ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৬ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মেসিময় জয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা, ব্যর্থ মনোরথে মদ্রিচ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৩৫, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২

Ekushey Television Ltd.

লড়াইটা ছিলো এলএম-টেন বনাম এলএম-টেন। লিওনেল মেসি বনাম লুকা মদ্রিচের। দুই দলের দুই সেরা ফুটবলারের। সেই লড়াইয়ে মদ্রিচকে হারালেন মেসি। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে সবচেয়ে ভালো ফুটবলটা যদিও খেললেন সেই মদ্রিচই। 

কিন্তু ফুটবলে গোলটাই সব। সেখানে মেসি গোল করলেন, গোল করালেন। ৩-০ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল আর্জেন্টিনা। দলের প্রথম গোলটি পেনাল্টি থেকে করলেন মেসি। বাকি দু’টি গোল হুলিয়ান আলভারেজের।

ব্রাজিলের বিপক্ষে রক্ষণাত্মক খেলে বাজিমাত করেছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু আর্জেন্টিনার বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেললেন জ্লাতকো দালিচের ছেলেরা। সেখানেই ভুল করলো ক্রোয়েশিয়া। প্রথম ৩০ মিনিট বলের দখল বেশি রাখলেও, গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করলেও গোলের মুখ খুলতে পারলো না তারা। 

অন্যদিকে প্রথম ৩০ মিনিট কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও শেষ ১৫ মিনিটে খেলার চিত্রটাই বদলে দিলো আর্জেন্টিনা। জোড়া গোল করে এগিয়ে গেলেন মেসিরা। সেখান থেকে আর ফিরতে পারলো না ক্রোয়েশিয়া। এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে ভালো ফুটবলটা সেমিফাইনালেই খেললেন মেসিরা। আক্রমণ থেকে রক্ষণ, সবাই নিজের কাজটা করলেন ঠিকমতো।

মেসিকে অন্য দলের মতো ক্রোয়েশিয়াও জোনাল মার্কিংয়ে রেখেছিল। তিনি বল ধরলেই তিন থেকে চার জন ফুটবলার ছুটে আসছিলেন। কিন্তু তার পরেও মেসিকে বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারলো না ক্রোয়াটরা। তার একটা কারণ হতে পারে ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার ধকল। 

অন্যদিকে, যত সময় এগোলো, ততোই সেরা ফর্মে ফিরলেন মেসি। গোলের সুযোগ তৈরি করলেন। গোল করালেন। আবার রক্ষণকেও সাহায্য করলেন। ৯০ মিনিট সমানে পরিশ্রম করলেন। বুঝিয়ে দিলেন, নিজের শেষ বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সবকিছু করতে তৈরি তিনি।

খেলার শুরুটা অবশ্য ভালো করেছিল ক্রোয়েশিয়াই। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে রক্ষণাত্মক পরিকল্পনা করে নেমেছিলেন লুকা মদ্রিচরা। কিন্তু আর্জেন্টিনার বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ফুটবল শুরু করেন তারা। ক্রোয়েশিয়া প্লেসিং ফুটবল খেলছিল। মেসিদের পায়ে বল থাকলেই তাড়া করছিলেন মদ্রিচরা। ফলে বলের দখল বেশি রাখতে পারছিল না আর্জেন্টিনা। দুই প্রান্ত ব্যবহার করে আক্রমণে উঠছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু সজাগ ছিলো আর্জেন্টিনার রক্ষণ। ফলে গোলের মুখ খুলতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া।

৩৩ মিনিটের মাথায় খেলার গতির বিপরীতে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। বক্সের মধ্যে আলভারেজকে ফাউল করেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট থেকে গোল করতে ভুল করেননি মেসি। গোলরক্ষকের বাঁ দিক দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন তিনি। 

এনিয়ে এবারের বিশ্বকাপে নিজের পঞ্চম গোল করে ফেললেন মেসি। ৬ মিনিট পরে বিস্ময় গোল আরভারেজের। প্রতি আক্রমণ থেকে মেসির পাস থেকে নিজেদের অর্ধে বল ধরে প্রায় ৫০ গজ দৌড়ে যান তিনি। বক্সের বাইরে তিন ডিফেন্ডারকে চমক দিয়ে বক্সে ঢোকেন। লিভাকোভিচকে পরাস্ত করে গোল করেন আলভারেজ। 

তবে এই গোলের ক্ষেত্রে ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডারদের ভুল চোখে পড়ার মতো। একাই ঢুকে গোল করেন আলভারেজ। তাকে আটকাতে পারেননি ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডাররা।

প্রথমার্ধে অবশ্য আরও একটা গোল করতে পারত আর্জেন্টিনা। ৪২ মিনিটের মাথায় মেসির কর্নার থেকে জোরালো হেড করেন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। কোনোরকমে সেই বল বাঁচান লিভাকোভিচ। প্রথমার্ধে আর গোল আসেনি। ২-০ এগিয়ে সাজঘরে যান মেসিরা।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় ক্রোয়েশিয়া। আক্রমণে লোক বাড়িয়ে দেন কোচ দালিচ। কিন্তু নিজেদের রক্ষণ মজবুত রাখে আর্জেন্টিনা। ফলে গোলের মুখ খুলতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। রক্ষণাত্মক খেললেও হঠাৎই প্রতি আক্রমণ থেকে উঠছিল আর্জেন্টিনা। সময় যত গড়াচ্ছিল, চাপ ততো বাড়ছিল ক্রোয়েশিয়ার উপর। লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে নামিয়ে তিন ব্যাকে চলে যান আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। রক্ষণ আরও মজবুত করে দেন তিনি।

৭০ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনার হয়ে ম্যাচের দ্বিতীয় গোল করেন আলভারেজ। তবে গোলটি যতটা না তার, তার চেয়ে অনেক বেশি মেসির। ডান প্রান্তে সাইড লাইনের কাছে বল ধরে ডিফেন্ডারকে ঘোল খাইয়ে এগিয়ে যান মেসি। পায়ের কাজ দেখাতে দেখাতে বক্সে ঢোকেন। তার পরে বল ঠেলে দেন অরক্ষিত আলভারেজের কাছে। ডান পায়ে গোল করে ব্যবধান বাড়ান আলভারেজ।

৮০ মিনিটের মাথায় মদ্রিচকে তুলে নেন কোচ দালিচ। নিজের শেষ বিশ্বকাপ থেকে খালি হাতেই ফিরতে হলো তাকে। আগের বার ফাইনালে গিয়েও হেরেছিলেন। এবার সেমিফাইনালেই শেষ হয়ে গেল লড়াই।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি