ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

‘মেসিকে বলেছি, আর্জেন্টিনাকে হারিয়েই বিশ্বকাপ জিতব’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫৬, ১৭ নভেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১০:৫৩, ১৭ নভেম্বর ২০২২

নেইমার ও মেসি

নেইমার ও মেসি

ক্লাব ফুটবলে তারা সতীর্থ হলেও আন্তর্জাতিক ফুটবলে একে অপরের প্রতিপক্ষ। আবার চিরশত্রুও বলা যায়। অনেকটা ক্রিকেটের ভারত-পাকিস্তানের মতো, বরং তার চেয়েও বেশি! ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বলে কথা!

ক্লাব ফুটবলে বিরতি দিয়ে এখন যে যার মতো নিজ নিজ জাতীয় দলে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেইমার দ্য জুনিয়র ও লিওনেল মেসি। কারণ, কাতার বিশ্বকাপ যে আসন্ন। রোববার রাতেই পর্দা উঠছে ২২তম ফুটবল বিশ্বকাপের। আর এই আসরেই নাকি আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে শিরোপা জিতবে ব্রাজিল! মেসিকে এমনটাই বলেছেন নেইমার।

যদিও কথাটা মজার ছলেই বলা। পিএসজির হয়ে খেলার সময় জাতীয় দল নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না তারা। কিন্তু খুনসুটি তো করাই যায়! টেলিগ্রাফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নেইমার বলেন, ‘আমরা বিশ্বকাপ নিয়ে খুব একটা আলোচনা করি না, তবে মাঝেমধ্যে মজা করি যে, ফাইনালে একে অপরকে গুঁড়িয়ে দেবো। আমি মেসিকে বলেছি যে, তোমাদের বিপক্ষে জিতেই আমি চ্যাম্পিয়ন হব এবং আমরা দুজনেই সেটা নিয়ে হাসাহাসি করেছি।’

মেসির সঙ্গে যতই মজা করেন না কেন, বিশ্বকাপে নেইমারের লক্ষ্যটা একই থাকছে। গত দুই আসরে তার ওপরই সবচেয়ে বড় ভরসা ছিল ব্রাজিলের। কিন্তু দু’বারই ফিরতে হয়েছে হতাশায় ডুবে। সামনে এবার আরেকটা সুযোগ। 
কাতারে এবার ২১৪ মিলিয়ন ব্রাজিলিয়ান ও বিশ্বের নানান অংশের ব্রাজিল সমর্থকদের ২০ বছরের আক্ষেপ মেটাতে চান নেইমার। ব্রাজিল সুপারস্টার বলেন, ‘যেদিন থেকে ফুটবল বুঝতে শুরু করেছি, সেদিন থেকেই বিশ্বকাপ আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। এখন আরেকটি সুযোগ পেয়েছি, আশা করি এবার জিততে পারব।’ 

পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করে পিএসজি তারকা বলেন, ‘১৯৯৪ বিশ্বকাপের ভিডিওই দেখেছি শুধু, তবে আমি এখনো রোমারিওর কিছু মুহূর্ত উপভোগ করি, যাকে আমি খুবই পছন্দ করি। আমার আদর্শ অনেকেই। অবশ্যই পেলে, রোনালদো, রোমারিও, কাকা, রোনালদিনহো। তারা সবাই আমার প্রিয়।’

ব্রাজিলের হয়ে এখন পর্যন্ত ১২১ ম্যাচে ৭৫ গোল করেছেন সাবেক বার্সেলোনার এই ফরোয়ার্ড। আর মাত্র তিনটি গোল করলেই কিংবদন্তি পেলেকে ছাড়িয়ে ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হবেন তিনি। 

যদিও বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে আকার-ঈঙ্গিতের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন যে, এটিই হতে যাচ্ছে তার শেষ বিশ্বকাপ। এবারও যদি সফল না হন, তাহলে কি ক্যারিয়ারে অপূর্ণতা থেকে যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে সজোরেই ‘না’ শব্দটি উচ্চারণ করেন নেইমার। 

৩০ বছর বয়সী এই তারকা বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারে আমি এমন কিছু অর্জন করেছি, যা কোনোদিন কল্পনাতেও ভাবিনি। তাই আজই যদি ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়, তাহলেও বলব- আমি বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ।’ 

ব্রাজিলের ১০ নম্বর জার্সিটি পাওয়ার জন্য বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয় সবাইকেই। নেইমারকেও তা-ই করতে হয়েছে। তবে এই জার্সিই আবার প্রত্যাশার অদৃশ্য চাপ নিয়ে হাজির হয়। কিন্তু সব ছাপিয়ে সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করতে পছন্দ ব্রাজিল ফরোয়ার্ডের, ‘বিশ্বে পরিচিত, ১০ নম্বর জার্সি এবং যা কিছুর সঙ্গে আমার নাম জড়িয়ে আছে- সেই চাপ সত্ত্বেও আমি একজন সাধারণ মানুষ। চেষ্টা করি মাটির সঙ্গে মিশে থাকার।’ 

আগামী ফেব্রুয়ারিতে ৩১-এ পা দেবেন নেইমার। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনা সামলানোর তরিকাটাও তাই ভালোভাবে আয়ত্তে এনেছেন তিনি, ‘জীবনে যত কিছুরই অভিজ্ঞতা হোক না কেন, সেগুলো থেকে আপনি শিখতে পারবেন। এমনকি আপনার ভুল থেকেও। কেউই জন্মগতভাবে নিখুঁত হয় না এবং কেউ নিখুঁত হতেও পারে না। জীবনে আপনার যত বাধা আসবে ততই আপনি বড় হবেন। তাই যখন বয়স ২২ বা ২৩ বছর ছিল, সেই তুলনায় আজ এসব সহজভাবেই সামলাতে পারি।’

বিশ্বকাপ সবসময়ই চমক নিয়ে আসে। তেমনই এক চমকের অপেক্ষায় আছেন নেইমারও। বললেন, ‘বিশ্বকাপ চমকে ভরপুর। এমন দল যাদের ওপর খুব বেশি প্রত্যাশা থাকে না, কিন্তু তারা টুর্নামেন্টে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যায়। তবে আমি বিশ্বাস করি আর্জেন্টিনা, জার্মানি, স্পেন ও ফ্রান্স ফেভারিট। আমি মনে করি এই চার দলের সঙ্গে ব্রাজিলও ফাইনালে পৌঁছাতে পুরোপুরি সক্ষম।’

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি