শেষের নাটকে জিতল কুমিল্লা, বিপদে তামিমরা
প্রকাশিত : ১৭:৫২, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩
রোমাঞ্চকর একটা ম্যাচ উপহার দিলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও খুলনা টাইগার্স। উত্তেজনার রেণু ছড়ানো ম্যাচটার মীমাংসা হলো একেবারে শেষ বলে গিয়ে। শ্বাসরুদ্ধকর জয় দিয়ে শেষ হাসি হাসল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। আশা জাগিয়েও হেরে গেল তামিম-ইয়াসিরদের খুলনা।
আজ (২৮ জানুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই উইকেটে ১৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গোড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাব দিতে নেমে ছয় উইকেটে ১৬১ রান তুলতে সক্ষম হয় খুলনা টাইগার্স।
এবারের বিপিএলে তামিমদের এটা পঞ্চম হার। আর কুমিল্লার পঞ্চম জয়।
আগে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ইনিংসের শুরুটা ছিল মন্থর। উইকেট জিইয়ে রেখে মন্থর ব্যাটিং করেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। দশম ওভারে ৬৫ রানে ভাঙে এই জুটি। বিদায় নেন লিটন দাস।
৪২ বলে ৫০ রানে আউট হন কুমিল্লার ওপেনার। তার সঙ্গী রিজওয়ান অবশ্য শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন। কিন্তু সেই তুলনায় প্রত্যাশিত রান পাননি তিনি। ৪৭ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকা পাকিস্তানি ওপেনার চারটি চার ও এক ছক্কায় ইনিংস সাজান।
আরেক পাকিস্তানি খুশদিল শাহ ১১ বলে ১৩ রানে অজেয় থাকেন। তবে কুমিল্লার ইনিংসে আসল ঝড়টা উঠেছে জনসন চার্লসের ব্যাটে। ২২ বলে ৩৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ক্যারিবীয় ব্যাটার। কোনো বাউন্ডারি না পেলেও চার্লস ছক্কা মেরেছেন গুনে গুনে পাঁচটি।
কুমিল্লার পতন হওয়া উইকেট দুটি নিয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ ও নাহিদুল ইসলাম। তবে কোনো উইকেট না পেলেও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন নাসুম আহমেদ। চার ওভারে ১৫ রান দিয়েছেন এই স্পিনার। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সুবাদে লক্ষ্যমাত্রা নাগালে থাকে খুলনার।
তবে রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই আউট হয়ে যান তামিম ইকবাল। ১০ বলে ১১ রানে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার। ধাক্কা সামাল দেন অ্যান্ডি বালবির্নি ও শাই হোপ। দুজনই অবশ্য ব্যাট চালিয়েছেন ধীরগতিতে। ৩১ বলে পাঁচটি চার ও এক ছয়ে ৩৮ রানে অউট হন বালবির্নি। আর ৩২ বলে তিন চার ও এক ছয়ে ৩৩ রানে ফেরেন হোপ।
টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার ব্যর্থ হয়েছেন দ্রুতগতিতে রান তুলতে। তবে চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে এসেই আস্কিং রেটের চাপ কিছুটা কমিয়ে আনেন মাহমুদুল হাসান জয়। ১৩ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ২৬ রানের ইনিংসে দলকে লড়াইয়ে ফেরান তিনি।
জয় আশা দেখালেও ১৯তম ওভারের শুরুতে হোপের আউটে বেকায়দায় পড়ে যায় খুলনা। অধিনায়ক ইয়াসির আলিকেই চাপের বোঝাটা কাঁধে নিতে হয়। শেষ দুই ওভারে ২৫ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় খুলনার সামনে। যার শেষ ওভারে ১৭।
ওই ওভারের তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পান ইয়াসির। প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান খুলনা অধিনায়ক। পঞ্চম বলে দুই রান। ম্যাচের রোমাঞ্চ তখন তুঙ্গে। শেষ বলে ছক্কার প্রয়োজন ছিল খুলনার। কিন্তু পারেননি ইয়াসির। নিলেন মাত্র ১ রান। ১৯ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন ইয়াসির।
খুলনা দলপতির ইনিংসে ছিল তিনটি চার ও দুই ছক্কার মার। যা কাজে আসেনি। আশা জাগিয়েও শেষ ওভারে ১৭ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি খুলনা।
এই হারে রবিন লিগ রাউন্ড থেকেই ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়ে গেল খুলনা টাইগার্স। সাত ম্যাচে এটা তাদের পঞ্চম হার। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান পাঁচে।
বিপরীতে সাত ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে তৃতীয়স্থান ধরে রেখেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দুই দলের মাঝে থাকা রংপুর রাইডার্সের সংগ্রহ আট পয়েন্ট।
১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে যথারীতি সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। তাদের সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট থাকলেও রানরেটে পিছিয়ে দুইয়ে নেমেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট স্ট্রাইকার্স।
এনএস//