ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

চিরনিদ্রায় শায়িত ফুটবলের রাজা পেলে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৮, ৪ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ০৮:৫৪, ৪ জানুয়ারি ২০২৩

সাও পাওলোতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ফুটবলের রাজা পেলে। অ্যাকুউমেনিকা মেমোরিয়াল নেক্রোপোল কবরস্থানের ১৪তলা ভবনের নবম তলায় সমাহিত করা হয় ফুটবলের মহানায়ককে। বিদায়বেলায় লাখো ভক্তের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন এই কিংবদন্তি। 

চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার আগে প্রিয় ক্লাব সান্তোষের আঙ্গিনা ভিলা বেলমিরোতে নিয়ে যাওয়া হয় ফুটবলের কালো মানিককে। বিদায়বেলায় সেখানেই তাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানান সমর্থকরা।

এ যাত্রায় সামিল হয়েছিলেন দেশটির সাবেক ও বর্তমান ফুটবলাররাও। শেষবারের মতো প্রিয় তারকাকে বিদায় জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভাও। কঠিন সময়ে পেলের পরিবারকে সান্ত্বনা যোগান তিনি।

লুলার শ্রদ্ধা জানানোর আগে–পরে শেষবারের মতো পেলেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আরও কিছু সাধারণ মানুষ। এর কিছুক্ষণ পরেই পূর্বঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী পেলের মরদেহ নিয়ে গাড়ি রওনা দেয় সমাধিস্থলের দিকে।

কোলন ক্যানসার ও বার্ধক্যজনিত আরও অনেক রোগে ভুগে গত ২৯ ডিসেম্বর ৮২ বছর বয়সে অন্যলোকে চলে যান পেলে।

বিশ্বফুটবলের প্রথম ‘মেগাস্টার’ ছিলেন পেলে। তার কারণেই ফুটবল নামের খেলাটি বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলায় পরিণত হয়। এই ব্রাজিলিয়ানই একমাত্র ফুটবলার, যিনি সর্বাধিক ৩টি বিশ্বকাপ জিতেছেন, তার কারণেই একটি দেশের গৃহযুদ্ধ ৪৮ ঘণ্টার জন্য থেমে গেছে বলে কথিত রয়েছে, তার দেখা পেতে একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে ব্রাজিলকে উপহার দিয়েছেন প্রথম বিশ্বকাপ। এরপর ১৯৬২ ও ১৯৭০ তিনটি বিশ্বকাপ জয় করে অনন্য কীর্তি গড়া একমাত্র ফুটবলার পেলে। ক্যারিয়ারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদ বিখ্যাত সব ক্লাবেই প্রস্তাব পেয়েছেন। কিন্তু সর্বোচ্চ চূড়ায় থেকেও প্রিয় ক্লাব সান্তোস ছেড়ে কোথাও যাননি।

চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার আগে তাই প্রিয় ক্লাব সান্তোষের আঙ্গিনা ভিলা বেলমিরোতে নিয়ে যাওয়া হয় ফুটবলের কালো মানিককে। ক্লাবটির ইট কাঠের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার আনন্দ বেদনার স্মৃতি। বিদায়বেলায় তাই সেখানেই তাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানায় সমর্থকরা। এ যাত্রায় সামিল হয়েছিলেন দেশটির সাবেক ও বর্তমান ফুটবলাররাও।

ভিলা বেলমিরোর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে মোটর শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে তার কফিন নিয়ে যাওয়া হয় পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু কবরস্থানে। সাও পালোর মেমোরিয়াল নেক্রাপোল অ্যাকুউমেনিকায়। অন্তিম যাত্রায় পেলের শোকমিছিলে যোগ দেন লাখো ভক্ত।

ল্যাটিন আমেরিকার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। কিন্তু পেলে সব প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঊর্ধ্বে। তাই তার শোক মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা থেকে আসা সমর্থকরাও। বাড়ির ছাদ কিংবা খোলা জানালা। প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি জানালায় সবঘুলো চোখ শুধুই খুঁজেছে পেলেকে। 

তাদের হাতে ছিল দশ নম্বর জার্সি। সবার মুখে শুধুই পেলে আর পেলে।

বিশেষ গাড়িতে করে পেলের মরদেহ নিয়ে শহরের বড় রাস্তাগুলো প্রদক্ষিণ করা হয়। মেমোরিয়াল নেক্রাপোল অ্যাকিউমেনিকায় যাওয়ার পথে গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় পেলের মায়ের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে। শতবর্ষী পেলের মা সেলেস্তে এখনো থাকেন সেই বাড়িতে। এ সময় তৈরি হয় আবেগাপ্লুত পরিবেশ। কান্নায় ভেঙে পড়েন সমর্থকরা। 

অবশেষে শোক মিছিল এসে পৌঁছায় অ্যাকিউমেনিকায়। এখানেই ১৪ তলা ভবনের নবম তলায় চিরনিদ্রায় শায়িত হন ফুটবলের রাজা। 

পেলের বাবা ডনডিনহোর খেলোয়াড়ি জীবনে জার্সি নম্বর ছিল নয়। এ কারণেই পেলের ইচ্ছায় তাকে নবম তলায় সমাহিত করা হয়।

শেষকৃত্যে গিয়ে ফুটবলের রাজাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল ফেডারেশনের (কনমেবল) সভাপতি আলেহান্দ্রো দমিনগেজ, কনফেডারেশন অব ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের (সিবিএফ) সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেজ। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি