ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

চ্যাম্পিয়ন হয়েই রেকর্ডবই এলোমেলো করল শ্রীলঙ্কা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১১, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে ১৫তম এশিয়া কাপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় পরেছে শ্রীলঙ্কা। এ নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ বার এশিয়ার সেরা হলো লঙ্কানরা। ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারায় তারা। এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেই রেকর্ড বইয়ের হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিল শ্রীলঙ্কা।

রোববার রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ। 
পরিসংখ্যান বলছে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ফাইনালে এই ভেন্যুতে প্রথমে ব্যাট করা দল জয় পেয়েছে মাত্র তিনবার। আর হেরেছে ১৮ বার। কিন্তু এশিয়া কাপের ফাইনাল জিতে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এই ফাইনালে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭০ রান করে তারা। এরপর পাকিস্তানকে ১৪৭ রানে অলআউট করে দেয় শানাকার দল। তাই এই ফরম্যাটে এবং এই ভেন্যুতে তৃতীয় দল হিসেবে প্রথমে ব্যাট করে ম্যাচ জিতল শ্রীলঙ্কা। 

এর আগে এই ভেন্যুতে প্রথমে ব্যাট করে ভারত দু’বার ও নিউজিল্যান্ড একবার জয় পায়। এবার সেই তালিকায় জয়ী তৃতীয় দল হিসেবে নাম তুলল শ্রীলঙ্কা।

জয়ী দলে নাম লেখালেও, সবচেয়ে কম সংগ্রহ নিয়ে দুবাইয়ের এই ভেন্যুতে প্রথমে ব্যাট করে ম্যাচ জিতল শ্রীলঙ্কা। 
ভারত ২১২ ও ১৯২ রানের সংগ্রহ নিয়ে ম্যাচ জিতেছিল। দুটিই এবারের এশিয়া কাপে। আর ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭২ রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জিতে নিউজিল্যান্ড। 

পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ৮.৫ ওভারে ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। তারপরও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিততে পারে তারা। টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমে ব্যাট করে দ্রুত পাঁচ উইকেট হারিয়ে আগে কখনও ম্যাচ জিততে পারেনি শ্রীলঙ্কা। 

তবে অতীতে দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত পাঁচ উইকেট হারিয়েও ম্যাচ জয়ের রেকর্ড আছে লঙ্কানদের। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে ১৭৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৪.৩ ওভারে ৪০ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতেছিলো লঙ্কানরা।

যদিও হার দিয়েই এবারের এশিয়া কাপ শুরু করে শ্রীলঙ্কা। তবে এরপর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে লঙ্কানরা। এর আগে শ্রীলঙ্কা টি-টোয়েন্টিতে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছিল ২০১৩-১৪ মৌসুমে। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে জয়ের ধারায় ছেদ পড়ে লঙ্কানদের।

বিশ্বের তৃতীয় দল হিসেবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের কোনও টুর্নামেন্টের ফাইনালে রানের ব্যবধানে জিতল শ্রীলঙ্কা। এর আগে ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত ৫ রানে হারায় পাকিস্তানকে এবং ২০১২ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৬ রানে হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে। 

এদিকে এশিয়া কাপের ফাইনাল জিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা পাঁচটি টি-টোয়েন্টি জিতল শ্রীলঙ্কা। সবগুলোই অধিনায়ক দাসুন শানাকার অধীনে। ২০১৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিলো শ্রীলঙ্কা। তখনও অধিনায়ক ছিলেন শানাকা। এই টানা ম্যাচ জয়ের আগে, আগের ১৮ ম্যাচে মাত্র ৫টি জয় আছে শ্রীলঙ্কার।

সর্বশেষ জয় পাওয়া টানা পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারবারই পাকিস্তানকে অলআউট করেছিলো শ্রীলঙ্কা। তার আগের ১৮ ম্যাচের মাত্র দু’বার পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিতে পারে লঙ্কানরা।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর দু’টি হাফ-সেঞ্চুরির জুটি গড়ে শ্রীলঙ্কা। ষষ্ঠ উইকেটে ৫৮ ও সপ্তম  উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৫৪ রানের জুটি গড়ে শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এমন নজির এর আগে দু’বার হয়েছিল। 

২০১৫ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪০ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে ৬১ ও অষ্টম উইকেটে ৫৮ রান তুলেছিল পাকিস্তানের ব্যাটাররা। আর এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৭১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে ৫৩ ও সপ্তম উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়ে নরওয়ের ব্যাটাররা।

ফাইনালে ব্যাট হাতে ৩৬ ও বল হাতে ৩ উইকেট নেন শ্রীলঙ্কার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের কোনও ফাইনালে ব্যাট হাতে ৩০ রানের বেশি ও বল হাতে ৩ উইকেট নেয়ার দ্বিতীয় নজির গড়লেন হাসারাঙ্গা। এর আগে ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে অপরাজিত ৩৪ রান ও বল হাতে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কার্লোস ব্র্যাথওয়েট।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনাল জয়ের নায়ক ভানুকা রাজাপাকসে। পাঁচ নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে অপরাজিত ৭১ রান করেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের কোনও ফাইনাল ম্যাচে পাঁচ বা তার নীচের দিকের ব্যাটার হিসেবে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লেন রাজাপাকসে। 

এর আগে এই রেকর্ডটি ছিলো কাতারের তামুর সাজ্জাদের। ২০১৯ সালে পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় ফাইনালে সৌদি আরবের বিপক্ষে ছয় নম্বরে নেমে ৬৮ রান করেছিলেন সাজ্জাদ।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি