আশা বাঁচিয়ে রাখতে দুরন্ত জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১৮:৪৩, ২৯ অক্টোবর ২০২২ | আপডেট: ১৮:৫৯, ২৯ অক্টোবর ২০২২
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগের ম্যাচের দুঃস্মৃতি ভুলে নতুনভাবে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার নিয়ে ঐতিহাসিক ব্রিজবেনে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে দুরন্ত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখতে এ ম্যাচে জয় পেতে মরিয়া সাকিবের দল।
বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরসারি সম্প্রচার করবে বিটিভি, গাজী টিভি ও টি-স্পোর্টস চ্যানেল।
সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৯ রানে জয়ী হওয়া বাংলাদেশ দল পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা কাছে ১০৪ রানে রেকর্ড ব্যবধানে হারের লজ্জা পায়। রোববার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও হার সেমিফাইনালে খেলার আশা কঠিন করে দিতে পারে টাইগারদের।
ওই বড় হারের ধাক্কা নিয়ে বাংলাদেশ দল তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামলেও আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকেই মাঠে নামবে জিম্বাবুয়ে। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট পাকিস্তানের বিপক্ষেই যে আগের ম্যাচে ১ রানের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে আফ্রিকান দেশটি।
ক্রিকেটের কোনও ফরম্যাটে বাংলাদেশের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের তুলনা হয় না বলেই ধারণা করা হচ্ছিলো কয়েক মাস আগেও। কিন্তু এই ফরম্যাটে হঠাৎ করেই পূর্ব আফ্রিকান দেশটি জায়ান্ট কিলার হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।
বছরের পর বছর সংগ্রাম, বিভিন্ন সমস্যা এবং দুর্বল ক্রিকেট সংস্কৃতির পরও পরিকল্পনার সাথে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক শ্রম দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সেই পরিশ্রমের ফলও পাচ্ছে তারা। মাত্র তিন মাস আগে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশকে হারানোর পর থেকেই তাদের ক্রিকেট যেন নতুন উদ্যেমে ছুটছে।
এরপরও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে খেলতে হয়েছে জিম্বাবুয়েকে। তবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে দলটি। যদিও মূল পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে অল্পের জন্য হারের লজ্জা থেকে রক্ষা পায় জিম্বাবুয়ে। বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তবে পরের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দলটির পারফরমেন্স প্রচ্ছন্ন সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের জন্য।
তবে জিম্বাবুয়ের দুর্দান্ত জয় ও আগের ম্যাচে বাংলাদেশের হারে চিন্তিত নন দলের কারিগরি পরামর্শক শ্রীধরন শ্রীরাম। তিনি জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পরও মানসিকভাবে শক্ত আছেন তারা।
শ্রীরাম শনিবার বলেন, ‘আমি মনে করি দলের মনোবল ভাল অবস্থায় আছে। আমরা জানি যে, ওইদিন দক্ষিণ আফ্রিকা সত্যিই ভালো খেলেছে। তারা খুব শক্তিশালী ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিন নম্বরে নেমে দলকে এমন শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন রাইলি রুশো। কুইন্টন ডি কক এবং রুশোর কাছ থেকে দারুণ ইনিংস দেখেছি আমরা। আমাদের এখান থেকেই শিক্ষা নিতে হবে।’
শ্রীরাম আরও জানান, তার দল ভালো অবস্থায় আছে এবং আগামীকাল (রোববার) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লড়তে প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালের পর অর্থাৎ দীর্ঘ ১৫ বছর পর সুপার টুয়েলভে আমরা প্রথম ম্যাচ জিতেছি। আমি মনে করি এটা সত্যিই চমৎকার কিছু। আমারা মনে করি, দলের ছেলেরাই এটা এনে দিয়েছে। দলের জন্য ছেলেদের ভালো প্রচেষ্টা এবং পুরো কৃতিত্ব তাদেরই ছিলো।’
শ্রীরাম আরো বলেন, ‘আমরা এক সাথে অনেক নয়, একটি ম্যাচ নিয়েই ভাবতে চাই। বেশি ভাবতে চাই না। আমাদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ জিম্বাবুয়ে। আমাদের অবশ্যই একটি পরিকল্পনা আছে। আমরা জিম্বাবুয়েকে সম্মান করছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ পারফরমেন্স ছিলো তাদের। আমরা ওই ম্যাচের প্রতিটি বল দেখেছি এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে তারা যেভাবে খেলেছে- সেটা ছিলো অবিশ্বাস্য।’
এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ১৯ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে। জয়ের পাল্লা ভারী টাইগারদেরই। ১২টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের জয় ৭টি।
সব মিলিয়ে ১৪১টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে ৪৮টি ম্যাচে জিতেছে, ৯০টিতে হেরেছে। বাকি তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য):
নাজমুল হোসাইন শান্ত, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), আফিফ হোসাইন, মোসাদ্দেক হোসাইন, নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), মেহেদি মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদ।
জিম্বাবুয়ে একাদশ (সম্ভাব্য):
ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), ওয়েসলি মাধেভেরে, মিল্টন শুম্বা, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, রেজিস চাকাভা (উইকেটরক্ষক), রায়ান বার্ল, লুক জংওয়ে, ব্রাড ইভান্স, রিচার্ড এনগারাভা ও ব্লেসিং মুজারাবানি।
এনএস//