ে ফেলা শ্রীলঙ্কান ব্যাটাররা মূলত ক্রিজে তাড়াহুড়া আর অযথা বিগ শট খেলতে গিয়েই নিজেদের বিপদ ডেকে আনেন। অনেকটা নিজেদের পায়ে কুড়াল মারার মত। ১৫তম ওভারে ৭৫ রান তুলতেই ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলা লঙ্কানরা শেষ পর্যন্ত গুটিয়ে যায় একশর নিচেই।
এদিন শুরুতেই জোড়া আঘাত হেনে শ্রীলঙ্কার দুটি উইকেট তুলে নিলেন আফগান পেসার ফজলহক ফারুকি। নিজের ও ম্যাচের প্রথম ওভারেই দারুণ ইনসুইংয়ে বিভ্রান্ত করেন লঙ্কান ব্যাটারদের। শেষ দুই বলে যথাক্রমে কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালঙ্কাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান বাঁহাতি এই পেসার।
যাতে মাত্র প্রথম ওভারেই দুই দুটি উইকেট খুইয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। মেন্ডিস ২ রানে এবং আসালঙ্কা শূন্য রানে আউট হন। যদিও মেন্ডিসকে সরাসরি আউট দেননি আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে স্পষ্ট উইকেট আদায় করে আফগানিস্তান।
তবে দ্বিতীয় ওভার করা নাভিন উল হকের শেষ বলে পাথুম নিসাঙ্কাকে দেয়া আম্পায়ারের আউটটি হতাশ করে সবাইকে। ব্যাট-বলের কোনো কানেকশন না ঘটলেও আউট হয়েই মাঠ ত্যাগ করেন নিসাঙ্কা। রিভিউতেও সেই আউট বহাল থাকে।
যদিও আলট্রাএজে কোনো কিছুই দেখা যায়নি। তারপরও টিভি আম্পায়ার আউট দেন লঙ্কান ব্যাটারকে। ফলে তাকে ফিরতে হয় মাত্র ৩ রান করেই। আর এর ফলে মাত্র পাঁচ রানেই ৩টি উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা।
এরপর একে একে সাজঘরে ফেরেন গুনাথিলাকা ১৭, হাসারাঙ্গা ২, শানাকা ০, থিকশানা ০, পাথিরানা ৫ রান করে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন ভানুকা রাজাপাকশে। তার ২৯ বলের এই ইনিংসে ছিল পাঁচটি চারের সঙ্গে ইনিংসের একমাত্র ছয়ের মার।
এছাড়া শেষ উইকেটে শেষ ব্যাটার দিলশান মধুশঙ্কাকে নিয়ে লড়াই করা চামিকা করুনারত্নের উইলো থেকে আসে ৩৮ বলে ৩১ রান। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন তিনি। যাতে দুই বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। দুই বলে ১ রান নিয়ে চামিকাকে প্রায় পাঁচটি ওভার সঙ্গ দেন মধুশঙ্কা।
আফগান বোলাররা এদিন দারুণ বোলিং করেছেন প্রত্যেকেই। এদের মধ্যে ফারুকি ৩টি এবং মুজিব ও নবি ২টি করে উইকেট লাভ করেন। আর একটি করে উইকেট নেন নাভিন উল হক। ফিল্ডাররাও ছিলেন দুর্দান্ত, দুটিই রান আউট করেন তারা।
যদিও ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল অন্যতম সেরা তারকা বোলার রশিদ খান। নিজের কোটা পূরণ করে মোটে ১২টি রান কনসিভ করলেও একটিও উইকেট পাননি এই লেগ স্পিনার।
এর আগে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া এ ম্যাচে টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আফাগানিস্তান। ফলে রাতের ডিউ ফ্যাক্টর ম্যাচে বাধ্য হয়েই আগে ব্যাটিংয়ে নামতে হয় লঙ্কানদের।
শ্রীলঙ্কা একাদশ
দানুশকা গুনাথিলাকা, পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), চারিথ আসালঙ্কা, ভানুকা রাজাপাকসে, দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, চামিকা করুনারত্নে, মাহিশ থিকসানা, মাথিসা পাথিরানা, দিলশান মধুশঙ্কা।
আফগানিস্তান একাদশ
হজরতউল্লাহ জাজাই, রহমানুল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), ইব্রাহিম জাদরান, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি (অধিনায়ক), রশিদ খান, করিম জানাত, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, নাভিন-উল-হক, মুজিব উর রহমান, ফজলহক ফারুকি।
এনএস//