উত্তজনাপূর্ণ এশিয়া কাপে ভারতের মধুর প্রতিশোধ
প্রকাশিত : ০০:৩৯, ২৯ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ১৬:১৬, ২৯ আগস্ট ২০২২
ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতের জয় নিশ্চিতের মুহূর্তে হার্দিক
গত বছর এই দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারতে হয়েছিল ভারতকে। বছর ঘুরে সেই একই মাঠে এবার এশিয়া কাপের ম্যাচে সম্মুখ সমরে দুই দল। তুমুল উত্তেজনায় পূর্ণ ও নাটকীয় এই ম্যাচে ৫ উইকেটের জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিল ভারত।
প্রতিশোধের এই ম্যাচে আগে ব্যাট করা পাকিস্তানকে ১৪৭ রানে গুটিয়ে দেয় ভারত। জবাবে ব্যাট করেত নেমে ২ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটের বিনিময়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৪৮ রান তুলে নেয় ভারত।
১৯.৪ ওভারে নওয়াজের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে জয় এনে দেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৭ বলে ৩৩ রান করে অজেয় থাকেন হার্দিক। ১ বলে ১ রান করে তাকে সঙ্গ দেন দীনেশ কার্তিক।
শেষ দুই ওভারে ২১ রান দরকার ছিল ভারতের। মূলত ১৯তম ওভারটিই ছিল ম্যাচের মূল টর্নিং পয়েন্ট। ওভারে হ্যারিস রউফের করা ওই ওভারে ৩টি চার মারেন হার্দিক পান্ডিয়া। ওই ওভারে ওঠে ১৪ রান। যার ফলে জয়ের জন্য শেষ ওভারে ভারতের দরকার পড়ে মাত্র ৭ রান।
যদিও শেষ ওভারের প্রথম বলে জাদেজাকে আউট করে একটা উত্তেজনা তৈরি করেন মোহাম্মদ নওয়াজ। জাদেজা ২৯ বলে ৩৫ রান করে আউট হলেও মোহাম্মদ নওয়াজের করা শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে প্রতিশোধের জয় তুলে নেন পাণ্ডিয়া। অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ৩৩ রান নিয়ে। পাঁচ উইকেটের জয় তুলে নেয় ভারত। দুই বলে হাতে রেখেই।
এর আগে ১৪৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় ভারত। অভিষিক্ত পেসার নাসিম শাহের দ্বিতীয় বলেই স্ট্যাম্প এলোমেলো হয়ে যায় লোকেশ রাহুলের। ওই একটি বল খেলেই ভারত ওপেনার ফেরেন শূন্য হাতেই। যাতে এক রানেই প্রথম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রোহিতের দল।
এরপর কোহলি ৩৪ বলে ৩৫, রোহিত ১৮ বলে ১২, যাদব ১৮ বলে ১৮ করে আউট হলে হারের শঙ্কায় পড়ে নীল শিবির। দলীয় ৮৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে ভারত যখন চাপে, সে অবস্থায় জাদেজার সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে চাপমুক্ত করার কাজ করেন মারকুটে হার্দিক পাণ্ডিয়া।
২৯ বলে ৫২ রান তুলে মূলত কাজের কাজটি করে গেছেন এই জুটি। ম্যাচ সেরা হন ২৫ রানে ৩ উইকেট ও ১৭ বলে ৩৩ রান করা হার্দিক পাণ্ডিয়াই।
এর আগে ভারতীয় বোলারদের তোপের মুখে এক বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তার ৪২ বলের এই ইনিংসে ছিল চারটি চারের সঙ্গে একটি ছয়ের মার। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮ রান আসে ইফতেখারের ব্যাট থেকে। তার ২২ বলের ইনিংসে ছিল দুই চার ও একটি ছয়ের মার।
এছাড়া শেষ দিকে ঝড় তোলা শাহনেওয়াজ দাহানির মাত্র ৬ বলে ১৬ এবং হারিস রউফের ৭ বলে ১৩ রানের ক্যামিওতে কিছুটা হলেও লড়াই করার মতো ওই পুঁজি পায় পাকিস্তান।
এদিন পাকিস্তানের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন দুই ভারতীয় বোলার হার্দিক পাণ্ডিয়া ও ভুবনেশ্বর কুমার। এই দুজনে মাত্র ৫১ রান দিয়ে নেন ৭টি উইকেট। এর মধ্যে কুমার ২৬ রান দিয়ে নেন ৪টি এবং পাণ্ডিয়া ২৫ রানে নেন ৩টি উইকেট।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে যেমন পাকিস্তানি বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঘায়েল হয়েছিল ভারতীয় ব্যাটারা, এদিনও তেমনি ভারতের বোলারদের অনবদ্য বোলিংয়ে কুপোকাত হয় পাকিস্তানের ব্যাটাররা। সেদিন ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দিয়েছিলেন শাহিন আফ্রিদিরা। আর এদিন বাবর আজমদের কাঁপিয়ে দেন হার্দিক-ভুবিরা।
অন্যদিকে, এক নাসিম শাহ কিছুটা প্রভাব বিস্তার করতে সামর্থ হলেও আফ্রিদির ওভাবটা ঠিকই বুঝতে দিয়েছেন অন্যরা। ফলে ম্যাচ ধরে রাখতে পারেনি পাকিস্তান। মোহাম্মদ নওয়াজ ৩টি উইকেটে নিলেও রান দেন ৩৩টি। ইনজুরিতে পড়া তরুণ নাসিম শাহ ২ উইকেট নেন ২৭ রানে।
এনএস//